জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিম ব্যবহারে শৃঙ্খলা আনতে সরকার বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে যেসব সিম কার্ড, সেগুলো মূলত একজন ব্যক্তির নামে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত নিবন্ধিত সিম। এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম কার্ড নিবন্ধন করতে পারবেন।
বর্তমানে যাদের নামে ছয় থেকে দশটি বা তার বেশি সিম রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই সীমা ধাপে ধাপে কার্যকর করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত সিম বাতিল না করলে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল লক্ষ্য হলো অবৈধ সিম ব্যবহার, প্রতারণা ও বায়োমেট্রিক তথ্যের অপব্যবহার রোধ করা।
এই পোস্টে আমরা জানব কোন কোন সিম বন্ধ হবে, কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারা ঝুঁকিতে আছেন এবং সাধারণ গ্রাহকদের এখন কী করা উচিত।
Content Summary
১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে যেসব সিম কার্ড
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহকের নামে পাঁচটির বেশি সক্রিয় সিম থাকলে অতিরিক্ত সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আগে যেখানে সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিবন্ধনের সুযোগ ছিল, এখন তা কমিয়ে পাঁচে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
যেসব গ্রাহক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত সিম স্বেচ্ছায় বাতিল করেননি, তাদের সিম মোবাইল অপারেটর পর্যায়ক্রমে ডি-অ্যাকটিভ করে দেবে। এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে বিটিআরসির পক্ষ থেকে চূড়ান্তভাবে জানানো হয়েছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

বিটিআরসির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রাস্তাঘাটে সিম কেনার সময় কিছু অসাধু বিক্রেতা গ্রাহকের অজান্তেই বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করছে। পরে সেই তথ্য ব্যবহার করে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করা হচ্ছে।
এছাড়া একদিনে একজন গ্রাহকের দুইটির বেশি সিম কেনার ঘটনাও ধরা পড়েছে, যা স্বাভাবিক নয়। এসব অনিয়ম বন্ধ করতেই সরকার একজন গ্রাহকের নামে সিমের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে দেশে সিম ব্যবহারকারীর চিত্র
বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা প্রায় ২৬ কোটি ৬৩ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৯ কোটি সিম। অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট মোবাইল সিম ব্যবহারকারী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ।
অপারেটরভিত্তিক গ্রাহক সংখ্যায় গ্রামীণফোন শীর্ষে, এরপর রয়েছে রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক।
গত ১০ বছরে দেশে সিম ব্যবহারকারী বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি, যা সিম ব্যবস্থাপনাকে আরও নিয়ন্ত্রিত করার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুনঃ প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থানে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ, রেইজ প্রকল্প কি?
অতিরিক্ত সিম বাতিল না করলে কী হবে
যেসব গ্রাহকের নামে এখনও ১০টির বেশি বা পাঁচটির বেশি সক্রিয় সিম রয়েছে এবং তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলো বাতিল করেননি, তাদের সিম সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, তিন মাস সময় দেওয়ার পরও যারা ডি-রেজিস্ট্রেশন করেননি, তাদের ক্ষেত্রে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। পর্যায়ক্রমে সব অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করা হবে।
সাধারণ গ্রাহকদের এখন কী করা উচিত
আপনার নামে কয়টি সিম নিবন্ধিত আছে তা এখনই যাচাই করা জরুরি। যদি পাঁচটির বেশি সিম থাকে, তাহলে দ্রুত নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় সিম বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তন করুন।
এতে ভবিষ্যতে হঠাৎ সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝামেলা এড়ানো যাবে এবং আপনার পরিচয় ব্যবহার করে কোনো অনিয়ম হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।
আরও পড়ুনঃ জন্ম সনদে তথ্য ভুল থাকলে অনলাইনে সংশোধনের সহজ উপায় ২০২৬
FAQs
একজন গ্রাহকের নামে পাঁচটির বেশি সক্রিয় সিম থাকলে অতিরিক্ত সিমগুলো বন্ধ হবে।
তাদের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে সিমের সংখ্যা কমিয়ে পাঁচে নামিয়ে আনা হবে।
নিজ দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার থেকে সিম বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তন করতে হবে।
সাধারণত বন্ধ হওয়া সিম পুনরায় চালু করা যায় না, তাই আগেই ব্যবস্থা নেওয়া ভালো।
নতুন নিয়ম কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি থেকে।
উপসংহার
১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে যেসব সিম কার্ড, এই সিদ্ধান্ত দেশের মোবাইল সেবা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এতে একদিকে যেমন অবৈধ সিম ব্যবহার কমবে, অন্যদিকে সাধারণ গ্রাহকও নিরাপদ থাকবেন।
আপনার নামে অতিরিক্ত সিম থাকলে দেরি না করে এখনই ব্যবস্থা নিন। সচেতন থাকলে ঝামেলা এড়ানো সহজ।
আরও পড়ুনঃ নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


