বাংলাদেশে এখন ই-পাসপোর্ট পাওয়া আগের চেয়ে সহজ। ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করা যায়, আর প্রক্রিয়াটিও বেশ সরল। যারা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে চান, তাঁদের আগে থেকেই কিছু কাগজপত্র, খরচ এবং ধাপ সম্পর্কে জানা দরকার।
কারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন সাবমিট করার পর ভুল ঠিক করা যায় না। তাই শুরু থেকেই সঠিকভাবে তথ্য জানা গুরুত্বপূর্ণ।
এই পোস্টে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে পুরো প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ, সময়সহ সব তথ্য সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ই-পাসপোর্টের যুগে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়েছে। এখন জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই অনলাইনে নিজেই আবেদন করা যায়।
তবে আবেদন করার আগে কিছু ধাপ, ফি এবং কাগজপত্র সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকলে ঝামেলা কমে যায়। তাই এখানে ধাপে ধাপে পুরো বিষয়টি তুলে ধরা হলো।
Content Summary
ই-পাসপোর্ট কী
ই-পাসপোর্ট হলো ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট, যার মধ্যে একটি ইলেকট্রনিক চিপ থাকে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর ছবি, আঙুলের ছাপ, আইরিশসহ বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা থাকে। এর ফলে ইমিগ্রেশনে যাচাইকরণ দ্রুত সম্পন্ন হয়। ই-পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ ভ্রমণ নথি হিসেবে স্বীকৃত। ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের ১১৯তম উদ্যোগ হিসাবে চালু হয় এবং এখন দেশের সর্বত্র অনলাইনে আবেদন করা যায়। নিরাপত্তা ও দ্রুত যাতায়াতের জন্য ই-পাসপোর্ট দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য মূলত জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড আর সঠিক ব্যক্তিগত তথ্যই প্রধান কাগজপত্র হিসেবে প্রয়োজন।
অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ, ফি জমা এবং নির্ধারিত তারিখে ছবি ও আঙুলের ছাপ দিতে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ, বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি এবং ছবি প্রয়োজন হয়।
পুরনো পাসপোর্ট থাকলে সেটির কপিও লাগবে। ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুতের বিল বা সমমানের নথি জমা দিতে হয়।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

বর্তমানে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের খরচ পৃষ্ঠা সংখ্যা ও ডেলিভারি সময় অনুযায়ী ভিন্ন হয়।
৪৮ পৃষ্ঠা (১০ বছর মেয়াদি):
- সাধারণ ফি: ৫,৭৫০ টাকা
- জরুরি: ৮,০৫০ টাকা
- অতিঅ জরুরি: ১০,৩৫০ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠা (১০ বছর মেয়াদি):
- সাধারণ ফি: ৮,০৫০ টাকা
- জরুরি: ১০,৩৫০ টাকা
- অতিঅ জরুরি: ১৩,৮০০ টাকা
সব ফির সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হবে। অতিরিক্ত সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ রিপোর্ট লাগতে পারে।
ই-পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়
ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি তিন ধরনের সময়সীমায় দেওয়া হয়।
- সাধারণ ডেলিভারি: প্রায় ২১ কর্মদিবস
- জরুরি ডেলিভারি: প্রায় ১০ কর্মদিবস
- অতিঅ জরুরি ডেলিভারি: ২ কর্মদিবস
অবস্থা অনুযায়ী কিছু সময় বাড়তে পারে, তবে সাধারণত এই সময়েই পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ Rapid Pass অনলাইন রিচার্জ করুন ঘরে বসে
ঘরে বসে ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
ঘরে বসে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করা যায়।
১. ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
২. ট্র্যাকিং অপশন নির্বাচন করুন
৩. অ্যাপ্লিকেশন আইডি বা ট্র্যাকিং নম্বর লিখুন
৪. সাবমিট করলে বর্তমান স্ট্যাটাস দেখা যাবে
আবেদন সাবমিট হয়েছে কিনা, বায়োমেট্রিক নেওয়া হয়েছে কিনা বা পাসপোর্ট প্রস্তুত কিনা সবই জানা যায়।
ই-পাসপোর্ট ডাউনলোড করার নিয়ম
অনলাইনে সরাসরি পাসপোর্ট ডাউনলোড করা যায় না, তবে অ্যাপ্লিকেশন ফরম এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড করা যায়।
১. আপনার একাউন্টে লগইন করুন
২. অ্যাপ্লিকেশন সেকশনে যান
৩. স্লিপ বা ফরম ডাউনলোড অপশন নির্বাচন করুন
এগুলো পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার সময় কাজে লাগে।
আরও পড়ুনঃ টিসিবি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
ই-পাসপোর্টের সুবিধা
ই-পাসপোর্টে মূল সুবিধা হলো দ্রুত ইমিগ্রেশন সেবা পাওয়া। ই-গেট ব্যবহার করে কয়েক সেকেন্ডেই যাত্রী চেকিং সম্পন্ন হয়।
ভিড় কম থাকে এবং লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে হয় না। বায়োমেট্রিক সুরক্ষার কারণে নথির নিরাপত্তাও বেশি।
এছাড়া বিদেশ ভ্রমণের সময় তথ্য যাচাই অনেক দ্রুত হয়। কারও ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে সিস্টেম তা সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করতে পারে।
ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
আরও পড়ুনঃ রবি বান্ডেল অফার ১৮০ দিন মেয়াদ
FAQs (প্রশ্ন ও উত্তর)
১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা কেবল ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পান। অন্যরা ৫ বা ১০ বছর যেকোনোটি নিতে পারেন।
সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য সাধারণত লাগে না, তবে অতিঅ জরুরি সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ রিপোর্ট আনতে হতে পারে।
হ্যাঁ। পুরনো পাসপোর্টের কপি এবং মূল কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হয়।
ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডে পরিশোধ করা যায়। অনুমোদিত পাঁচ ব্যাংকে ম্যানুয়ালি জমাও দেওয়া যায়।
সাবমিট হয়ে গেলে আর পরিবর্তন করা যায় না। তাই সাবমিট করার আগে সব তথ্য ভালোভাবে দেখে নিতে হয়।
উপসংহার
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এবং কীভাবে আবেদন করতে হয় সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকলে পুরো প্রক্রিয়া সহজ হয়।
অনলাইনে আবেদন, ফি জমা এবং বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করলেই ই-পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
ই-পাসপোর্ট এখন আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং দ্রুত ইমিগ্রেশন সুবিধা দেয়।
তাই যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন, তাঁদের জন্য ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট একটি ভালো সিদ্ধান্ত।
টেক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


