আফগানিস্তান কেন এত বেশি ভূমিকম্প হয়? কারণ জানলে অবাক হবেন

আফগানিস্তান কেন এত বেশি ভূমিকম্প হয়? কারণ জানলে অবাক হবেন। একাধিক কারণ রয়েছে আফগানিস্তানে ঘন ঘন ভূমিকম্পের।

সোমবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ এলাকায় আবারও ৬.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং ৩৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

এর আগেও ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। প্রশ্ন হলো, কেন আফগানিস্তানে এত ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়?

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

আফগানিস্তানের ভূমিকম্প কেন এত বেশি শক্তিশালী?

ভৌগলিকভাবে আফগানিস্তান পাহাড়-পর্বতে ঘেরা একটি দেশ। এই পাহাড়ি অঞ্চলের নিচে আছে পৃথিবীর কয়েকটি বড় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল। আর এই কারণেই দেশটি ভূমিকম্পপ্রবণ।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর আফগানিস্তানে গড়ে ৫৬০ জন মানুষ ভূমিকম্পে মারা যায় এবং অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার।

১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৩৫৫টি ভূমিকম্প ঘটেছে, যার প্রতিটির মাত্রা ছিল গড়ে ৫ বা তার বেশি।

আরো পড়ুনঃ এআই যুগে এই ৫টি টেক স্কিল শিখে সময় নষ্ট করবেন না | ২০২৫ সালে কোন স্কিল শিখবেন

ভূমিকম্পের মূল ভূতাত্ত্বিক কারণ

আফগানিস্তান ইউরেশিয়ান এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। যখন ভারতীয় প্লেট উত্তরে সরে গিয়ে ইউরেশিয়ান প্লেটের নিচে ঠেলে দেয়, তখন সেই ঘর্ষণ ও চাপই সৃষ্ট করে ভয়াবহ ভূমিকম্প।

দক্ষিণাঞ্চলে আরব প্লেটের প্রভাবও রয়েছে, যা এই অঞ্চলের মাটি ও পর্বতশ্রেণিকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে।

এ কারণেই দেশটি পৃথিবীর অন্যতম টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলের মধ্যে পড়ে।

কোন অঞ্চলগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ

আফগানিস্তানের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চল বিশেষভাবে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে। উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এই অংশগুলোতে প্রায়ই কম্পন অনুভূত হয়।

রাজধানী কাবুলসহ বড় শহরগুলো প্রতি বছর প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

ভূমিকম্পের পর পর্বত এলাকাগুলোতে ভূমিধসও ঘটে, যা জীবন ও সম্পদের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে তোলে।

আরো পড়ুনঃ ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২০২৫

আফগানিস্তানে অতীতের ভয়াবহ ভূমিকম্প

ইতিহাস বলছে, ১৯০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রায় ১০০টি বড় ভূমিকম্প হয়েছে।
২০২২ সালে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ১,০০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, আর ২০২৩ সালে এক মাসের মধ্যে একাধিক ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় আরও ১,০০০ মানুষ।

সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে ১৯৯৮ সালে, যখন তিন মাসে দুটি ভূমিকম্পে ৭,০০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

ভবিষ্যতে ক্ষয়ক্ষতি রোধের উপায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানে ভূমিকম্প সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে ক্ষতি কমানো সম্ভব।

ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা এবং ফল্ট লাইন ম্যাপিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা কমানো যাবে।

জনগণকে সচেতন করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও জরুরি।

আরো পড়ুনঃ টিসিবি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড একটিভ করার নিয়ম

FAQs (প্রশ্নোত্তর)

আফগানিস্তানে কেন এত ভূমিকম্প হয়?

দেশটি ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে।

কোন এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?

উত্তর ও পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকা।

প্রতিবছর গড়ে কতজন মানুষ ভূমিকম্পে মারা যায়?

গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৫৬০ জন মানুষ ভূমিকম্পে মারা যায়।

ভূমিকম্পের ক্ষতি কীভাবে কমানো যায়?

ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, সতর্কতা ব্যবস্থা এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষতি কমানো সম্ভব।

আফগানিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প কোনটি ছিল?

১৯৯৮ সালের দুটি ভূমিকম্প, যেখানে ৭,০০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।

উপসংহার

আফগানিস্তান যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ, তার ওপর প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন এক অতিরিক্ত বোঝা। যতক্ষণ না দেশটিতে আধুনিক ভূমিকম্প সতর্কতা ব্যবস্থা ও টেকসই অবকাঠামো তৈরি হয়, ততক্ষণ এই ধরণের বিপর্যয় বারবার ঘটতেই থাকবে।

তবে সচেতনতা ও প্রস্তুতিই পারে মানুষের জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে।

আরো পড়ুনঃ নতুন টেলিকম পলিসির কারণে ২০% পর্যন্ত বাড়ছে ইন্টারনেট খরচ

আফগানিস্তানের ভূমিকম্প অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এর ভৌগলিক অবস্থান।

টেক নিউজ সবার আগে জানতে ডিজিট করুন ডিজিটাল টাচ ওয়েবসাইট এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment