ভূমিকম্প কেন হয় সহজ ব্যাখ্যা এবং কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ

ভূমিকম্প পৃথিবীর সবচেয়ে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি। অনেক দুর্যোগের আগে কিছুটা সতর্কবার্তা পাওয়া যায়, কিন্তু ভূমিকম্প ঘটে হঠাৎ, যার ফলে খুব কম সময়েই বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে এর কারণ, গঠন ও প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন। এই আলোচনার শুরুতেই বোঝা দরকার ভূমিকম্প কেন হয়, এবং কীভাবে পৃথিবীর মধ্যে চলতে থাকা পরিবর্তন মুহূর্তের মধ্যে একটি বড় বিপর্যয় তৈরি করে।

ভূমিকম্প নিয়ে শুধু বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণই নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কোরআন-হাদিসে বারবার বলা হয়েছে যে এমন বিপর্যয় মানুষের জন্য সতর্কবার্তা। তাই ভূমিকম্প কেন হয় সেই প্রশ্নের সঙ্গে মানুষের দায়িত্ব, নৈতিকতা এবং তাওবার বিষয়ও জড়িত। এই বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

এছাড়া প্রতিটি দেশ ও অঞ্চলে ভূমিকম্পের মাত্রা ও ঘনত্ব এক নয়। কোথাও প্রতিবছর ছোট কম্পন হয়, কোথাও বড় ভূমিকম্প শতাব্দীতে একবার ঘটে।

এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, এমনকি বাংলাদেশেও ভূমিকম্পের ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ বেশি। সব মিলিয়ে এখানে বিষয়টি সহজভাবে তুলে ধরা হলো।

ভূমিকম্প কি?

ভূমিকম্প মূলত পৃথিবীর ভেতরকার শক্তি মুক্ত হওয়ার একটি প্রক্রিয়া। পৃথিবীর নিচে প্লেট বা স্তরগুলো সবসময় নড়াচড়া করে, এবং কখনো এই নড়াচড়া আটকে গেলে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। কোনো এক মুহূর্তে এই চাপ হঠাৎ মুক্ত হলে মাটির ওপর কম্পন অনুভূত হয়, যাকে আমরা ভূমিকম্প বলি। এতে ভূপৃষ্ঠ কেঁপে ওঠে এবং এর তীব্রতা নির্ভর করে সেই মুক্ত শক্তির পরিমাণের ওপর।

এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলেও অনেক সময় এর তীব্রতা এত বেশি হয় যে তা মানুষের জীবন, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে।

তাই ভূমিকম্পের উৎপত্তি বোঝা জরুরি।

ভূমিকম্প কেন হয়, তা জানতে হলে পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক গঠন সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।

বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াকে টেকটনিক মুভমেন্ট বলে থাকেন।

ভূমিকম্প কেন হয়?

ভূমিকম্প কেন হয়

ভূমিকম্প হওয়ার প্রধান কারণ হলো পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেট সরানো। এই প্লেটগুলো যখন একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, সরে যায় বা ঘর্ষণ হয়, তখন ভূমিকম্প তৈরি হয়। প্লেটের নিচে প্রচণ্ড তাপ ও চাপ থাকে, যা সময়ের সঙ্গে জমা হয়ে হঠাৎ সরে যাওয়ার ফলে বড় কম্পন তৈরি করে। এভাবে পৃথিবীর ভেতরকার গতিশীলতা একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।

এছাড়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, খনির ভেতর বিস্ফোরণ, বা পানির স্তর পরিবর্তনের ফলেও ছোটখাটো ভূমিকম্প হতে পারে।

তবে অধিকাংশ ভূমিকম্পই প্লেট সরণের কারণে হয়।

বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হলেও মানুষ অবকাঠামো নির্মাণে ভুল করলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়ে। তাই ভূমিকম্প কেন হয় তা জানা ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনঃ ফ্যামিলি কার্ড ছাড়াও টিসিবির পণ্য কোথায় মিলবে জানুন

ভূমিকম্প সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে কি বলা আছে

ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্প কেবল প্রাকৃতিক ঘটনা নয়; এটি মানুষের জন্য সতর্কবার্তা। কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষের কাজকর্মের ফলেই বিপর্যয় নেমে আসে, আর আল্লাহ অনেক অন্যায় ক্ষমা করে দেন।

এই আয়াতগুলো বারবার মনে করিয়ে দেয় যে বিপদ আসলে আত্মসমালোচনার সময়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন মানুষের মধ্যে অন্যায়, অশ্লীলতা, মদপান বা অন্য নৈতিক অবক্ষয় বাড়ে, তখন ভূমিকম্পের মতো ঘটনা হতে পারে।

ইসলাম শেখায় এমন সময়ে বেশি বেশি ইস্তিগফার, তাওবা এবং সৎকর্মে ফিরে আসা জরুরি। তাই ভূমিকম্প কেন হয়, এর একটি নৈতিক শিক্ষা ইসলাম আমাদের সামনে তুলে ধরে।

কোন দেশে ভূমিকম্প বেশি হয়?

সারা পৃথিবীতে ভূমিকম্প সমানভাবে হয় না। কিছু দেশ এমন এলাকায় অবস্থিত যেখানে টেকটোনিক প্লেটের ঘন সংঘর্ষ ঘটে।

তাই এসব অঞ্চলে প্রতি বছর হাজারো কম্পন হয়। যেমন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, চিলি এবং তুরস্ক ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত।

এই দেশগুলোর ভৌগোলিক অবস্থান এমন যে প্লেটের সীমানায় তারা অবস্থান করছে। ফলে বড় কম্পন হওয়ার সম্ভাবনা সবসময় থাকে।

বিজ্ঞানীরা এসব অঞ্চলে উন্নত সতর্কব্যবস্থা তৈরি করেছেন। ভূমিকম্প কেন হয় তার বৈজ্ঞানিক কারণ এসব দেশে বেশি স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ ভূমিকম্পের আগে কোন সৃষ্টি অস্বাভাবিক আচরণ করে জানেন

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ কত মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে?

বাংলাদেশে বড় আকারের ভূমিকম্পের ইতিহাস খুব পুরনো নয়, তবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও রংপুর অঞ্চলে অতীতে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কম্পন হয়েছে। রেকর্ড অনুযায়ী, ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি বড় ভূমিকম্প ১৮৯৭ সালে সিলেট-আসাম অঞ্চলে হয়েছিল, যা বাংলাদেশেও বড় ক্ষতি করেছিল।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক দশকগুলোতে মাঝারি মাত্রার কম্পন নিয়মিতই অনুভূত হচ্ছে।

দেশটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থান করায় ভবিষ্যতে বড় কম্পনের সম্ভাবনাও বিশেষজ্ঞরা অস্বীকার করছেন না।

তাই ভূমিকম্প কেন হয় তা জানার পাশাপাশি সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ।

এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে সর্বোচ্চ ভূমিকম্প কত মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে?

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল চিলিতে, ১৯৬০ সালে। এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫। এত বড় শক্তির মুক্তি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়েছিল এবং এর ফলে সুনামি পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী বড় কম্পন সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অফ ফায়ার অঞ্চলে ঘটে।

কখনো কখনো এর তীব্রতা এত বেশি হয় যে নতুন ভূমি, সমুদ্রতল বা পাহাড় পর্যন্ত তৈরি হয়ে যায়।

তাই ভূমিকম্প কেন হয় তার সঙ্গে পৃথিবীর গঠন ব্যবস্থা সরাসরি সম্পর্কিত।

আরও পড়ুনঃ এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম

FAQs –

ভূমিকম্পের প্রধান কারণ কী?

পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেট সরে যাওয়াই ভূমিকম্পের মূল কারণ। এতে জমে থাকা শক্তি হঠাৎ মুক্ত হয়ে কম্পন তৈরি করে।

ধর্মীয় দৃষ্টিতে ভূমিকম্পকে কীভাবে দেখা হয়?

ইসলামে ভূমিকম্পকে সতর্কবার্তা বলা হয়েছে এবং তাওবা ও ইস্তিগফারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কোন দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয়?

জাপান, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, চিলি ও তুরস্ক ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা কি আছে?

বাংলাদেশ প্লেট সীমানার কাছে হওয়ায় মাঝারি ও বড় ভূমিকম্প হওয়ার ঝুঁকি সবসময় থাকে।

সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প কোথায় হয়েছিল?

১৯৬০ সালে চিলিতে ৯.৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

উপসংহার

ভূমিকম্পের উৎপত্তি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হলেও এর প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে, তাই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানা জরুরি।

একই সঙ্গে ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি মানুষের জন্য সতর্কবার্তা, যা আমাদের জীবন ও আচার-আচরণের দিকে ফিরে তাকাতে সাহায্য করে।

ভূমিকম্প কেন হয়, এই প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানের সঙ্গে নৈতিক শিক্ষা মিলিয়েই আরও স্পষ্ট হয়।

মানুষ সচেতন থাকলে এবং নিরাপত্তা বাড়ালে ক্ষতি অনেক কমানো সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ বাংলালিংক পকেট রাউটারের দাম কত? সম্পূর্ণ তথ্য ও অফার 

টেক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment