বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

ভাইবা-বোনেরা, বিদেশ থেকে আনা মোবাইল এখন আর অজানা পথে ব্যবহার করা যাবে না—এর জন্য বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম জানা জরুরি।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে নেটওয়ার্কে অননুমোদিত হ্যান্ডসেটের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে।

এখন প্রতিটি ফোনের IMEI (আন্তর্জাতিক শনাক্তকরণ নম্বর) নীতিগতভাবে নিবন্ধিত থাকতে হবে; তা না হলে ফোনটি নেটওয়ার্কে দীর্ঘদিন কাজ করবে না।

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

এই পোস্টে আমরা সহজ ভাষায় ধাপে ধাপে দেখাবো কীভাবে বিদেশি ফোন নিবন্ধন করবেন, কী কী কাগজপত্র লাগবে, এবং কোন খরচের মুখোমুখি হতে পারেন — সবকিছু খোলাখুলি এবং ব্যবহারকারী বান্ধবভাবে।

নিয়মগুলো বুঝতে হলে প্রথমেই মনে রাখবেন—বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম মানেই শুধু অনলাইন ফরম পূরণ নয়; প্রয়োজনীয় দলিল-প্রমাণ আপলোড, IMEI সঠিকভাবে দেওয়া এবং সময়ের মধ্যে তথ্য দাখিল করা জরুরি।

বিদেশ থেকে আনা ফোন যদি উপহার বা ব্যক্তিগত ক্রয়ের মাধ্যমে আনা হয়, সেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন না করলে নেটেয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার নোটিশ আসতে পারে।

তাই নিচের ধাপগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং প্রয়োজনে স্ক্রিনশট করে রাখুন — এতে কাজ সহজ হবে।

বিদেশি মোবাইল কি অবৈধ?

বিদেশি মোবাইল বলে সাধারণত বোঝায় — বিদেশ থেকে আনা এমন হ্যান্ডসেট যেগুলো বাংলাদেশের ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR)–এ নিবন্ধিত নয়।

নিজস্বভাবে ক্রয় করা বা উপহারপ্রাপ্ত ফোনকে অবৈধ বলা যায় না যতক্ষণ না সেটি নেটওয়ার্কে নিবন্ধিত থাকে।

তবে, যদি ফোনটি নিবন্ধন না করে নিয়মিত সিমে ব্যবহৃত হয় এবং যাত্রী-ব্যাগেজ বিধি বা স্থানীয় নিয়ম লঙ্ঘিত হয়, তা তখন অবৈধ হতে পারে।

বর্তমানে বিটিআরসি বলছে—নিবন্ধনবিহীন বা অনুমোদিত নয় এমন হ্যান্ডসেটগুলি আগামী নির্ধারিত তারিখের পর নেটওয়ার্কে ব্লক করা হবে। তাই বিদেশি ফোন ‘অবৈধ’ নয়, কিন্তু অননুমোদিত থাকলে ব্যবহার সীমিত হবে।

সবচেয়ে ভালো কাজ হলো আনমধ্যেই IMEI সঠিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করা

— এতে ফোন বৈধভাবে নেটওয়ার্কে চালু থাকবে এবং ভবিষ্যতে ব্লকিংয়ের ঝুঁকি থাকবে না।

আরও পড়ুনঃ অবিশ্বাস্য! ১৯৭৪ সালের ১ টাকার বর্তমান মূল্য শুনে চমকে যাবেন

বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

বিদেশি মোবাইল নিবন্ধনের প্রধান ধাপগুলো অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। প্রথমে neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্যবহারকারী হিসেবে রেজিস্টার করতে হবে। রেজিষ্ট্রেশনের পর লগইন করে Special Registration সেকশনে যেতে হবে এবং সেখানে ফোনের IMEI নম্বর (একটি বা একাধিক হ্যান্ডসেট হলে সবগুলোর) এন্ট্রি করতে হবে। IMEI সঠিকভাবে দিলে পরবর্তী ধাপে প্রয়োজনীয় দলিল-প্রমাণ আপলোড করতে বলা হবে।

আপলোড করার কাগজপত্রে সাধারণত প্রয়োজন হয়:

পাসপোর্টের ভিসা বা ইমিগ্রেশন পৃষ্ঠা, বিমানবন্দরে দেওয়া ট্যাগ বা কাস্টম স্লিপ (যদি থাকে), ক্রয়ের রসিদ (যদি ক্রয় করা হয়) কিংবা উপহার পেয়েছেন এমন প্রেক্ষিত হলে সেটার ব্যাখ্যা।

সব ডকুমেন্ট স্ক্যান করে JPEG বা PDF আকারে আপলোড করুন। তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে যদি ফোন বৈধ মনে করা হয়, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে এবং আপনার নেটওয়ার্ক সচল থাকবে।

অবৈধ হলে SMS বা ইমেইলে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।

আরও পড়ুনঃ বিকাশে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম 

বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি লাগবে

বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম
বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

রেজিস্ট্রেশন করার সময় নিচের কাগজপত্র সাধারণত লাগবে:

  • প্রথমত, আপনার পাসপোর্টের ইমিগ্রেশন পৃষ্ঠা যেখানে বাংলাদেশের ভ্রমণের স্ট্যাম্প দেখা যায়।
  • দ্বিতীয়ত, যদি ফোন ক্রয় করে আনেন, তাহলে ক্রয়ের রসিদ বা ইনভয়েস থাকলে আপলোড করুন।
  • তৃতীয়ত, নিজের NID/জাতীয় পরিচয়পত্র বা বিকল্প পরিচয়ের কপি দরকার হতে পারে; যা
  • ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হবে।
  • যদি ফোন উপহার প্রাপ্ত হয়, তবে উপহার প্রাপ্তির কারণ ও প্রাসঙ্গিক বিবরণ (যেমন প্রেরকের নাম, সম্পর্ক) আপলোড করতে হতে পারে।

সাবধানতার বিষয়: ডকুমেন্টগুলো স্পষ্ট, পঠনযোগ্য এবং স্ক্যানের মান ভালো রাখুন—ফাইল সাইজ সীমার মধ্যে রাখুন।

যে তথ্যগুলো ফরমে দেবেন তা ডকুমেন্টের তথ্যের সঙ্গে মিলতে হবে; ভিন্ন হলে যাচাইতে সমস্যা হতে পারে।

প্রয়োজনে আগেভাগে ছবি-স্ক্যান করে নিন এবং একটি কপি রাখুন, যাতে কোনো তথ্য মিস হলে আবার আপলোড করা যায়।

আরও পড়ুনঃ স্বাধীন দিচ্ছে আনলিমিটেড ইন্টারনেট মাত্র ১৫০ টাকায় ৩০ দিনের জন্য

বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা লাগবে

সরকারি নির্দেশনায় ব্যক্তিগতভাবে একটি হ্যান্ডসেট বিনা শুল্কে আনার সুযোগ রয়েছে—এটি সাধারণত ব্যাগেজ রুলসের আওতায় পরে।

তবে অতিরিক্ত হ্যান্ডসেট আনলে শুল্ক ও ভ্যাট প্রযোজ্য হতে পারে; সেই ক্ষেত্রে কাস্টম দফতরের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন ফি নিজে-বিশেষভাবে উল্লেখ না থাকায় সাধারণত অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আলাদা ফি ধার্যিত হয় না; তবে যদি কাস্টম বা ইমপোর্ট নিয়মে শুল্ক দেওয়া লাগে, সেটি আলাদা।

নিয়মিত পরিস্থিতিতে: প্রথম হ্যান্ডসেট ব্যাগেজ হিসাবে আনলে শুল্কমুক্ত; অতিরিক্ত হলে কাস্টম কর্তৃপক্ষের হার অনুযায়ী ট্যাক্স দিতে হবে।

এছাড়া যদি কেউ অন্য কাউকে প্রতিনিধিত্ব করে কাগজপত্র জমা দেয় বা কাগজপত্র তৈরির জন্য কোয়ালিফায়িং সার্ভিস নেয়, সেখানে ছোটখাটো খরচ হতে পারে।

সুতরাং, নির্দিষ্ট টাকা নির্ধারণ করার আগে নিজের ক্ষেত্রে কিভাবে ফোন আনা হয়েছে সেটি পরিষ্কার করা জরুরি।

আরও পড়ুনঃ ৩০ নভেম্বরের ই-রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ সময় । অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দেয়ার নিয়ম

দ্রুত টিপস ও সতর্কতা

প্রথমত, বিদেশ থেকে ফোন আনলে IMEI নোট করে রাখুন—ফোনের *#06# ডায়াল করলে IMEI দেখায়।

দ্বিতীয়ত, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে দেওয়া সব তথ্য সঠিক রাখুন—ভুল তথ্য দিলে ফোন ব্লক হতে পারে।

তৃতীয়ত, যদি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যত অসম্ভব লাগে বা সিস্টেমে সমস্যা আসে, বিটিআরসি বা নিকটস্থ অপারেটরের কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করে নির্দেশ নিন।

চতুর্থত, ব্যক্তিগতভাবে একাধিক ফোন আনলে কাস্টম শুল্কের সম্ভাব্যতা বিবেচনা করে কর্মপরিকল্পনা করুন।

সবশেষে: বিদেশি ফোন রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া তুলনামূলেই সরল—কিন্তু সময়মতো তথ্য জমা না দিলে নেটওয়ার্কে বাধা দেখা দিতে পারে।

তাই বিদেশ থেকে আসার পরে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে নিলে যে কোনো ঝামেলা এড়ানো যায়।

আরও পড়ুনঃ MVNO সিমে থাকছে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ও ভয়েস কলের সুবিধা

প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন – FAQs

বিদেশ থেকে আনা একটি ফোনকে কীভাবে IMEI পাবো?

ফোনে *#06# ডায়াল করলে স্ক্রিনে IMEI নম্বর দেখা যাবে। এছাড়া ফোনের বাক্স বা সেটিংস → About Phone-এও IMEI দেয়া থাকে।

আমি যদি ফোন উপহার হিসেবে পাই, সেটাও রেজিস্ট্রেশন করা লাগবে?

হ্যাঁ। উপহারপ্রাপ্ত ফোনও অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে; প্রেরকের তথ্য ও উপহারের কারণ উল্লেখ করতে হতে পারে।

রেজিস্ট্রেশন ফর্মে কাগজপত্র আপলোড করতে সমস্যা হলে কী করব?

বিটিআরসি ওয়েবসাইটে সমস্যা হলে কাস্টমার সার্ভিসে ফোন করে বা নিকটস্থ টেলিকম অফিসে গিয়ে সহায়তা নিন; বিকল্পভাবে ইমেইল নির্দেশ ঠিকানায় পাঠাতে পারেন।

একাধিক ফোন আনলে কী করতে হবে?

প্রাথমিক নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তিগতভাবে এক ফোন বিনা শুল্কে আনার সুযোগ বেশি; অতিরিক্ত ফোন আনলে কাস্টম শুল্ক ও নিয়ম প্রযোজ্য হবে। আগে কাস্টম নীতিগুলো যাচাই করুন।

অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে কতদিনে সেটি নেটওয়ার্কে সক্রিয় হবে?

সঠিক ডকুমেন্ট ও তথ্য দিলে সাধারণত স্বয়ংক্রিয় যাচাই শেষে দ্রুত নিবন্ধিত হয়ে যায়; তবে যাচাই-বাছাইয়ে সময় লাগলে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত নেটওয়ার্ক সচল থাকবে বলে বিটিআরসি জানিয়েছে।

উপসংহার

বিদেশি মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম এখন প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য সমীচীন ও প্রয়োজনীয় বিষয়।

বিদেশ থেকে আনেন বা উপহার পান—সুযোগ পেলেই IMEI নোট করে neir.btrc.gov.bd–এ রেজিস্ট্রেশন করে নিন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ঠিকঠাক রাখলে প্রক্রিয়া খুব সহজে শেষ হবে এবং ফোন ব্লকিংয়ের ঝুঁকি থাকবে না।

যদি কাস্টম বা অতিরিক্ত হ্যান্ডসেট নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তা হলে আগেভাগেই কাস্টম অফিস বা বিটিআরসির নির্দেশনা দেখে নিন।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ভুল সংশোধন করার নিয়ম

নিয়ম মেনে চললেই প্রযুক্তি সুবিধা নিরাপদে কাজে লাগানো যাবে—and আপনি অনায়াসেই দেশের নেটওয়ার্কে আপনার ফোন ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবেন।

টেঁক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment