বিয়ে ও তালাক আর গোপন থাকবে না। বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত তথ্য দীর্ঘদিন ধরে কাগজে-কলমে সংরক্ষণ করা হতো। এতে ভুল, গোপন তথ্য, প্রতারণা ও আইনি জটিলতা তৈরি হওয়া ছিল সাধারণ ঘটনা। বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ হলে এসব সমস্যার বড় অংশ সমাধান হবে।
সম্প্রতি হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ করার নির্দেশ দিয়েছে, যা পরিবার, নারী ও শিশু সুরক্ষা এবং আইনগত স্বচ্ছতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গোপন বিয়ে, পূর্বের বিয়ে লুকানো, তালাক প্রমাণে জটিলতা, প্রতারণা, এমনকি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখবে। বিষয়টি দেশের নাগরিক অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
হাইকোর্টের এই রায় এসেছে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি শেষে।
রিট আবেদনে পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, যিনি বলেন— ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য অনলাইনে যাচাই করা যাবে, ফলে প্রতারণার সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
তার মতে, এটি পরিবার কাঠামো ও সমাজে পারস্পরিক বিশ্বাস পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে।
Content Summary
বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ কী
বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত সকল তথ্য অনলাইনে রেকর্ড, সংরক্ষণ ও যাচাই করা যাবে। আগে এসব নিবন্ধন কাগজে সংরক্ষণ করা হতো, যা হারিয়ে যাওয়া বা পরিবর্তনের আশঙ্কা ছিল। ডিজিটাল সিস্টেম চালু হলে নাগরিকরা দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন এবং আইনি প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।
কেন বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ প্রয়োজন
দেশে প্রায়ই দেখা যায় গোপনে বিয়ে করা, পুরোনো তথ্য লুকানো, তালাক প্রমাণে জটিলতা, অথবা একাধিক বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণা। ডিজিটাল নিবন্ধন এসব সমস্যার বড় অংশ কমিয়ে দেবে।
এছাড়া পরিবার সুরক্ষা, নারীর অধিকার রক্ষা এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুনঃ ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নিয়ে মারা গেলে গুনাহ হবে কি? ইসলাম কী বলে জানুন
ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে কী লাভ
ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে নাগরিকরা যে কোনো সময় অনলাইনে বিয়ে বা তালাকের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। এতে ভুল তথ্য কমবে, প্রতারণা বন্ধ হবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা বাড়বে।
পাশাপাশি সরকারি ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত তথ্য যাচাই করতে পারবে, যা বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।
হাইকোর্ট কেন এই নির্দেশ দিল
২০২১ সালে চার ভুক্তভোগীর পক্ষে রিট করা হয়।
আদালত যুক্তি বিবেচনা করে দেখে যে বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনে স্বচ্ছতা না থাকায় নারীর সুরক্ষা ব্যাহত হচ্ছে, প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে এবং সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন। তাই হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ করার নির্দেশ দেয়।
নাগরিকদের ভবিষ্যৎ সেবা কেমন হবে
ডিজিটাল সিস্টেম চালু হলে নাগরিকরা মোবাইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।
বিয়ের আগে তথ্য যাচাই, তালাকের নোটিশ প্রমাণ, এবং আইনি নথির ডিজিটাল কপি পাওয়া সহজ হবে।
সামগ্রিকভাবে এটি একটি আধুনিক ও নিরাপদ ব্যবস্থা তৈরি করবে।
আরও পড়ুনঃ সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির লটারির ফল প্রকাশ: জানুন ফল দেখার নিয়ম
FAQs (৫টি সাধারণ প্রশ্ন)
এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিয়ে ও তালাকের তথ্য অনলাইনে সংরক্ষণ করা হয়। এতে তথ্য দ্রুত যাচাই করা যায় এবং প্রতারণা কমে।
গোপনে বিয়ে করা, পূর্ববর্তী বিবাহ লুকানো, তালাক প্রমাণের জটিলতা ও প্রতারণার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
ডিজিটাল সিস্টেম চালুর পর নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা যাবে।
হ্যাঁ। বয়স, পূর্বের বিয়ে ও অন্যান্য তথ্য তাৎক্ষণিক যাচাই করা যাবে, যা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এখন সরকার উপযুক্ত সময় ও প্রক্রিয়া অনুযায়ী ডিজিটাল সিস্টেম চালু করবে।
উপসংহার
বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজ করা শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়।
এটি পরিবার কাঠামো, নারীর সুরক্ষা, শিশু অধিকার এবং সামাজিক স্বচ্ছতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ডিজিটাল সিস্টেম চালু হলে জনসাধারণ আরও নিরাপদ ও স্বচ্ছ একটি পরিবেশে বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত সেবা পাবেন।
ডিজিটাল নিবন্ধনের ফলে আইনি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থা বাড়বে।
এটি দীর্ঘমেয়াদে প্রতারণা কমানো এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে।
ডিজিটাল নিবন্ধনের ফলে বিয়ে ও তালাক আর গোপন থাকবে না, সবাই সেবা পাবে।
আরও পড়ুনঃ সিমের মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
টেক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


