বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা জানেন কি? একজন নতুন উদ্যোক্তার জন্য বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা বেশ সহজ এবং লাভজনক একটি উপায়। তবে জানতে হবে ১০০০ টাকায় বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস এখন দেশের প্রতিটি এলাকায় জনপ্রিয়, তাই প্রতিদিনই মানুষের লেনদেন বাড়ছে। আর এই লেনদেন থেকেই একজন এজেন্ট নিয়মিত কমিশন আয় করেন।
এই পোস্টে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত, কিভাবে কমিশন পাওয়া যায়, ব্যবসা শুরু করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং এজেন্ট সিম নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে ধাপে ধাপে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হলো।
ভবিষ্যতে বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে চাইলে আগে আপনার কমিশন রেট সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। কারণ কমিশনই আপনার মূল আয়। আর এ কারণে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত এই প্রশ্নটি বেশিরভাগ নতুন উদ্যোক্তার মনে থাকে।
Content Summary
বিকাশ এজেন্ট কি?
বিকাশ এজেন্ট হলো বিকাশের অফিসিয়াল ব্যবসায়িক প্রতিনিধি, যারা গ্রাহকদের ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, সেন্ড মানি, বিল পেমেন্টসহ বিভিন্ন লেনদেন সার্ভিস প্রদান করেন। একটি নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক সিমের মাধ্যমে এই লেনদেনগুলো পরিচালিত হয় এবং প্রতিটি সফল ট্রানজেকশনে কমিশন যুক্ত হয়। তাই এজেন্ট যত বেশি লেনদেন করবে আয়ও তত বাড়বে।
এক কথায় বললে বলা যায় বিকাশ ব্যবসায়ীরাই হচ্ছেন বিকাশের এজেন্ট। এজন্য ব্যবসায়ীদেরকে বিকাশের নিবন্ধিত একটি সিম ব্যবহার করতে হয়। এই সিমকে বিকাশ এজেন্স সিম বলা হয়।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা
বিকাশ এজেন্ট কমিশন ০.৩৭৫% টাকা। একজন এজেন্ট গ্রাহকের বিকাশ নম্বরে ১০০০ টাকা ক্যাশ ইন করলে ৩ টাকা ৭৫ পয়সা কমিশন পাবেন। ঠিক একই ভাবে একজন গ্রাহক যখন ক্যাশ আউট এর মাধ্যমে বিকাশ এজেন্টকে ১০০০ টাকা প্রদান করবেন তখন এজেন্ট ৩ টাকা ৭৫ পয়সা কমিশন পাবেন।
বর্তমানে বিকাশ এজেন্ট কমিশন প্রতি ১০০০ টাকায় ৩.৭৫ টাকা। ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট উভয় ক্ষেত্রেই কমিশন সমান থাকে।
উদাহরণ:
১. ৫০০০ টাকা ক্যাশ ইন করলে কমিশন: ১৮.৭৫ টাকা
২. ১০,০০০ টাকা ক্যাশ ইন করলে কমিশন: ৩৭.৫০ টাকা
USSD কোড দিয়ে করলে এবং অ্যাপ দিয়ে করলে কমিশন একই থাকে। নিয়মিত লেনদেন যত বেশি হবে মাসিক কমিশনও তত বাড়বে।
অনেক এজেন্ট মাসে ১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেন। যদি ভালো সেল হয় তাহলে এর বেশি টাকাও ইনকাম করা যায়।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কিভাবে পায়

লেনদেন সম্পন্ন হলেই অটোমেটিক কমিশন এজেন্ট সিমে যুক্ত হয়। প্রতিটি ক্যাশ ইন বা ক্যাশ আউটের পর একটি নোটিফিকেশন মেসেজ পাওয়া যায়, যেখানে কমিশনের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। পুরো মাসের কমিশন হিসাব বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ থেকেই দেখা যায়।
এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করলে রিপোর্ট, ব্যালেন্স এবং লেনদেন সহজে ম্যানেজ করা যায়।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন ক্যালকুলেটর
| বিকাশ এজেন্ট কমিশন | ক্যাশ ইন | ক্যাশ আউট |
|---|---|---|
| ১০০০ টাকায় | ৩.৭৫ টাকা | ৩.৭৫ টাকা |
| ৫০০০ টাকায় | ১৮.৭৫ টাকা | ১৮.৭৫ টাকা |
| ১০,০০০ টাকায় | ৩৭.৫০ টাকা | ৩৭.৫০ টাকা |
| ১,০০০০০ টাকায় | ৩৭৫ টাকা | ৩৭৫ টাকা |
অর্থাৎ একজন বিকাশ এজেন্ট প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা ক্যাশ ইন অথবা ক্যাশ আউট করলে ৩৭৫ টাকা কমিশন পাবেন।
একজন এজেন্ট প্রতিদিন ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করতে পারলে মাসে ৩০ লক্ষ টাকা। ৩০ লক্ষ টাকা বিকাশে লেনদেন করলে একজন এজেন্ট মাসে ইনকাম করবেন ১১২৫০ টাকা।
একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীকে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ইনকাম করার জন্য প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লেনদেন করতে হবে।
প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লেনদেন করার জন্য এজেন্টের এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা মূলধনের প্রয়োজন হবে।
যারা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার চিন্তাভাবনা করছেন তারা অবশ্যই বিষয়টি ভালোভাবে চিন্তা করে ব্যবসা শুরু করবেন।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ সেভিংস এর মুনাফার হার
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন
বিকাশ এজেন্ট হতে হলে প্রথমে প্রয়োজন একটি উপযুক্ত লোকেশন এবং কিছু কাগজপত্র। এরপর এলাকার নিকটস্থ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তারা সব ডকুমেন্ট যাচাই করে এজেন্ট সিম ইস্যু করে।
সাধারণত হাটবাজার, শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড বা জনসমাগম বেশি এমন জায়গায় এজেন্ট ব্যবসা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
শুরুতে ৫০,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা ক্যাশ নিয়ে কাজ শুরু করা যায়। পরে লেনদেন বাড়লে মূলধনও বাড়ানো উচিত।
আরও পড়ুনঃ টিসিবি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রয়: সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী বাজারের উদ্যোগ
বিকাশ এজেন্ট সিম নেওয়ার নিয়ম
বর্তমানে বিকাশ ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই বিকাশ এজেন্ট হতে হবে। বিকাশ এজেন্ট সিম নিতে চাইলে আপনাকে কিছু বৈধ কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
এজেন্ট সিম নিতে প্রয়োজন:
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- বৈধ ট্রেড লাইসেন্স
- টিন সার্টিফিকেট
- দোকানের ঠিকানা ও ব্যবসার তথ্য
- এমন একটি মোবাইল নম্বর যেখানে আগে কোনো বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি
ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে তথ্য জমা দিলে ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এজেন্ট সিম সক্রিয় হয়। অনেক ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করতে সময় লাগে তাই আপনার বিকাশ এজেন্ট সিম চালু হতে সময় লাগতে পারে।
তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার বিকাশ এজেন্সি চালু না হচ্ছে ততক্ষণ বিকাশ প্রতিনিধির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
আরও পড়ুনঃ বিকাশে হাজারে কত টাকা কাটে | বিকাশ ফি ১৪ টাকা, ১৫ টাকা, ১৮.৫০ টাকা?
FAQs –
এজেন্ট সিম নিতে কোনো ফি লাগে না। কেবল ব্যবসা শুরু করতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ক্যাশ প্রয়োজন হয়।
না। এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার পরিপন্থী।
অনেক এজেন্ট দিনে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন। লোকেশন ভালো হলে আয় আরও বেশি হয়।
না, ক্যাশ আউটেও সমান কমিশন পাওয়া যায়।
লেনদেন দেখা, রিপোর্ট, কমিশন হিসাব এবং সিকিউরিটি ফিচারগুলো সহজে পাওয়া যায়।
উপসংহার
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা এখন দেশের সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ছোট ব্যবসাগুলোর একটি। প্রতিদিনের লেনদেন বৃদ্ধির কারণে এজেন্টদের আয়ও নিয়মিত বাড়ছে।
তাই যে কেউ চাইলে অল্প মূলধনে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই পুরো পোস্টে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত এবং ব্যবসা চালানোর সকল নিয়ম বোঝানো হয়েছে।
সঠিক লোকেশন এবং নিয়মিত লেনদেন থাকলে এজেন্ট ব্যবসা সহজেই স্থায়ী একটি আয় তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনলাইনে ঘরে বসে টাকা ইনকাম, টেলিকম অফার, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা অফার ও ইন্টারনেট থেকে সঠিক তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


