প্রিয় পাঠকগণ বমি হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়? এ বিষয়ে জানার জন্য আপনারা অনেকেই গুগলের মাধ্যমে সার্চ করে থাকেন। মূলত আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো কোন কোন কারনে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং কি পরিমানে বমি হলে রোজা ভাঙ্গার সম্ভাবনা রয়েছে।
মূলত মহান আল্লাহ তায়ালা কি হলে অথবা কোন কাজগুলো করলে আপনার রোজা ভেঙে যেতে পারে সে বিষয়ে সম্পূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম মেনে চলা এবং সঠিক নিয়মে রোজা রাখবেন কিভাবে আজকে আমরা সে বিষয়ে এয়ারটেলে আলোচনা করব। চলুন জেনে নেয়া যাক বমি হলে কি আপনার রোজা ভাঙবে কিনা।
পোস্ট সারসংক্ষেপ
কি কি কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে

প্রতিটি মুসলমানি এই সম্পর্কে ধারণা রাখে যে ইসলামের অন্যতম একটি স্তম্ভের নাম হচ্ছে রোজা।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ হচ্ছে রমাদান।
এই স্তম্ভগুলোর মধ্যে ইমাম নামাজ এবং যাকাতের পরপরই রোজার স্থান রয়েছে।
এই রোজার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা।
শরিয়তের পরিভাষায় সাওম বলা হয় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও রোজা ভঙ্গকারী কাজ থেকে বিরত থাকাকে।
আজ আমরা এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নিব যে সকল কাজের কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না।
১. আপনি যদি ভুল করে কোন কিছু খেয়ে ফেলেন তাহলে সে ক্ষেত্রে রোজা ভঙ্গ হবে না। [বুখারি শরিফ ১/২৫৯]।
মশা-মাছি, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর ঢুকে গেলেও রোজা ভাঙবে না [মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৬/৩৪৯]।
২. আপনার যদি অনিচ্ছাকৃত বমি হয় [এমনকি মুখ ভরে হলেও] আপনার রোজা ভাঙবে না। ঠিক একইভাবে যদি বমি মুখে এসে নিজে নিজেই আবার ভেতরে চলে যায় সে ক্ষেত্রেও আপনার রোজা ভাঙ্গে না।[তিরমিজি ১/১৫৩]।
আরও পড়ুনঃ
যে সকল কারনে রোজা ভাঙ্গে না
১/ আপনি যদি রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করে ফেলেন সেক্ষেত্রে আপনার রোজা নষ্ট হবে না।
ঠিক যখনি আপনার রোজার কথা স্মরণে আসবে তখনই পানহার ছেড়ে দিতে হবে। [মুসলিম ১/২০২]।
দাঁত ভেঙে রক্ত বের হলে সে রক্ত পেটের মধ্যে না খেলে রোজা ভাঙ্গে না।[শামি ৩/৩৬৭]।
২/ আপনার দাঁতের সঙ্গে যদি খাদ্যদ্রব্য ছোট সোলার কম পরিমাণ লেগে থাকে এবং সেটি যদি আপনার গলার ভেতরে চলে যায়।
তাহলে সে ক্ষেত্রে রোজা ভঙ্গ হবে না [হিন্দিয়া ১/২০২]।
তবে যদি আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে দাঁত থেকে বের করে হাতে নিয়ে সেটি খেয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে রোজা নিশ্চিতভাবে ভেঙে যাবে। [হিন্দিয়া ১/২০২]
৩/ যদি অতিরিক্ত গরম কিংবা পিপাসার কারণে গোসল এর মাধ্যমে নিজের শরীরকে ঠান্ডা করা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে রোজার কোন ধরনের ক্ষতি হবে না।[হিন্দিয়া ১/২০৩]।
এবং কুলি করার পর যদি পানির অবশিষ্ট আদ্রতা থুথুর সঙ্গে যদি গিলে ফেলা হয় সে ক্ষেত্রেও রোজার কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। [হিন্দিয়া ১/২০৩]।
৪/ আপনার শরীরে ঘাম অথবা চোখের পানি যদি দু-এক ফোঁটা অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখের ভিতর চলে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে রোজা নষ্ট হবে না।[হিন্দিয়া ১/২০৩]।
কানের মধ্যে থাকা ময়লা বাহির করার দ্বারা রোজার কোন ধরনের ক্ষতি হয় না। [মারাকিল ফালাহ ৩৪২]।
৫/ যদি আপনি পান খেয়ে থাকেন এবং খাওয়ার পর খুব ভালোভাবে কুলি করার পরেও রোজা থাকা অবস্থায় থুথুর সঙ্গে লাল রঙ বের হয়।
তাহলে আপনার রোজা রাখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা নেই। [হিন্দিয়া ১/২০৩]।
আরও পড়ুনঃ
রোজা না ভাঙ্গার আরো কিছু কারণ | বমি হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়

৬/ যদি আপনি জোরে নাক সাফ করতে গিয়ে কফ গলার মধ্যে চলে যায় সেক্ষেত্রেও কোন সমস্যা নেই। [দুররে মুখতার ৩/৩৭৩]।
রোজা অবস্থায় আতর বা ফুলের ঘ্রাণ নিলেও কোনো সমস্যা নেই [মারাকিল ফালাহ, ৩৬১]।
৭/ শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না, বরং তা বৈধ [মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক ৪/৩১৩]।
রোজা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত মুখের মধ্যে ধুলাবালি ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না [দুররে মুখতার ৩/৩৬৬]।
৮/ যদি রোজাদারের গোসল করার সময় অথবা বৃষ্টিতে ভেজার সময় কানের মধ্যে অনিচ্ছায় পানি চলে যায়, তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে রোজা নষ্ট হবে না [ফাতহুল কাদির ২/৩৪৭]।
৯/ সুস্থ অবস্থায় রোজার নিয়ত করার পর যদি অজ্ঞান, অচেতন বা পাগল হয়ে যায়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না [সুনানে কুবরা বায়হাকি ৪/২৩৫]।
আরও পড়ুনঃ
বমি হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায় FAQS
আপনার যদি অনিচ্ছাকৃত বমি হয় [এমনকি মুখ ভরে হলেও] আপনার রোজা ভাঙবে না। ঠিক একইভাবে যদি বমি মুখে এসে নিজে নিজেই আবার ভেতরে চলে যায় সে ক্ষেত্রেও আপনার রোজা ভাঙ্গে না।[তিরমিজি ১/১৫৩]।
না, আপনি যদি ভুল করে কিছু খেয়ে ফেলেন সে ক্ষেত্রে রোজা ভাঙবে না। কিন্তু মনে পড়ার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
উপসংহার
সুপ্রিয় পাঠকগণ বমি হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়?
এ বিষয়ে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে।
এবং আপনারা কোন কোন কারণে আপনাদের রোজা ভাঙবে না সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আপনাদের যদি এই বিষয়ে আরো কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
আপনি যদি অনলাইন থেকে ঘরে বসে টাকা আয় করতে চান।
তাহলে আপনার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে এমন কিছু আর্টিকেল রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা অনলাইন ভিত্তিক কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এমনকি আপনার আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে কাজের বিস্তারিত গাইড লাইন পেয়ে যাবেন।
তাই আর দেরি না করে আমাদের ওয়েবসাইটে সকল আর্টিকেলগুলো পড়ুন।
আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন এবং করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।