ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম জেনে নিন এবং ঘরে বসে ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করুন। ডিজিটাল বিচারব্যবস্থা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে, আর তার বড় অংশ হলো ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম। আগে পারিবারিক মামলা করতে আদালতের কয়েকবার আসা–যাওয়া, কাগজপত্র জমা, হাজিরা এবং নথি ব্যবস্থাপনায় অনেক সময় ও খরচ লাগত।

এখন অনলাইনেই রেজিস্ট্রেশন, মামলা দায়ের, নথি আপলোড, শুনানি ও হাজিরা পর্যন্ত সবই করা যায়। আদালতে গিয়ে শুধু হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থাকলেই ঘরে বসে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব।

ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, মোহরানা, দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, সন্তানের অভিভাবকত্বসহ গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক বিরোধ দ্রুত, স্বচ্ছ এবং সহজভাবে সমাধান করা যায়।

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

যারা অনলাইন আদালত ব্যবস্থার নিয়ম জানতে চান, এই গাইডটি তাঁদের জন্য।

ই-পারিবারিক আদালত কি

ই-পারিবারিক আদালত হলো একটি সম্পূর্ণ অনলাইন-ভিত্তিক আদালত ব্যবস্থা যেখানে পারিবারিক মামলা দায়ের থেকে শুরু করে শুনানি, নথি জমা, নোটিশ, হাজিরা এবং কোর্ট ফি পরিশোধ—সবই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।

এই সিস্টেম চালু করেছে আইন ও বিচার বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ই-জুডিশিয়ারি সেল। উদ্দেশ্য হলো বিচারপ্রার্থীদের সময় বাঁচানো, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

এখানে বিচারক, আইনজীবী, বাদী, বিবাদী এবং আদালতের কর্মচারী সবাই একই প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারেন।

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করতে আপনাকে efamilycourt.judiciary.gov.bd ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ, নথি আপলোড, কোর্ট ফি প্রদান এবং শুনানির তারিখ নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

মূল ধাপগুলো হলো:

  1. ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন
  2. এনআইডি, জন্মতারিখ, মোবাইল ও ইমেইল যাচাই সম্পন্ন করুন
  3. অ্যাকাউন্টে লগইন করে মামলা নির্বাচন করুন
  4. মামলার ধরন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করুন
  5. অনলাইন কোর্ট ফি প্রদান করুন
  6. মামলা সাবমিট করলে সিস্টেম কোর্ট তারিখ জেনারেট করবে
  7. অনলাইনেই হাজিরা দিতে পারবেন
  8. নথি, কোর্ট অর্ডার এবং কেস আপডেট নিজের ড্যাশবোর্ড থেকে দেখতে পারবেন

সব প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল হওয়ায় নথি হারানো, বিলম্ব, ভুল বা হয়রানির সম্ভাবনা অনেক কমে গেছে।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনে মেট্রোরেল কার্ড রিচার্জ করার নিয়ম: নতুন আপডেট

ই-পারিবারিক আদালতে কি কি বিষয়ে মামলা করা যাবে

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম

ই-পারিবারিক আদালত পাঁচটি প্রধান বিষয়ে মামলা গ্রহণ করে:

১. বিবাহবিচ্ছেদ

যেকোনো স্বামী বা স্ত্রী অনলাইনে বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করতে পারবেন।

২. দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার

স্বামী বা স্ত্রী যদি সংসার ত্যাগ করে, তাহলে অনলাইনে RCR মামলা করা যায়।

৩. মোহরানা

মোহরানা না পাওয়া গেলে অনলাইনে মোহরানার মামলা করা যায়।

৪. ভরণপোষণ

স্ত্রী বা সন্তান ভরণপোষণ না পেলে অনলাইন–ফর্ম পূরণ করেই মামলা করা যায়।

৫. সন্তানের তত্ত্বাবধান বা অভিভাবকত্ব

সন্তানের দেখাশোনা বা কাস্টডি সংক্রান্ত বিষয় অনলাইনে দাখিল করা যায়।

ভবিষ্যতে আরও ধরণের মামলা যুক্ত হতে পারে।

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করতে কি কি লাগবে

অনলাইন মামলা করতে প্রয়োজনীয় নথি মামলার ধরণ অনুযায়ী ভিন্ন হয়। সাধারণভাবে যা যা লাগে:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • বিয়ের কাবিননামা বা প্রয়োজনীয় পারিবারিক নথি
  • ঠিকানার প্রমাণ
  • মোবাইল নম্বর ও ইমেইল
  • আইনজীবীর ওকালতনামা (যদি আইনজীবী যুক্ত থাকে)
  • মামলার বিবরণসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্রের স্ক্যান কপি

সব নথি PDF বা JPG ফরম্যাটে আপলোড করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা । কমিশন রেট, ব্যবসার সুবিধা

ই-পারিবারিক আদালতে মামলার খরচ কত

ই-পারিবারিক আদালতের মামলায় খরচ আগের মতোই থাকে। তবে অনলাইন কোর্ট ফি ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে জমা দিতে হয়।

গড় খরচ:

  • কোর্ট ফি: মামলার ধরনভেদে
  • সার্ভিস চার্জ: অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের
  • আইনজীবী ফি (যদি আইনজীবী যুক্ত থাকেন)

অনলাইন প্রসেসিং হওয়ায় যাতায়াত, ফটোকপি ও কাগজপত্র খরচ অনেক কমে যায়।

কিভাবে মামলা সম্পন্ন করা হবে

১. বাদী অনলাইনে মামলা সাবমিট করবে
২. বিচারক সিস্টেমে নথি যাচাই করে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবেন
৩. বিবাদীকে SMS/ইমেইল নোটিশ যাবে
৪. অনলাইন বা অফলাইন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে
৫. প্রয়োজন হলে সাক্ষ্যগ্রহণ ভিডিও কনফারেন্সেও করা হবে
৬. বিচারক রায় প্রদান করলে তা বাদী ও বিবাদীর ড্যাশবোর্ডে আপলোড হবে

পুরো প্রক্রিয়া সিস্টেম-জেনারেটেড, তাই সময় ও ঝামেলা অনেক কম।

আরও পড়ুনঃ টিসিবি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রয় চলমান

প্রতিপক্ষ কিভাবে আবেদন করবেন

বিবাদীও efamilycourt পোর্টালে নিজের অ্যাকাউন্ট খুলে আবেদন করতে পারবেন।

সাধারণ ধাপ:

  • ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন
  • এনআইডি ও মোবাইল যাচাই
  • মামলার নথি ড্যাশবোর্ডে দেখা
  • শুনানিতে অংশগ্রহণ
  • প্রয়োজনীয় জবাব বা নথি অনলাইনে জমা
  • আইনজীবীর সাথে অনলাইন নথি শেয়ার

সিস্টেমের স্বচ্ছতার কারণে উভয় পক্ষ একই তথ্য দেখতে পান।

ই-পারিবারিক আদালতে কত দিনে মামলার রায় সম্পন্ন হবে

মামলার ধরন, জটিলতা এবং কোর্টের কার্যক্রম অনুযায়ী সময় ভিন্ন হতে পারে। তবে অনলাইনের কারণে সাধারণ কাগজপত্র যাচাই, হাজিরা ও শুনানিতে কম সময় লাগে।

গড় সময়:

  • সহজ মামলা: ৩০–৯০ দিন
  • জটিল মামলা: কিছু ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগতে পারে

ড্যাশবোর্ডে মামলার প্রতিটি আপডেট রিয়েল টাইমে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনে পিজি হাসপাতালের টিকিট কাটার নিয়ম

৫টি গুরুত্বপূর্ণ FAQ

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করতে কি আইনজীবী লাগবে?

না, বাধ্যতামূলক নয়। তবে জটিল মামলায় আইনজীবী থাকলে প্রক্রিয়া সহজ হয়।

অনলাইনে শুনানি কি বাধ্যতামূলক?

না। বিচারক চাইলে অনলাইন বা সরাসরি উভয় মাধ্যমেই শুনানি করতে পারেন।

মামলা দাখিলের পর বিবাদী কীভাবে নোটিশ পাবেন?

SMS ও ইমেইলের মাধ্যমে নোটিশ পাঠানো হয়।

নথি হারানোর ঝুঁকি কি আছে?

না। সব ডকুমেন্ট ক্লাউড সিস্টেমে নিরাপদে সংরক্ষিত থাকে।

সময় বাঁচে কিভাবে?

হাজিরা, কপি তোলা, নথি জমা—সবই অনলাইন হওয়ায় আদালতে বারবার যেতে হয় না।

উপসংহার

ই-পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম বিচারপ্রার্থীদের জন্য একটি বড় স্বস্তি। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, নথি আপলোড এবং শুনানির সুবিধা পারিবারিক বিরোধের মামলা দ্রুত ও নিরাপদভাবে নিষ্পত্তির সুযোগ তৈরি করেছে।

এটি শুধু সময় বাঁচায় না, বরং স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের পথ সহজ করে।

ডিজিটাল বিচারব্যবস্থা এগিয়ে চলেছে। এই উদ্যোগ সফল হলে দেশের সব আদালত ধীরে ধীরে একই সিস্টেমে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়।

আরও পড়ুনঃ বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

অনলাইনে ঘরে বসে টাকা ইনকাম, টেলিকম অফার, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা অফার ও ইন্টারনেট থেকে সঠিক তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment