মোবাইল সিম এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং ডিজিটাল লেনদেন, পরিচয় যাচাই ও নানা অনলাইন সেবার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে অপরাধ দমন ও সিমের অপব্যবহার বন্ধ করতে সরকার নতুন করে কড়াকড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফলে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, এক নামে কয়টি সিম রাখা যাবে, আগের নিয়ম কি বদলাচ্ছে, আর অতিরিক্ত সিম থাকলে কী হবে? এই পোস্টে সহজ ভাষায় সব আপডেট ব্যাখ্যা করা হলো।
Content Summary
এক নামে কয়টি সিম রাখা যাবে: নতুন সরকারি সিদ্ধান্ত
নির্বাচনের আগে সিম ব্যবহারের অপব্যবহার ঠেকাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিবন্ধনের সুযোগ থাকলেও, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধাপে ধাপে এই সংখ্যা কমানো হবে।
প্রথম ধাপে একজন গ্রাহকের নামে ৫টির বেশি সিম নিবন্ধন করা যাবে না। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে এটি আরও কমিয়ে ২টি সিমে নামিয়ে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
কেন এক নামে সিমের সংখ্যা কমানো হচ্ছে?
বিটিআরসির পর্যালোচনায় দেখা গেছে,
- অনেক অপরাধে সিম ব্যবহার হয় অন্যের নামে
- রাস্তাঘাটে সিম কেনার সময় গ্রাহকের অজান্তে বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করা হচ্ছে
- একজন ব্যক্তি একদিনেই একাধিক সিম কিনছেন, যা স্বাভাবিক নয়
এই অনিয়ম বন্ধ করতেই এক নামে কতটি সিম রাখা যাবে সেই সীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত সিম থাকলে কী হবে
যেসব গ্রাহকের নামে বর্তমানে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম রয়েছে, তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত সিম নিজ দায়িত্বে ডি-রেজিস্ট্রেশন বা মালিকানা পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।
যারা সময়মতো এটি করেননি, তাদের অতিরিক্ত সক্রিয় সিম অপারেটরের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করা হবে।
এছাড়া ভবিষ্যতে সিম রিপ্লেস বা নতুন সিম নিতে গেলে, আগে সিম সংখ্যা কমিয়ে বৈধ সীমার মধ্যে আনতে হবে।
বর্তমানে দেশে সিম ব্যবহারের চিত্র
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী—
- দেশে মোট নিবন্ধিত সিম: প্রায় ২৬ কোটি
- সক্রিয় সিম: প্রায় ১৯–২০ কোটি
- ৮০% গ্রাহকের কাছে ১ থেকে ৫টি সিম
- ৬ থেকে ১০টি সিম রয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ গ্রাহকের কাছে
এই বিশাল সংখ্যার কারণেই নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হচ্ছে।
মোবাইল অপারেটরদের প্রতিক্রিয়া
মোবাইল অপারেটররা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরোপুরি একমত নন। তাদের মতে—
- শুধু সিমের সংখ্যা কমালেই অপরাধ কমবে না
- এতে টেলিযোগাযোগ খাতে প্রতিযোগিতা কমবে
- ছোট অপারেটররা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে
- ব্যবসা ও পেশাগত কারণে অনেক বৈধ গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করেন
তবে সরকার মনে করছে, এটি একটি প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ।
IoT ডিভাইসের জন্য আলাদা ব্যবস্থা
আইওটি ডিভাইস যেমন স্মার্ট মিটার, ট্র্যাকিং ডিভাইস ইত্যাদির জন্য আলাদা সিরিজের সিম চালুর অনুমোদন দেবে বিটিআরসি। ফলে ব্যক্তিগত ব্যবহারের সিমের সীমা থাকলেও, প্রযুক্তিনির্ভর সেবায় সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুনঃ প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থানে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ, রেইজ প্রকল্প কি?
FAQs – এক নামে কয়টি সিম রাখা যাবে
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫টি সিম।
অতিরিক্ত সিম নিজে বাতিল না করলে অপারেটর বাতিল করবে।
নামের সঙ্গে ৫টির বেশি সিম থাকলে নতুন সিম নিবন্ধন হবে না।
প্রত্যেক সদস্যের আলাদা NID থাকলে আলাদা করে সিম নেওয়া যাবে।
হ্যাঁ, প্রয়োজনে ২টি সিমে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উপসংহার
এক নামে কয়টি সিম রাখা যাবে—এই প্রশ্নটি এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি হলেও, সিমের অপব্যবহার কমানোই মূল লক্ষ্য।
আপনার নামে কতটি সিম আছে তা এখনই যাচাই করে প্রয়োজন না থাকলে অতিরিক্ত সিম বাতিল করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আরও পড়ুনঃ BTCL সিম ও টেলিটক সিমের মধ্যে পার্থক্য কী: কোনটি সেরা
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


