এফডিআর নাকি ডিপিএস: কোনটিতে বেশি লাভ? জানুন বিস্তারিত তুলনা

এফডিআর নাকি ডিপিএস – এই প্রশ্নটা অনেকের মনেই ঘোরাফেরা করে যখন ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার কথা আসে। বাংলাদেশে বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাংক এই দুই ধরনের সঞ্চয় সুবিধা দিচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য নির্ভরযোগ্য ও লাভজনক।

এফডিআর হলো এককালীন বড় অঙ্কের টাকা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমা রাখার ব্যবস্থা, আর ডিপিএস হলো প্রতি মাসে ছোট কিস্তিতে নিয়মিত সঞ্চয়ের একটি স্কিম। তাই আপনি কেমন সঞ্চয় চান, সেটিই নির্ধারণ করবে কোনটা আপনার জন্য ভালো।

বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক এখন এফডিআর ও ডিপিএস সেবা চালু রেখেছে। তাই ব্যাংক বাছাইয়ের আগে অবশ্যই জানতে হবে কোন ব্যাংকের সুদহার বেশি, আর কারা নিরাপদ সঞ্চয়ের সুযোগ দিচ্ছে।

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

ডিপিএস নাকি এফডিআর কোনটিতে লাভ বেশি?

ডিপিএস নাকি এফডিআর কোনটিতে লাভ বেশি

এফডিআর নাকি ডিপিএস কোন উপায়ে টাকা জমাবেন, এটা নির্ভর করে আপনার আয়ের ধরন ও লক্ষ্য কী তার ওপর। যদি হাতে এককালীন বড় অঙ্কের টাকা থাকে, তাহলে এফডিআর ভালো বিকল্প। আর যদি প্রতি মাসে অল্প করে সঞ্চয় করতে চান, তাহলে ডিপিএস হবে উপযুক্ত উপায়।

এফডিআর সাধারণত ঝুঁকিমুক্ত, নির্দিষ্ট সুদে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে টাকা ফেরত দেয়। ডিপিএস আবার মাসিক কিস্তির মাধ্যমে ধীরে ধীরে বড় অঙ্কের সঞ্চয় তৈরি করে। দুই ক্ষেত্রেই ব্যাংকের সুনাম ও মুনাফার হার জানা জরুরি।

(What is FDR) এফডিআর কি?

ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট বা এফডিআর হলো এমন একটি সঞ্চয় ব্যবস্থা যেখানে আপনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একবারে বড় অঙ্কের টাকা জমা রাখেন। মেয়াদ শেষে আপনি মূল টাকা ও নির্ধারিত সুদ একসাথে পান।

এফডিআর সাধারণত ৩ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সময়ের জন্য খোলা যায়। এটি ঝুঁকিমুক্ত এবং বাজারের ওঠানামায় প্রভাবিত হয় না। অনেক ব্যাংক এফডিআরের বিপরীতে ৯০% পর্যন্ত ঋণ সুবিধাও দিয়ে থাকে।

ডিপিএস কি?

ডিপিএস বা ডিপোজিট পেনশন স্কিম হলো মাসিক কিস্তিতে সঞ্চয়ের একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা। এতে আপনি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা রাখেন, মেয়াদ শেষে মূলধন ও মুনাফা একসাথে ফেরত পান।

এটি তাদের জন্য উপযুক্ত যারা সীমিত আয়ের মধ্যে থেকে ভবিষ্যতের জন্য নিয়মিত সঞ্চয় করতে চান। ডিপিএস সাধারণত ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত খোলা যায়, এবং কিছু ব্যাংক ডিপিএসের সঙ্গে বিমা বা ঋণ সুবিধাও দেয়।

এফডিআর নাকি ডিপিএস এর মধ্যে পার্থক্য কি?

বিষয়এফডিআরডিপিএস
জমার ধরনএককালীন বড় অঙ্কের টাকামাসিক কিস্তিতে সঞ্চয়
মেয়াদ৩ মাস থেকে ১০ বছর২ বছর থেকে ২০ বছর
সুদ প্রদানমেয়াদ শেষে বা মাসিক ভিত্তিতেমেয়াদ শেষে মূলধনসহ
ঝুঁকিখুবই কমকম
উপযুক্ত কার জন্যযাদের হাতে এককালীন টাকা আছেযাদের আয় সীমিত কিন্তু নিয়মিত

আরও পড়ুনঃ জিপি ১ পয়সা কলরেট অফার ৩৬৫ দিন মেয়াদ

এফডিআর রেট কোন ব্যাংক ভালো দেয়?

বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআরের সুদহার ভিন্ন হয়। সাধারণত সরকারি ব্যাংকগুলো ৬% থেকে ৭% পর্যন্ত সুদ দেয়, আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৮% থেকে ৯.৫% পর্যন্ত অফার করে।

যেমন ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকসিটি ব্যাংক তুলনামূলক ভালো রেট দেয়।

তবে ব্যাংকভেদে মেয়াদ, আমানতের পরিমাণ এবং শর্ত অনুযায়ী সুদের হার পরিবর্তিত হতে পারে।

ডিপিএস রেট কোন ব্যাংক ভালো দেয়

ডিপিএসের ক্ষেত্রেও ব্যাংকভেদে সুদহার আলাদা। সরকারি ব্যাংক যেমন সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক সাধারণত ৬% থেকে ৭.৫% পর্যন্ত সুদ দেয়।

বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেমন ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইউসিবি, ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক—এদের ডিপিএস সুদহার ৮% থেকে ৯.২৫% পর্যন্ত হয়। মেয়াদ যত বেশি, মুনাফাও তত বেশি হয়।

আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক মালয়েশিয়া, কুয়েত ওমান

এফডিআর নাকি ডিপিএস কোনটি বেছে নেবেন?

আপনার আয় যদি স্থায়ী হয় এবং হাতে কিছু অতিরিক্ত টাকা থাকে, তাহলে এফডিআর করুন। এতে আপনি নিশ্চিত সুদসহ টাকা ফেরত পাবেন।

আর যদি আপনি চাকরিজীবী বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হন, তাহলে ডিপিএস বেশি সুবিধাজনক, কারণ মাসে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করেও বড় তহবিল তৈরি করা যায়।

এফডিআর করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি
  • ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • নমিনির তথ্য (নাম, ঠিকানা)
  • অনলাইনে ৫-১০ মিনিটে আবেদন চালু করা যায়।
  • সঠিক কাগজপত্র ও তথ্য থাকলে আপনার সঞ্চয় শুরু করা দ্রুত ও নিরাপদ হবে।

ডিপিএস করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

এফডিআর করার জন্য আপনার যে ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয় ডিপিএস করার জন্য আপনার ঠিক এই ধরনের কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে।

তাই ডিপিএস করতে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, প্রমাণপত্র হিসাবে বিদ্যুৎ গ্যাস অথবা পানির বিল, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নমিনির তথ্য ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ টেলিটক ইন্টারনেট অফার আনলিমিটেড মেয়াদ ২০২৫ | ২৫GB, ৫০GB, ৭৫GB প্যাক

অনলাইনে ডিপিএস করার নিয়ম?

বর্তমানে বেশিরভাগ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক অনলাইনে ডিপিএস খোলার সুবিধা দিচ্ছে। অনলাইনে ডিপিএস করতে হলে প্রথমে আপনার সেই ব্যাংকে একটি সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

  • এরপর ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে লগইন করে “Deposit Scheme” বা “Open DPS” অপশনটি নির্বাচন করুন।
  • সেখানে ডিপিএসের মেয়াদ, মাসিক কিস্তির পরিমাণ এবং নোমিনি তথ্য ঠিকভাবে দিতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ এবং একটি ছবি আপলোড করলেই আবেদন সম্পূর্ণ হয়।
  • বেশিরভাগ ব্যাংক ৫–১০ মিনিটের মধ্যেই আপনার অনলাইন ডিপিএস চালু করে দেয়।
  • আবেদন সম্পন্ন হলে আপনার মোবাইল বা ইমেইলে একটি কনফার্মেশন মেসেজ চলে আসে।

অনলাইনে এফডিআর করার নিয়ম

এখন ব্যাংকে না গিয়েই ঘরে বসে অনলাইনে এফডিআর করা যায়।

প্রথমে আপনার নির্বাচিত ব্যাংকে একটি সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এরপর ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে লগইন করে “Fixed Deposit” বা “Open FDR” অপশনটি নির্বাচন করুন।

সেখানে এফডিআরের মেয়াদ, বিনিয়োগের পরিমাণ, সুদ গ্রহণের ধরন (মাসিক বা মেয়াদ শেষে) এবং নোমিনি তথ্য দিতে হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র ও ঠিকানার প্রমাণ আপলোড করতে হয়।

সব তথ্য যাচাই শেষে ব্যাংক থেকে ডিজিটাল কনফার্মেশন মেসেজ পাঠানো হয়, এবং সঙ্গে সঙ্গে আপনার এফডিআর অ্যাকাউন্ট সক্রিয় হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ সোনালী ব্যাংকে টাকা জমানোর সঠিক নিয়ম, কীভাবে ৫ থেকে ১০ শতাংশ লাভ পাবেন

FAQs –

এফডিআর করতে কত টাকা লাগে?

সাধারণত ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ব্যাংকভেদে এফডিআর খোলা যায়।

ডিপিএস করতে কত টাকা লাগে?

বেশিরভাগ ব্যাংকে ৫০০ টাকা বা ১,০০০ টাকা মাসিক কিস্তিতে ডিপিএস করা যায়।

এফডিআরে সুদ মাসে পাওয়া যায় কি?

হ্যাঁ, কিছু ব্যাংক মাসিক ভিত্তিতে সুদ দেয়, আবার কেউ মেয়াদ শেষে দেয়।

ডিপিএস ভাঙলে ক্ষতি হয় কি?

মেয়াদ শেষের আগে ডিপিএস বন্ধ করলে কিছু সুদ কমে যেতে পারে।

অনলাইনে কি এফডিআর বা ডিপিএস খোলা যায়?

হ্যাঁ, এখন প্রায় সব ব্যাংকই অনলাইন আবেদন সুবিধা দিয়েছে।

শেষ কথা,

আশা করি আপনারা এফডিআর নাকি ডিপিএস কোনটি করবেন এই বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।

যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকে তাহলে সেগুলো ফেলে না রেখে সঠিক ব্যাংক বাছাই করে এফডিআর করে দিন।

যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তারা চাইলে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করে ডিপিএস করতে পারেন।

আশা করি নিবন্ধনটি আপনাদের উপকারে আসবে। তথ্যবহুল সংবাদ পেতে সবার আগে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment