iSIM কি এবং iSIM কিভাবে কাজ করে | iSIM ও eSIM এর পার্থক্য ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি

বর্তমান টেলিকম প্রযুক্তির দুনিয়ায় iSIM (Integrated SIM) হচ্ছে নতুন এক বিপ্লব। ফিজিক্যাল সিম এবং eSIM-এর পর এবার আসছে iSIM, যা সরাসরি ডিভাইসের প্রসেসরে সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ, ফোনে আর কোনো আলাদা সিম কার্ড বা সিম ট্রে লাগবে না।

এটি শুধু জায়গা বাঁচায় না, বরং নিরাপত্তা, শক্তি খরচ, এবং কানেক্টিভিটিতেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করে। চলুন দেখে নেই iSIM কি এবং iSIM কিভাবে কাজ করে এবং iSIM ও eSIM এর পার্থক্য ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সম্পর্কে।

iSIM কি?

iSIM বা Integrated SIM হলো এমন এক উন্নত প্রযুক্তি যেখানে সিম কার্ডটি ডিভাইসের মূল চিপ বা প্রসেসরের ভেতরেই সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ, এখানে আলাদা করে কোনো ফিজিক্যাল সিম কার্ড বা eSIM চিপের দরকার হয় না।

এটি সরাসরি ডিভাইসের হার্ডওয়্যারের অংশ হিসেবে কাজ করে, ফলে মোবাইল বা স্মার্টওয়াচ সহজেই নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে। iSIM প্রযুক্তি ডিভাইসকে আরও ছোট, নিরাপদ, এবং শক্তি-সাশ্রয়ী করে তোলে।

এটি ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট-অফ-থিংস (IoT) ডিভাইসের জন্য নতুন মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

iSIM কীভাবে কাজ করে?

iSIM কি এবং iSIM কিভাবে কাজ করে

iSIM (ইন্টিগ্রেটেড সিম) মূলত ডিভাইসের System on Chip (SoC)-এর মধ্যে এমবেড থাকে।
এর মানে হচ্ছে সিম ফাংশনগুলো আলাদা চিপে না থেকে সরাসরি ফোন বা স্মার্টওয়াচের প্রসেসরের অংশ হিসেবে কাজ করে।

ফলে ফোনটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হতে পারে ফিজিক্যাল সিম বা eSIM ছাড়াই

প্রযুক্তিগতভাবে এটি eSIM-এর মতোই রিমোট প্রভিশনিং সাপোর্ট করে, অর্থাৎ আপনি ক্যারিয়ার পরিবর্তন করতে পারবেন অনলাইনে, কোনো দোকানে না গিয়েই।

আরও পড়ুনঃ টেলিটক কল রেট অফার | মিনিটে মাত্র ৬০ পয়সায় কথা বলুন

iSIM ও eSIM এর মধ্যে পার্থক্য কি?

বিষয়eSIMiSIM
অবস্থানআলাদা চিপ হিসেবে থাকেসরাসরি প্রসেসরে এমবেড
জায়গা লাগেকিছুটাপ্রায় নেই
শক্তি খরচবেশিকম
নিরাপত্তাভালোআরও উন্নত
নেটওয়ার্ক পরিবর্তনওভার-দ্য-এয়ার (OTA)আরও সহজ OTA ব্যবস্থায়

সংক্ষেপে, iSIM হলো eSIM-এর পরবর্তী ধাপ, যেখানে আর কোনো আলাদা সিম মডিউলের প্রয়োজন হয় না।

আরও পড়ুনঃ জিপি ইন্টারনেট অফার ৩৬৫ দিন মেয়াদ

iSIM প্রধান ফিচার সমূহ

  1. সরাসরি প্রসেসরে সংযুক্ত সিম – আলাদা সিম কার্ড বা চিপের প্রয়োজন নেই।
  2. কম শক্তি খরচ – IoT ও স্মার্ট ডিভাইসের জন্য আরও কার্যকর।
  3. ওভার-দ্য-এয়ার প্রভিশনিং – দূর থেকে ক্যারিয়ার সেটআপ করা যায়।
  4. নিরাপত্তা উন্নত – হারানো বা চুরি হওয়া সিমের ঝুঁকি থাকে না।
  5. ছোট ডিভাইস ডিজাইন – স্মার্টওয়াচ, ট্র্যাকার, বা মিনি গ্যাজেটে ব্যবহারযোগ্য।

iSIM-এর প্রধান সুবিধা সমূহ কি কি?

  • জায়গা বাঁচায়: ফোনের ভেতরে আলাদা সিম ট্রে দরকার নেই।
  • ডিজাইন সহজ করে: নির্মাতারা আরও ছোট ও স্লিম ডিভাইস বানাতে পারবেন।
  • নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়: সিম সরানো বা চুরি করা সম্ভব নয়।
  • খরচ কমায়: আলাদা সিম হার্ডওয়্যার বা ট্রে লাগবে না।
  • একাধিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার: একই ডিভাইসে একাধিক ক্যারিয়ার ব্যবহার করা যাবে।

আরও পড়ুনঃ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ডাক্তার তালিকা ঢাকা ২০২৫

ফিজিক্যাল সিম বনাম eSIM বনাম iSIM

বৈশিষ্ট্যফিজিক্যাল সিমeSIMiSIM
সিম ট্রেআছেনেইনেই
স্থান দখলবেশিকমসবচেয়ে কম
নিরাপত্তাকমভালোসর্বোচ্চ
পরিবর্তনযোগ্যতাহাতে পরিবর্তনOTAOTA
ভবিষ্যৎ ব্যবহারধীরে কমছেবর্তমানে জনপ্রিয়ভবিষ্যতের স্ট্যান্ডার্ড

কোন কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যেই iSIM নিয়ে কাজ করছে

বর্তমানে Vodafone, Qualcomm, এবং Thales সফলভাবে iSIM প্রযুক্তি পরীক্ষা করেছে। এছাড়াও Samsung, Apple, Nokia, এবং ARM-ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের চিপে iSIM ইন্টিগ্রেশন নিয়ে গবেষণা করছে।

বিশ্বজুড়ে GSMA ইতিমধ্যে iSIM-এর সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করেছে।

আরও পড়ুনঃ অভিবাসন ঋণ দিচ্ছে সরকার | বিদেশগামী কর্মীদের জন্য নতুন সুযোগ

iSIM বাংলাদেশে কবে আসতে পারে?

বাংলাদেশে এখনো eSIM পুরোপুরি জনপ্রিয় হয়নি। বর্তমানে শুধুমাত্র GrameenphoneRobi নির্দিষ্ট কিছু ডিভাইসে eSIM সেবা দিচ্ছে।

তবে বিশ্বব্যাপী যেভাবে iSIM প্রযুক্তি ছড়াচ্ছে, অনুমান করা যায় ২০২৬ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশেও iSIM চালু হতে পারে।

এর জন্য মোবাইল অপারেটর ও ডিভাইস নির্মাতাদের সমন্বয় প্রয়োজন।

iSIM কি কি পরিবর্তন আনবে?

iSIM প্রযুক্তি স্মার্টফোনের পাশাপাশি IoT ডিভাইস, যেমন স্মার্টওয়াচ, গাড়ি, মেডিকেল সেন্সর, ও হোম অটোমেশন পণ্যেও বিপ্লব আনবে।

ফিজিক্যাল সিম বাদ যাওয়ায় ডিভাইস হবে আরও ছোট, নিরাপদ ও শক্তি সাশ্রয়ী। এছাড়া নেটওয়ার্ক পরিবর্তন হবে আরও সহজ, যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য সুবিধাজনক হবে।

iSIM-এর মতো প্রযুক্তি উন্নত হলেও, বাংলাদেশে অনেকেই এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন সেবাগুলো সম্পর্কে জানেন না।

এটি দেখায়, দেশেও ধীরে ধীরে সব সেবা ডিজিটাল হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে iSIM-এর মতো উদ্ভাবন গ্রহণে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুনঃ ই সিম কি? eSIM এর সুবিধা অসুবিধা বিস্তারিত জানুন

FAQs (প্রশ্নোত্তর)

iSIM কি?

iSIM হলো Integrated SIM, যা ডিভাইসের চিপে সরাসরি সংযুক্ত থাকে।

eSIM iSIM এর পার্থক্য কী?

eSIM আলাদা চিপে থাকে, কিন্তু iSIM সরাসরি প্রসেসরে এমবেড থাকে।

iSIM কি নিরাপদ?

হ্যাঁ, কারণ এটি হার্ডওয়্যারের ভেতর থাকে, সরানো বা চুরি করা যায় না।

iSIM কবে বাংলাদেশে আসবে?

সম্ভবত ২০২৬–২০২৭ সালের মধ্যে, যখন অপারেটররা এই প্রযুক্তি গ্রহণ করবে।

iSIM কি মোবাইল ছাড়াও অন্য ডিভাইসে ব্যবহার হবে?

হ্যাঁ, IoT ডিভাইস, স্মার্টওয়াচ, গাড়ি, ও হোম সেন্সরেও ব্যবহৃত হবে।

উপসংহার

iSIM প্রযুক্তি হলো ভবিষ্যতের টেলিকম সমাধান। এটি শুধু ফোন নয়, পুরো কানেক্টেড ডিভাইস ইকোসিস্টেমকে বদলে দেবে।

বাংলাদেশে এখনো এই প্রযুক্তি চালু না হলেও, আগামী কয়েক বছরে আমরা এর ব্যবহার দেখতে পাবো।
যারা প্রযুক্তিপ্রেমী, তাদের এখন থেকেই iSIM সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরি।

আপনারা আই সিম কি এবং বাংলাদেশের বাজারে কবে আসবে আইসিএম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

iSIM কি? এবং iSIM কিভাবে কাজ করবে ভবিষ্যতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথে থাকুন জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment