নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম

নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম জানতে চান। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে ভূমি সংক্রান্ত সেবাকে সহজ ও নাগরিকবান্ধব করতে সরকার চালু করেছে নামজারি অ্যাপ।

আগে যেখানে জমির নামজারি করতে ভূমি অফিসে বারবার যেতে হতো, দালালের ঝামেলা ছিল, এখন সেখানে নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম অনুসরণ করে অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে। এতে সময় বাঁচছে, খরচ কমছে এবং প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ হচ্ছে।

বর্তমানে জমি কেনা, উত্তরাধিকার সূত্রে জমি পাওয়া কিংবা মালিকানা হস্তান্তরের পর নামজারি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

এই কাজটি সঠিকভাবে না করলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম জানা থাকলে খুব সহজেই নিজেই আবেদন করতে পারবেন, কারও ওপর নির্ভর করতে হবে না।

এই পোস্টে আমরা জানব নামজারি কী, নামজারি অ্যাপে কী কী সেবা পাওয়া যায়, অনলাইনে নামজারি আবেদন করার নিয়ম, আবেদনের অবস্থা যাচাই করার পদ্ধতি এবং কোন কোন ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয়।

নামজারি কী?

নামজারি হলো জমির মালিকানা হালনাগাদ করার একটি সরকারি প্রক্রিয়া। জমি ক্রয়, দান, উত্তরাধিকার বা অন্য যেকোনোভাবে মালিকানা পরিবর্তন হলে নতুন মালিকের নামে সরকারি রেকর্ডে জমিটি অন্তর্ভুক্ত করাকে নামজারি বলা হয়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

Above all, নামজারি না করলে জমির প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যায়।

খতিয়ান, ভূমি কর বা ভবিষ্যৎ লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

তাই জমির মালিকানা পরিবর্তনের পর যত দ্রুত সম্ভব নামজারি করা অত্যন্ত জরুরি।

নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম

নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম

নামজারি অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই নামজারি করতে হলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত “নামজারি (Namjari)” অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে OTP ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে।

লগইন করার পর নামজারি আবেদন অপশন নির্বাচন করে জমির বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। নির্ধারিত স্থানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে আবেদন সাবমিট করলে একটি রেফারেন্স নম্বর পাওয়া যাবে। এই নম্বর দিয়ে পরবর্তীতে আবেদনের অবস্থা যাচাই করা যাবে।

নামজারি অ্যাপে কি কি সেবা পাওয়া যায়

নামজারি অ্যাপে শুধুমাত্র নামজারি আবেদন নয়, বরং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সেবা এক জায়গায় পাওয়া যায়।

ব্যবহারকারীরা অনলাইনে নামজারি আবেদন জমা দিতে পারেন এবং আবেদনের বর্তমান অবস্থা রিয়েল-টাইমে দেখতে পারেন।

এছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড, অফিসিয়াল নোটিশ দেখা, শুনানির তারিখ জানা এবং ভূমি সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা ও নিয়মাবলি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

ফলে ভূমি অফিসে সরাসরি না গিয়েও অনেক কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।

অনলাইনে নামজারি আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে নামজারি আবেদন করার জন্য প্রথমে অ্যাপে লগইন করতে হবে। এরপর “নামজারি আবেদন” অপশনে ক্লিক করে জেলা, উপজেলা, মৌজা ও খতিয়ানের তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

এরপর দলিল, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি বা পরিষ্কার ছবি আপলোড করতে হবে। সব তথ্য যাচাই করে আবেদন সাবমিট করলে আবেদনটি সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে পাঠানো হবে।

কিভাবে নামজারি আবেদনের অবস্থা যাচাই করবেন

নামজারি আবেদন জমা দেওয়ার পর অ্যাপের “আবেদন ট্র্যাকিং” অপশনে গিয়ে রেফারেন্স নম্বর ব্যবহার করে আবেদনের অবস্থা যাচাই করা যায়। এখানে দেখা যাবে আবেদন গ্রহণ হয়েছে কিনা, প্রক্রিয়াধীন নাকি নিষ্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া শুনানির তারিখ বা অতিরিক্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন হলে অ্যাপের মাধ্যমে নোটিফিকেশন দেওয়া হয়। এতে আবেদনকারী সব সময় আপডেট থাকতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ জন্ম সনদে তথ্য ভুল থাকলে অনলাইনে সংশোধনের সহজ উপায় ২০২৬

নামজারি করতে কি কি ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে

নামজারি আবেদন করার সময় কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট আপলোড করা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে জমি ক্রয়ের দলিলের কপি, পূর্ববর্তী খতিয়ান, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওয়ারিশ সনদ বা উত্তরাধিকার প্রমাণপত্র।

সব ডকুমেন্ট পরিষ্কার ও সঠিক হতে হবে। অস্পষ্ট বা ভুল কাগজপত্র আপলোড করলে আবেদন বাতিল বা বিলম্বিত হতে পারে।

নিশ্চিত। নিচে পুরো লেখাটি নতুনভাবে, সহজ ও প্রাকৃতিক ভাষায় রিরাইট করে দিলাম।

নামজারি অ্যাপ ব্যবহারের ধাপসমূহ

ধাপ ১: অ্যাপ ডাউনলোড করুন

  • প্রথমে গুগল প্লে স্টোরে প্রবেশ করে সার্চ বক্সে “নামজারি” লিখুন।
  • এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় (Ministry of Land) কর্তৃক প্রকাশিত সরকারি অ্যাপটি খুঁজে ইনস্টল করুন।

=> ধাপ ২: অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন

  • অ্যাপটি চালু করে আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন।
  • মোবাইলে পাঠানো OTP কোড দিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে।

=>ধাপ ৩: লগইন করে প্রয়োজনীয় সেবা নির্বাচন করুন

রেজিস্ট্রেশন শেষে লগইন করে নামজারি আবেদন, আবেদন ট্র্যাকিং অথবা অন্যান্য ভূমি সেবার অপশন বেছে নিতে পারবেন।

ধাপ ৪: তথ্য পূরণ ও ডকুমেন্ট আপলোড করুন

  • জমির বিস্তারিত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন।
  • এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের পরিষ্কার স্ক্যান কপি বা ছবি আপলোড করুন।

ধাপ ৫: আবেদন সাবমিট করুন

সব তথ্য যাচাই করে আবেদন সাবমিট করলে একটি রেফারেন্স নম্বর পাবেন, যা দিয়ে পরবর্তীতে আবেদনের অবস্থা জানা যাবে।

আরও পড়ুনঃ সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত, এক নামে কয়টি সিম রাখা যাবে?

নামজারি অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা

  • এই অ্যাপ ব্যবহারে ভূমি অফিসে বারবার যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
  • সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হয়।
  • দালালের ওপর নির্ভরতা অনেক কমে যায়।
  • আবেদন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সহজ হয়।
  • যেকোনো সময় আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানা যায়।
  • সরকারি ও নিরাপদ একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সব সেবা পাওয়া যায়।
কারা এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন?
  • বর্তমান জমির মালিকরা এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।
  • জমি ক্রয় করেছেন এমন ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারবেন।
  • উত্তরাধিকার সূত্রে জমি পাওয়া ব্যক্তিরা নামজারি করতে পারবেন।
  • যেকোনো সাধারণ নাগরিক যিনি নামজারি করতে চান, তিনি এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।

নামজারি অ্যাপ কি নিরাপদ?

হ্যাঁ, নামজারি অ্যাপ সম্পূর্ণ নিরাপদ। এটি সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় পরিচালিত একটি অফিসিয়াল অ্যাপ।

ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষার জন্য সরকারি নিরাপত্তা নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

  • আবেদন করার সময় সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
  • ডকুমেন্ট অবশ্যই স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে আপলোড করুন।
  • আবেদন শেষে পাওয়া রেফারেন্স নম্বর সংরক্ষণ করে রাখুন।
  • কোনো সমস্যা হলে নিকটস্থ ভূমি অফিস বা হেল্পডেস্কে যোগাযোগ করুন।

আরও পড়ুনঃ প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থানে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ, রেইজ প্রকল্প কি?

FAQs

নামজারি অ্যাপ কি সরকারি?

হ্যাঁ, নামজারি অ্যাপ বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি অফিসিয়াল অ্যাপ।

নামজারি অ্যাপ ব্যবহার করতে কি ভূমি অফিসে যেতে হবে?

না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘরে বসেই আবেদন ও ট্র্যাকিং করা যায়। প্রয়োজনে শুনানির জন্য ডাকতে পারে।

অনলাইনে নামজারি করতে কত সময় লাগে?

সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তবে এলাকার ওপর সময় ভিন্ন হতে পারে।

নামজারি অ্যাপ কি নিরাপদ?

হ্যাঁ, এটি সরকার অনুমোদিত এবং ডেটা সুরক্ষার জন্য সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে।

একাধিক জমির জন্য কি আলাদা আবেদন করতে হবে?

হ্যাঁ, প্রতিটি জমির জন্য আলাদা নামজারি আবেদন করতে হয়।

উপসংহার

ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম সাধারণ মানুষের জন্য একটি বড় সুবিধা।

এতে সময়, খরচ এবং ভোগান্তি অনেকটাই কমে গেছে। তাই নামজারি অ্যাপ থেকে ঘরে বসেই জমির নামজারি করার নিয়ম মেনে কাজ করুন।

আপনি যদি জমি ক্রয় বা উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে দেরি না করে নামজারি অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদন করুন।

এটি সহজ, নিরাপদ এবং সম্পূর্ণ সরকারি একটি সেবা।

আরও পড়ুনঃ BTCL সিম ও টেলিটক সিমের মধ্যে পার্থক্য কী: কোনটি আপনার জন্য উপযোগী

এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment