জাতীয় পরিচয়পত্র বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্র। সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, ব্যাংক, স্বাস্থ্যসেবা, মোবাইল সিম নিবন্ধনসহ প্রায় সব সেবায় এনআইডি লাগেই। তাই কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। তবে ২০২৫ সালের নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের যে ৭টি তথ্য সংশোধন করা যাবে না, সেই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এনআইডিতে ভুল থাকলে আগে যেকোনো তথ্য সহজেই সংশোধন করা যেত। কিন্তু এখন কিছু নির্দিষ্ট তথ্য যাচাই–প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার কারণে আপাতত পরিবর্তন বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফলে আবেদন করার আগে কোন তথ্য পরিবর্তন হবে আর কোনটা হবে না— এ বিষয়ে পরিষ্কার জানা জরুরি। এই পোস্টে আমরা সহজ ভাষায় পুরো বিষয়টি তুলে ধরছি, যাতে আপনি নতুন নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্মতারিখ, ছবি, ভোটার ঠিকানা ও পেশা আপাতত পরিবর্তন গ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে আবেদন করলেও কার্যকর হবে না। অন্যদিকে কিছু তথ্য এখনো নির্দিষ্ট শর্তে পরিবর্তন করা যাবে।
Content Summary
কেন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করা যাবে না
এই নতুন নিয়মের প্রধান কারণ নির্বাচন সম্পর্কিত তথ্য যাচাই। আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে সকল তথ্য যাচাই না করে পরিবর্তন করলে ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এছাড়া নিচের বিষয়গুলোও সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভূমিকা রেখেছে।
- একই ব্যক্তির একাধিক পরিচয় পরিবর্তনের ঝুঁকি
- অতিরিক্ত ভুয়া আবেদন জমা হওয়া
- তথ্য যাচাইয়ের বড়সড় চাপ
- একাধিক পরিবর্তনে ডুপ্লিকেট রেকর্ড তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা
- ভোটার এলাকার সঠিক শনাক্তকরণ সমস্যা
ফলে নির্বাচন কমিশন আপাতত কেবল যাচাইকৃত তথ্য পরিবর্তনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বিশেষ করে নাম, জন্মতারিখ ও ঠিকানা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় যাচাইয়ের উৎস, তাই এগুলো পরিবর্তন করতে পারলে ভোট রেকর্ড ও জায়গা পরিবর্তনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ডিসেম্বর ২০২৫ এ ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারের নতুন দাম জানুন
জাতীয় পরিচয়পত্রের যে ৭টি তথ্য সংশোধন করা যাবে না
বর্তমান নিয়মে সবচেয়ে আলোচিত অংশ হলো কোন তথ্যগুলো পরিবর্তন করা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী নিচের সাতটি তথ্য আপাতত সংশোধনযোগ্য নয়।
১. নাম
নাম পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত করে। ভুল নাম থাকলে প্রমাণ থাকলেও এখনই পরিবর্তন করা যাবে না।
২. বাবার নাম
পরিচয়, ঠিকানা ও পরিবার শনাক্তে বাবার নাম গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স।
৩. মায়ের নাম
মায়ের নামও পরিচয় যাচাইয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
৪. পেশা
বর্তমানে পেশা স্থায়ী তথ্য হিসেবে বিবেচিত, যা যাচাই না করে পরিবর্তনযোগ্য নয়।
৫. জন্মতারিখ
নির্বাচন কমিশন বলেছে জন্মতারিখ সংশোধন যাচাইবান্ধব হওয়ায় ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
৬. ভোটার ঠিকানা
ভোটার তালিকা নির্বাচন পরিচালনার মূল কাঠামো, তাই ঠিকানা পরিবর্তন আপাতত স্থগিত।
৭. ছবি
ছবি বায়োমেট্রিক মুখ যাচাইয়ের প্রধান উপাদান, তাই পরিবর্তন করা যাবে না।
এই সাতটি ক্ষেত্রে আবেদন করলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত দিলে তখন পরিবর্তনের সুযোগ আসতে পারে।
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করার নিয়ম
বর্তমানে যেসব তথ্য পরিবর্তন করা যাবে, সেগুলোর জন্য অনলাইনে নির্দিষ্ট আবেদন প্রক্রিয়া আছে। সেই নিয়মটি সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো।
ধাপ ১: NID সেবাসাইটে লগইন
www.nidw.gov.bd খুলে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করুন।
ধাপ ২: Correction Option নির্বাচন
“Information Correction” অপশনে যেতে হবে।
ধাপ ৩: পরিবর্তনযোগ্য অপশন নির্বাচন
যে তথ্য সংশোধন করা যাবে সেগুলোর মধ্য থেকে নির্বাচন করতে হবে।
ধাপ ৪: প্রমাণপত্র আপলোড
সাধারণত নিচের ডকুমেন্ট লাগে:
- বিবাহ সনদ
- SSC/পাসপোর্ট কপি
- মেডিকেল বা প্রতিবন্ধী সনদ
- শিক্ষাগত সার্টিফিকেট
- মোবাইল ভেরিফিকেশন
ধাপ ৫: ফি পরিশোধ
প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি ফি পরিশোধ করতে হবে।
ধাপ ৬: যাচাই প্রক্রিয়া
তথ্য যাচাই শেষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
যেসব তথ্য পরিবর্তন করা যাবে তা হলো:
- স্বামী বা স্ত্রীর নাম
- বৈবাহিক অবস্থা
- ধর্ম
- শিক্ষাগত যোগ্যতা
- মোবাইল নম্বর
- প্রতিবন্ধকতার ধরণ
আরও পড়ুনঃ মোবাইলে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
FAQs –
যেসব তথ্য পরিবর্তনযোগ্য সেগুলো করা যাবে। তবে ৭টি তথ্য সংশোধন আপাতত বন্ধ।
এখন আবেদন করলেও কার্যকর হবে না। ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কারণ এটি ভোটার এলাকার যোগসূত্র যাচাইয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
লগইন করে শিক্ষা/যোগাযোগ তথ্য বিভাগ থেকে মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করা যাবে।
নতুন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ছবি পরিবর্তন সম্ভব নয়।
উপসংহার
জাতীয় পরিচয়পত্রের যে ৭টি তথ্য সংশোধন করা যাবে না – এই নিয়মটি নাগরিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন থেকে তথ্য পরিবর্তনে সীমাবদ্ধতা থাকলেও কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
নতুন নিয়ম ভালোভাবে বুঝে সঠিক প্রমাণপত্র জমা দিলে সংশোধন সহজ হয়। ভবিষ্যতে ভুল নাম, জন্মতারিখ বা ঠিকানা পরিবর্তনের নতুন সিদ্ধান্ত এলে আবেদনকারীরা সেই সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুনঃ পাসওয়ার্ড ছাড়া ওয়াইফাই কানেক্ট করার নিয়ম
নিয়মিত আপনার মোবাইলে টেক নিউজ আপডেট পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


