বিদেশ ভ্রমণ, চাকরি বা পড়াশোনার মতো প্রয়োজনীয় কাজে বৈধ পাসপোর্ট থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রিনিউ করা সঠিক সিদ্ধান্ত। অনেকেই ভাবেন পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম জটিল, কিন্তু আসলে পুরো প্রক্রিয়াটি এখন বেশ সহজ এবং সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক।
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালুর পর আবেদন, ফি পরিশোধ থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত সব কিছু আরও দ্রুত হয়েছে। এই গাইডে পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সময়, ফি, আবেদন পদ্ধতি এবং ফরম সম্পর্কে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
যাঁরা দেশে আছেন বা বিদেশে অবস্থান করছেন, উভয় ক্ষেত্রেই কীভাবে রিনিউ করতে হবে সেটিও বিস্তারিত পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, নতুন প্রক্রিয়ায় কী পরিবর্তন এসেছে, আবেদন জমা দিতে কী কী লাগবে এবং কত দিনে নতুন পাসপোর্ট পাওয়া যাবে—সবকিছু সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যদি আপনি প্রথমবার রিনিউ করতে চান বা পুরোনো পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে এই নিবন্ধটি আপনাকে পুরো প্রক্রিয়ার একটি পরিষ্কার ধারণা দেবে। চলুন শুরু করা যাক পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
Content Summary
পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যেসব ডকুমেন্ট লাগে:
– অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র এবং সামারি পেজের প্রিন্ট কপি
– বিদ্যমান পাসপোর্টের প্রথম পৃষ্ঠার ফটোকপি
– জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC ইংরেজি সংস্করণ হলে ভালো)
– অপ্রাপ্তবয়স্ক আবেদনকারীর ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের রঙিন ছবি এবং তাদের পরিচয়পত্রের কপি
– বিদেশে থাকলে বৈধ ভিসা কপি বা ওয়ার্ক পারমিটের স্ক্যান কপি
– পাসপোর্ট হারালে পুলিশের জিডি কপি
এসব কাগজপত্র প্রস্তুত থাকলে আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়ে যায়।
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৫
২০২৫ সালের আপডেট অনুযায়ী, পাসপোর্ট রিনিউ করতে ই-পাসপোর্ট পোর্টাল ব্যবহার করতে হবে।
১. www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
২. Apply for e-Passport অপশন বেছে নিন
৩. আপনার নিকটস্থ এনরোলমেন্ট সেন্টার নির্বাচন করুন
৪. জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন
৫. সিস্টেম থেকে সামারি পেজ ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিন
৬. অনলাইনে বা নির্দিষ্ট ব্যাংকে ফি প্রদান করুন
৭. নির্ধারিত তারিখে বায়োমেট্রিকের জন্য হাজির হন
৮. জমাদানের সময় পুরোনো পাসপোর্ট দেখাতে হবে
২০২৫-এ প্রক্রিয়াটি আগের তুলনায় দ্রুত এবং আরও স্বচ্ছ হয়েছে।
পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি কত টাকা?
ফি নির্ভর করে ডেলিভারি টাইম এবং পাসপোর্টের পাতার সংখ্যার উপর। সাধারণত:
– রেগুলার: মাঝারি ফি, সময় ১৫–২১ দিন
– এক্সপ্রেস: দ্রুত সেবা, সময় ৭–১০ দিন
– সুপার এক্সপ্রেস: সবচেয়ে দ্রুত, সময় ২–৫ দিন
বিদেশে অবস্থানকারীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে জমা দিতে হয় এবং অনেক দেশে কেবল নগদ অর্থে পেমেন্ট গ্রহণ করা হয়।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে
রিনিউ আবেদন করতে যেসব জিনিস অবশ্যই লাগবেঃ
- পুরোনো পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা BRC
- অনলাইনে পূরণ করা ফরম
- নির্ধারিত ফি
- বায়োমেট্রিক উপস্থিতি
যদি কোনো তথ্য ভুল থাকে বা সংশোধন প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে প্রমাণপত্র যেমন জন্ম সনদ বা এনআইডি আপডেট কপি প্রয়োজন হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক মালয়েশিয়া, কুয়েত ওমান
পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম
রিনিউ করার জন্য আলাদা কোনো ফরম নেই। ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে থাকা সাধারণ আবেদন ফরমই পূরণ করতে হয়।
ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য, পাসপোর্ট নম্বর, ঠিকানা, কন্টাক্ট নম্বর এবং এনরোলমেন্ট সেন্টার নির্বাচন করতে হয়।
ফরম পূরণের সময় এনআইডির তথ্য যেন হুবহু মিলে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য মিল না থাকলে আবেদন বাতিল হতে পারে বা অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত দিন লাগে
সময় নির্ভর করে আপনি কোন সার্ভিস বেছে নিচ্ছেন তার উপর।
- রেগুলার: প্রায় ১৫ থেকে ২১ দিন
- এক্সপ্রেস: ৭ থেকে ১০ দিন
- সুপার এক্সপ্রেস: ২ থেকে ৫ দিন
বিদেশে থাকলে ডেলিভারি টাইম কিছুটা বেশি হতে পারে।
হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়া বেশি হওয়ায় সময় আরও বাড়তে পারে।
আরও পড়ুনঃ ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সম্পূর্ণ গাইড
প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
হ্যাঁ। রিনিউ করার পর পুরোনো পাসপোর্ট বাতিল হয় এবং নতুন একটি ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেকোনো সময় আবেদন করা যায়। শেষ হওয়ার আগেই রিনিউ করা ভালো।
সম্ভব নয়। আগে এনআইডির তথ্য সংশোধন করে তারপর আবেদন করতে হবে।
হ্যাঁ যায়। তবে জিডির কপি জমা দিতে হয় এবং যাচাই প্রক্রিয়া বেশি সময় নেয়।
সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে অনলাইনে আবেদন করে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। ফি সাধারণত নগদে নেওয়া হয়।
উপসংহার
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। অনলাইনে আবেদন, ফি পরিশোধ এবং নির্ধারিত সময়ে বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করলেই নতুন পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
যাঁরা বিদেশে বা দেশে আছেন, সবাই একই প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারেন।
প্রয়োজন শুধু নির্ভুল তথ্য এবং সঠিক কাগজপত্র। সময়মতো রিনিউ করলে যাতায়াত বা চাকরি সংক্রান্ত কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় না।
তাই যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন, তাঁদের জন্য ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট একটি ভালো সিদ্ধান্ত, পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম জেনে কাজ করুন।
টেক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


