বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে, এই উদ্যোগের ফলে অনেক প্রতিবন্ধী বিশেষ সুবিধা পাবে। প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম এখন অনেক সহজ এবং ঝামেলামুক্ত। আগে যেখানে দপ্তরে দৌঁড়াতে হতো, এখন আপনি ঘরে বসেই মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম জানলে আপনি বুঝতে পারবেন, কিভাবে সঠিকভাবে আবেদন করতে হবে, কী কী যোগ্যতা দরকার, আর কোন নথিগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে। এই ভাতা প্রতিবন্ধী নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা দেয়, যাতে তারা কিছুটা স্বাবলম্বী হতে পারেন।
আজকের এই লেখায় আমরা ধাপে ধাপে জানব প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় শর্তাবলী, যোগ্যতা, এবং আবেদন চেক করার পদ্ধতি। সব তথ্য একসাথে পেয়ে আপনি খুব সহজেই নিজের আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।
Content Summary
- 1 প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ কীভাবে করবেন?
- 1.1 প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার যোগ্যতা কি?
- 1.2 প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- 1.3 প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা দেয়া হয়?
- 1.4 প্রতিবন্ধী ভাতা কবে দিবে 2025
- 1.5 প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন চেক করবেন কিভাবে?
- 1.6 প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন শেষ তারিখ
- 1.7 প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত কিছু সাধারণ প্রশ্ন
- 1.8 শেষ কথা
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ কীভাবে করবেন?

প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম খুবই সহজ, যদি আপনি ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করেন। প্রথমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট mis.bhata.gov.bd/onlineApplication এ প্রবেশ করুন।
এরপর “প্রতিবন্ধী ভাতা” অপশনটি নির্বাচন করুন। আবেদন ফর্মে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্মতারিখ দিন। “যাচাই করুন” বাটনে ক্লিক করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার তথ্য দেখা যাবে। এরপর কিছু অতিরিক্ত তথ্য যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, পারিবারিক অবস্থা ও বার্ষিক আয় ইত্যাদি পূরণ করতে হবে।
সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর যাচাই করে “সংরক্ষণ” বাটনে চাপ দিন। মনে রাখবেন, একবার জমা দেওয়ার পর আবেদন ফর্ম পরিবর্তন করা যাবে না।
সবশেষে ফর্মটি প্রিন্ট করে বা পিডিএফ আকারে সংরক্ষণ করে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরসহ সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার যোগ্যতা কি?
মনে রাখবেন প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে কিছু শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক, যেমন
- আবেদনকারীর ন্যূনতম বয়স ৬ বছর হতে হবে।
- সমাজসেবা কার্যালয় থেকে নিবন্ধন করা ও সুবর্ণ কার্ড থাকা প্রয়োজন।
- বার্ষিক আয় সরকারের নির্ধারিত সীমার নিচে থাকতে হবে।
- শুধুমাত্র আর্থিকভাবে অসচ্ছল প্রতিবন্ধীরাই এই ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা পৌর মেয়রের সুপারিশ থাকা আবশ্যক।
প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে আবেদন করার আগে কিছু নথি প্রস্তুত রাখতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (বয়স অনুযায়ী)।
- সমাজসেবা অফিসের প্রদত্ত সুবর্ণ নাগরিক কার্ড বা প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র।
- নিজ নামে বিকাশ বা নগদ একাউন্টসহ সচল মোবাইল নম্বর।
- স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সুপারিশপত্র।
সব কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আর কোনো ঝামেলা হবে না।
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা দেয়া হয়?

বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা। প্রতি তিন মাস অন্তর অর্থাৎ একত্রে ২৫৫০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে পাঠানো হয়। সরকার প্রতিবন্ধী নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা বাড়াতে প্রয়োজনে এই পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইনে আবেদন করার সময় যা খেয়াল রাখবেন
অনলাইনে আবেদন করার সময় দেওয়া সব তথ্য অবশ্যই সত্য হতে হবে। ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আইনি জটিলতাও তৈরি হতে পারে। আবেদন জমা দেওয়ার পর অবশ্যই ফর্মটি ডাউনলোড করে নিজের কাছে রাখুন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কবে দিবে 2025
২০২৫ সালে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান কার্যক্রম আগের মতোই চলবে। সাধারণত প্রতি তিন মাস পর পর অর্থ প্রদান করা হয়, অর্থাৎ মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বিকাশ বা নগদ একাউন্টে টাকা পাঠানো হয়।
সরকার প্রতিবন্ধীদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ভাতার সময়মতো প্রদানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তাই যদি আপনি অনুমোদিত আবেদনকারী হন, ২০২৫ সালের নির্ধারিত তারিখগুলোতে আপনার মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা পৌঁছে যাবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন চেক করবেন কিভাবে?
অনেকেই আবেদন করার পর জানতে চান, আবেদনটি অনুমোদিত হয়েছে কি না। এটি অনলাইনে চেক করা খুব সহজ।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে “Application Status” বা “আবেদনের অবস্থা” অপশনটি নির্বাচন করুন। সেখানে আপনার এনআইডি নম্বর ও জন্মতারিখ দিলে আবেদনটির সর্বশেষ অবস্থা দেখা যাবে।
এই সিস্টেমের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আবেদনটি গৃহীত, যাচাইাধীন নাকি অনুমোদিত হয়েছে। ফলে অফিসে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার ঝামেলা একেবারেই কমে গেছে।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন শেষ তারিখ
প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন সারা বছর খোলা থাকে না। সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন গ্রহণ করা হয়, যা সমাজসেবা অধিদপ্তর ঘোষণা করে। তাই নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে নজর রাখুন।
যে তারিখে আবেদন শুরু হবে, সেদিন থেকেই দ্রুত অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করে ফেলুন। কারণ দেরি করলে সেই বছরের জন্য আবেদন বাতিল হতে পারে এবং পরবর্তী চক্র পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত কিছু সাধারণ প্রশ্ন
বর্তমানে মাসিক ৮৫০ টাকা এবং তিন মাস অন্তর একসাথে ২৫৫০ টাকা প্রদান করা হয়।
হ্যাঁ, এটি অবশ্যই প্রয়োজনীয়। সুবর্ণ কার্ড ছাড়া আবেদন গ্রহণ করা হয় না।
অনুমোদনের পর মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো হয়।
যাচাই-বাছাই শেষে সাধারণত এক থেকে দুই মাসের মধ্যে টাকা পাওয়া যায়।
না, যদি কেউ অন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি অনুদান পান, তবে তিনি এই ভাতা পাবেন না।
শেষ কথা
সরকার প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জীবনের মান উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ভাতার মতো উদ্যোগ চালু করেছে। এখন ঘরে বসেই প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম অনুসরণ করে আবেদন করা যায়, কোনো দালাল বা অফিসে ঘোরাঘুরি ছাড়াই।
তাই আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি এই ভাতার উপযুক্ত হন, আজই অনলাইনে আবেদন করে ফেলুন।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।