বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি চালু করেছে। বর্তমানে এই ভাতা সরাসরি অনলাইনে আবেদন করা যায় এবং যাচাই শেষে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়।
নিচে ধাপে ধাপে জানানো হলো প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত সব তথ্য, যোগ্যতা, আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
Content Summary
প্রতিবন্ধী ভাতা কি?
প্রতিবন্ধী ভাতা হলো সরকারের একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি, যা শারীরিক, মানসিক বা বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য চালু করা হয়েছে। এই ভাতা তাদের জীবনযাত্রা সহজ করতে ও মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।
বর্তমানে নিবন্ধিত প্রতিবন্ধীরা যাচাই শেষে তাদের মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে নিয়মিত এই ভাতা পান।
প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদনের যোগ্যতা
প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকা জরুরি।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২০১৩ সালের নীতিমালা অনুযায়ী শর্তগুলো হলো:
- আবেদনকারীকে সমাজসেবা কার্যালয়ে নিবন্ধিত প্রতিবন্ধী হতে হবে এবং প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র বা সুবর্ণ কার্ড থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ৬ বছর হতে হবে।
- আবেদনকারীকে তার স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ে নিবন্ধিত হতে হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বার্ষিক আয় নীতিমালার নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকতে হবে।
- কেবলমাত্র আর্থিকভাবে অসচ্ছল বা গরিব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- আবেদনকারীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়রের সুপারিশ থাকতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা কি?
যেসব কারণে আবেদন বাতিল হতে পারে:
- সরকারি চাকরিজীবী বা পেনশনভোগী হলে।
- অন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা পেলে।
- পূর্বে সরকারি অনুদান বা সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেয়ে থাকলে।
প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জাতীয় পরিচয়পত্র (১৮ বছর বা তার বেশি বয়স হলে)।
- জন্ম নিবন্ধন সনদ (১৮ বছরের নিচে হলে)।
- সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত সুবর্ণ কার্ড বা প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র।
- নিজ নামে বিকাশ বা নগদ একাউন্ট সহ মোবাইল নম্বর।
- স্থানীয় চেয়ারম্যান/কাউন্সিলরের সুপারিশপত্র।
- অনলাইন আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি।
আরও পড়ুনঃ বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
2025 সালে প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে আবেদন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে যান: mis.bhata.gov.bd/onlineApplication
- “প্রতিবন্ধী ভাতা” অপশনটি নির্বাচন করুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্মতারিখ দিন, তারপর “যাচাই করুন” ক্লিক করুন।
- স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু তথ্য পূরণ হবে, বাকি তথ্য সঠিকভাবে নিজে পূরণ করুন।
- প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করে ফর্মটি সংরক্ষণ করুন ও সাবমিট দিন।
- জমা দেওয়ার পর আবেদন ফর্মটি প্রিন্ট বা PDF আকারে সংরক্ষণ করুন এবং ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার স্বাক্ষরসহ সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিন।
আরও পড়ুনঃ নগদ বিকাশ ছাড়াও নেওয়া যাবে ভাতা | সরকারি ভাতা পাওয়ার নতুন নিয়ম
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রতিমাসে কত টাকা দেয়া হয়
বর্তমানে সরকার প্রতিবন্ধীদের প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা ভাতা প্রদান করে। এই টাকা প্রতি তিন মাস পর পর মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে (বিকাশ বা নগদ) পাঠানো হয়।
অর্থাৎ প্রতি তিন মাসে মোট ২,৫৫০ টাকা ভাতা প্রদান করা হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদনের শর্তাবলী
- আবেদনকারীর তথ্য অবশ্যই সত্য হতে হবে।
- একবার আবেদন জমা দিলে তা পরিবর্তন করা যায় না, তাই সাবধানতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে।
- আবেদন যাচাই শেষে সমাজসেবা অফিসের অনুমোদনের পরেই ভাতা প্রদান করা হবে।
ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে যারা অগ্রাধিকার লাভ করবেন
- বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
- নারী প্রতিবন্ধী
- ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতিবন্ধী
- প্রবীণ বা বয়স্ক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
আরও পড়ুনঃ টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড করতে কি কি লাগে সম্পূর্ণ ও সহজ গাইড
প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্ন
প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা, অর্থাৎ তিন মাসে ২,৫৫০ টাকা প্রদান করা হয়।
হ্যাঁ, সুবর্ণ কার্ড বা প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র ছাড়া এই ভাতা পাওয়া যায় না।
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে। তাই আপনার স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ে যোগাযোগ রাখুন।
উপসংহার
“প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন” এখন সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা যায়। যারা সরকার ঘোষিত শর্ত পূরণ করেন, তারা সহজেই ঘরে বসে আবেদন করতে পারেন এবং ভাতা পেতে পারেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল সাইট থেকে নিয়মিত আপডেট দেখে আবেদন করলে ভুলের সুযোগ থাকবে না।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


