বিদেশে কাজ করতে গিয়ে নানা কারণে অনেক প্রবাসীকেই নিঃস্ব অবস্থায় দেশে ফিরতে হয়। কর্মহীনতা, ঋণের চাপ আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাদের জীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতি থেকে প্রবাস ফেরত কর্মীদের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করতেই সরকার চালু করেছে রেইজ প্রকল্প।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে হাজারো প্রবাসীর জীবনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।
২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত দুই লক্ষাধিক প্রবাস ফেরত কর্মী নিবন্ধন করেছেন এবং প্রণোদনা হিসেবে শত শত কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ, কাউন্সেলিং ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
Content Summary
রেইজ প্রকল্প কি
রেইজ প্রকল্প হলো ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের একটি বিশেষ কর্মসূচি, যার পূর্ণ নাম Reintegration and Advancement for International Migrants (RAISE)। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো বিদেশ থেকে ফিরে আসা অভিবাসী কর্মীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করা। নিবন্ধনের পর প্রবাস ফেরতদের ওরিয়েন্টেশন, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং, প্রশিক্ষণ এবং এককালীন আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়, যাতে তারা দেশে নতুন করে কাজ বা ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
কারা রেইজ প্রকল্প থেকে সেবা নিতে পারবেন
রেইজ প্রকল্প থেকে মূলত তারা সেবা নিতে পারবেন—
- যারা ২০১৫ সালের পর বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন
- যারা বৈধভাবে বিদেশে কাজ করেছেন
- যারা বর্তমানে কর্মহীন বা আর্থিক সংকটে আছেন
- নারী ও নির্যাতনের শিকার প্রবাসীদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়
দেশের ৩৫টি প্রবাসী কল্যাণ সেন্টারের মাধ্যমে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ BTCL সিম ও টেলিটক সিমের মধ্যে পার্থক্য কী: কোনটি আপনার জন্য উপযোগী
রেইজ প্রকল্পে যুক্ত হতে প্রবাসীদের কি করতে হবে
রেইজ প্রকল্পে যুক্ত হতে প্রবাস ফেরতদের প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের সময় সাধারণত যেসব কাগজ লাগে—
- পাসপোর্ট
- বিদেশে কাজের প্রমাণপত্র
- ফেরত আসার টিকিট বা প্রমাণ
- জাতীয় পরিচয়পত্র
নিবন্ধনের পর সংশ্লিষ্ট প্রবাসী কল্যাণ সেন্টার থেকে প্রার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ও কাউন্সেলিং সেশনে ডাকা হয়।
কিভাবে রেইজ প্রকল্প থেকে প্রবাসীরা সুবিধা পাবেন
নিবন্ধন ও যাচাই শেষে প্রবাসীরা ধাপে ধাপে বিভিন্ন সুবিধা পান। এর মধ্যে রয়েছে—
- মনোসামাজিক ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং
- প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষতা প্রশিক্ষণ
- ক্ষুদ্র ব্যবসা বা উদ্যোক্তা শুরু করার জন্য এককালীন প্রণোদনা
- সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ
অনেকে এই সহায়তায় দোকান, পার্লার, ফার্মেসি বা অন্যান্য ছোট ব্যবসা শুরু করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা: প্রতি পণ্যে আয়, হিসাব ও বাস্তব চিত্র
বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের ভাতা দেয়া হয় কি এই প্রকল্পে
রেইজ প্রকল্পে নিয়মিত মাসিক ভাতা দেওয়া হয় না। তবে যোগ্য প্রবাস ফেরতদের এককালীন আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়, যা তাদের পুনর্বাসন ও আয়ের উৎস তৈরিতে সহায়তা করে। এই প্রণোদনার পরিমাণ পরিস্থিতি ও পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়।
প্রবাস ফেরতদের জন্য রেইজ প্রকল্প কেন গুরুত্বপূর্ণ
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবাস ফেরতরা শুধু আর্থিক সহায়তাই পাচ্ছেন না, বরং পাচ্ছেন আত্মবিশ্বাস ও নতুন করে জীবন শুরু করার সুযোগ। সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়ায় প্রকল্পটি তুলনামূলক নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য।
আরও পড়ুনঃ নগদ পেল বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন: এমএফএস আন্তঃলেনদেনে বড় পরিবর্তন
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ সেন্টারের মাধ্যমে সরাসরি নিবন্ধন করা হয়।
পরিমাণ নির্ভর করে প্রবাসীর পরিকল্পনা ও পরিস্থিতির ওপর।
হ্যাঁ, নারী ও নির্যাতনের শিকার প্রবাসীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
সুবিধা পেতে প্রশিক্ষণ ও কাউন্সেলিং গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
হ্যাঁ, দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে পুনরায় বিদেশ যাওয়ার সুযোগ তৈরি করা হয়।
উপসংহার
রেইজ প্রকল্প প্রবাস ফেরত কর্মীদের জন্য একটি বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী উদ্যোগ।
সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ও দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেলে এই প্রকল্প আরও বেশি মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে।
বিদেশ থেকে ফিরে হতাশ না হয়ে নতুনভাবে শুরু করার সুযোগ দিচ্ছে এই প্রকল্প।
আরও পড়ুনঃ সহিংস পোস্ট দেখলে সরাসরি রিপোর্ট করুন, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিল সরকার
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


