বর্তমানে একজন ব্যক্তির নামে একাধিক মোবাইল সিম নিবন্ধিত থাকা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে, সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।
এর বেশি সিম থাকলে সেগুলো অবৈধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তাই অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত সিম বন্ধ করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই লেখায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে সিম বন্ধ করার নিয়ম, কেন সিম বন্ধ করা জরুরি, অনলাইনে সিম বন্ধ করা যায় কি না এবং জিপি, রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক ও টেলিটক সিম বন্ধ করার পদ্ধতি।
সিম বন্ধ করা কেন জরুরী?
সিম বন্ধ করা জরুরি হওয়ার পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। একজন ব্যবহারকারীর নামে অতিরিক্ত সিম থাকলে সেগুলো অপরাধমূলক কাজে ব্যবহারের ঝুঁকি থাকে। এতে করে ব্যবহারকারী অজান্তেই আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন।
এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং মোবাইল অপারেটরদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিটিআরসি এই সীমা নির্ধারণ করেছে।
নির্ধারিত সংখ্যার বেশি সিম থাকলে যেকোনো সময় সেগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সিম বন্ধ করার নিয়ম?
সিম বন্ধ করাকে ডি-রেজিস্ট্রেশন বলা হয়। অর্থাৎ, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে যে সিমটি নিবন্ধিত হয়েছে, সেটি আর আপনার নামে থাকবে না।
এখন আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনুসারে আপনি পছন্দমত সিম আপনার নামে রাখতে পারেন এবং ডি রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।
সিম বন্ধ করার প্রধান দুটি উপায় রয়েছে।
- প্রথমত, সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের হেল্পলাইনে কল করে।
- দ্বিতীয়ত, নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে সরাসরি গিয়ে।
হেল্পলাইনে কল করলে আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ কিছু তথ্য যাচাই করতে বলা হবে।
যাচাই সম্পন্ন হলে অপারেটর আপনার অনুরোধ অনুযায়ী সিমটি বন্ধ করে দেবে।
কাস্টমার কেয়ারে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে উপস্থিত হতে হবে এবং বায়োমেট্রিক যাচাই সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ একটি এনআইডিতে কতটি সিম কার্ড থাকবে | ১ জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম
অনলাইনে সিম বন্ধ করা যায় কি?

বর্তমানে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অনলাইনে সিম বন্ধ করার সুযোগ নেই। তবে আপনি চাইলে আপনার নামে কতটি সিম রয়েছে যাচাই করা ও সাময়িকভাবে সিম বন্ধ করতে পারেন।
একটি সিম নাম থেকে পুরোপুরি ডি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রয়োজন।
এজন্য আপনাকে টেলিকম অপারেটর নির্ধারিত আপনার নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার অথবা সার্ভিস সেন্টার গুলিতে যেতে হবে।
এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে আপনি আপনার নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানতে পারবেন।
এর জন্য মোবাইল থেকে নির্দিষ্ট একটি ইউএসএসডি কোড ডায়াল করলে ফিরতি মেসেজে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধিত সব সিম নম্বর দেখানো হয়।
যদি তালিকায় এমন কোনো নম্বর থাকে যা আপনি ব্যবহার করছেন না বা আপনার নয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটি বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপ কি? ফিচার, সুবিধা
জিপি সিম বন্ধ করার নিয়ম
গ্রামীণফোন সিম বন্ধ করতে গ্রাহককে গ্রামীণফোনের হেল্পলাইনে ১২১ নাম্বারে কল করতে হবে অথবা নিকটস্থ গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ও বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে সিম ডি-রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
রবি সিম বন্ধ করার নিয়ম
রবি সিম বন্ধ করার জন্য রবি হেল্পলাইন ১২১ নম্বরে যোগাযোগ করা যায় অথবা রবি কাস্টমার কেয়ার বা রবি শপে সরাসরি গিয়ে আবেদন করা যায়। যাচাই শেষে অপারেটর সিম বন্ধ করে দেয়।
এয়ারটেল সিম বন্ধ করার নিয়ম
এয়ারটেল সিম বন্ধ করতে এয়ারটেল হেল্পলাইন নম্বর ১২১ এ কল করতে হবে অথবা নিকটস্থ এয়ারটেল কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত হতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক যাচাই সম্পন্ন হলে সিম ডি-রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
বাংলালিংক সিম বন্ধ করার নিয়ম
বাংলালিংক সিম বন্ধ করতে বাংলালিংক হেল্পলাইনে ১২১ এ কল করা যায় অথবা কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়। পরিচয় যাচাই সম্পন্ন হলে সিম বন্ধ করা হয়।
টেলিটক সিম বন্ধ করার নিয়ম
টেলিটক সিম বন্ধ করতে টেলিটক হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে হবে অথবা নিকটস্থ টেলিটক কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে আবেদন করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় সিম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্ধ না করলে ব্যবহারকারী আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন।
ভবিষ্যতে নতুন সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। তাই নিজ দায়িত্বে সিম যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুনঃ AI প্রযুক্তির বাংলালিংক রাইজ সিম কিভাবে ফ্রি পাবেন?
Frequently Asked Questions (FAQs)
নির্দিষ্ট ইউএসএসডি কোড *১৬০০১# ডায়াল করলে ফিরতি মেসেজে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র শেষ ৪ সংখ্যা দিয়ে নিবন্ধিত সব সিম নম্বর জানা যায়।
সাধারণত সিম ডি-রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোনো ফি নেওয়া হয় না।
না। সিম বন্ধ করতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক যাচাই বাধ্যতামূলক।
অপারেটরের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সমাধান জানানো হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্ধ করা সিম পুনরায় চালু করা যায় না।
উপসংহার
সিম বন্ধ করার নিয়ম জানা এবং অপ্রয়োজনীয় সিম ডি-রেজিস্ট্রেশন করা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনি ঝুঁকি থেকেও রক্ষা করে।
তাই আজই আপনার নামে নিবন্ধিত সিম যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ ব্যবসা নিবন্ধনে স্বস্তি: সরকারি অফিসের হয়রানি বন্ধ
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদেরফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


