বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এবং সেই সঙ্গে সিম নিবন্ধনের নিয়মও কড়া হয়েছে। আপনার অজান্তে কেউ যদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশন করে ফেলে, তা ভবিষ্যতে বড় ঝামেলায় ফেলতে পারে।
তাই নিজের নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে তা জানা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পোস্টে আমরা দেখব কিভাবে সহজে জানবেন আপনার নামে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে, সিম রেজিস্ট্রেশন ও বাতিলের নিয়মসহ সব বিস্তারিত।
Content Summary
আপনার নামে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে জানবেন যেভাবে
নিজের নামে কয়টি সিম নিবন্ধিত আছে তা জানা খুব সহজ। শুধু আপনার ফোন থেকেই নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- মোবাইলের ডায়াল মেনুতে যান।
- *16001# ডায়াল করুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা লিখে সেন্ড করুন।
- কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরতি এসএমএসে আপনি জানতে পারবেন— আপনার নামে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে এবং কোন কোন অপারেটরের।
তবে পুরো মোবাইল নম্বর দেখা যাবে না; শুধু প্রথম ও শেষ তিন ডিজিট দেখানো হবে নিরাপত্তার কারণে।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল নিয়ম ২০২৫
যদি দেখেন আপনার নামে এমন কোনো সিম নিবন্ধিত আছে যা আপনি ব্যবহার করেন না, তাহলে সেটি দ্রুত বাতিল করা উচিত।
মোবাইল সিম কার্ডের নিবন্ধন বাতিল করতে প্রথমে সিমটির অপারেটরের হেল্পলাইনে ১২১ এ কল করতে হবে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র/ স্মার্ট কার্ড /এনআইডি নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করার পর সিমটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সকল টেলিকম অপারেটর হেল্পলাইন নাম্বার হচ্ছে ১২১, আপনি যে টেলিকম অপারেটর সিম ব্যবহার করেন না কেন আপনি আপনার সিম থেকে ১২১ ডায়াল করুন।
এছাড়াও সরাসরি টেলিকম কোম্পানির অফিস বা সার্ভিস সেন্টার ভিজিট করে আপনার নামে থাকা অতিরিক্ত সিম গুলি বন্ধ করতে পারেন।
এজন্য—
- সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার অফিসে যান।
- নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিন।
- অপ্রয়োজনীয় সিম নম্বরগুলো বাতিলের জন্য আবেদন করুন।
অপারেটর আপনার পরিচয় যাচাই করে সেই সিমগুলো স্থায়ীভাবে বাতিল করবে। এতে আপনার তথ্য নিরাপদ থাকবে এবং ভবিষ্যতে কোনো অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকবে না।
অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বাতিল নিয়ম ২০২৫
বর্তমানে বেশ কয়েকটি অপারেটর অনলাইন বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিম বাতিলের আবেদন গ্রহণ করছে।
- সংশ্লিষ্ট অপারেটরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- “SIM Registration” বা “Customer Support” বিভাগে যান।
- ফরম পূরণ করে অপ্রয়োজনীয় সিম বাতিলের অনুরোধ করুন।
- এনআইডি যাচাই শেষে তারা সিম বাতিল নিশ্চিত করবে।
যদিও এখনো সব অপারেটর এই সুবিধা পুরোপুরি চালু করেনি, ভবিষ্যতে এটি আরও সহজ হবে বলে আশা করা যায়।
কেন এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ
অনেক সময় অপরাধীরা অন্যের নামে সিম ব্যবহার করে প্রতারণা, চাঁদাবাজি, বা আর্থিক জালিয়াতি করে। যদি আপনার অজান্তে এমন কিছু ঘটে, আইনগতভাবে আপনিই সমস্যায় পড়বেন।
তাই নিজের নামে কয়টি সিম নিবন্ধিত আছে তা জানা ও নিয়মিত যাচাই করা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান তথ্য (২০২৫ অনুযায়ী)
- বাংলাদেশের সকল অপারেটর মিলিয়ে মোট সক্রিয় সিম সংখ্যা: ১৮ কোটি ৬২ লাখ
- প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা: ৬ কোটি ৭৫ লাখ
- ৮০% গ্রাহকের নামে ৫টি বা তার কম সিম
- ১০টির বেশি সিম থাকা গ্রাহকদের তালিকা অপারেটরদের কাছে পাঠানো হচ্ছে যাচাইয়ের জন্য
সিম রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম ২০২৫
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অনুযায়ী, এখন প্রত্যেক মোবাইল ব্যবহারকারী সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিজের নামে নিবন্ধন করতে পারবেন। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ১৫টি। সিম নিবন্ধনের সময় নিম্নলিখিত তথ্যগুলো প্রয়োজন:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি)
- বৈধ মোবাইল নম্বর ও ছবি
নিবন্ধনের পর বিটিআরসি ও অপারেটরদের কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। এতে আপনার নামে থাকা প্রতিটি সিমের রেকর্ড নিরাপদ থাকে এবং অন্য কেউ সহজে আপনার তথ্য ব্যবহার করতে পারে না।
উপসংহার
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সিম সংখ্যা যাচাই করা এখন খুব সহজ। নিয়মিত চেক করুন, অপ্রয়োজনীয় সিম বাতিল করুন এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখুন। মনে রাখবেন, সচেতনতা মানে নিরাপত্তা।
টেক দুনিয়ার খবরা-খবর জানতে ভিজিট করুন ডিজিটাল টাচ ওয়েবসাইট এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


