সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম জানুন কোন ব্যাংক কত টাকা দিচ্ছে

বাংলাদেশে অনেকেই নানা আর্থিক সমস্যার কারণে সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম জানতে চান। কেউ ব্যবসা শুরু করতে চান, কেউ বাড়ি বানাতে বা শিক্ষা খরচ চালাতে চান। কিন্তু কোথা থেকে লোন পাওয়া যায়, কীভাবে আবেদন করতে হয়, কত কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়, এই প্রশ্নগুলো প্রায় সবার মাথায় ঘোরে।

বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি অনেক ব্যাংক ও এনজিও খুব সহজ শর্তে কিস্তিতে লোন দিচ্ছে। সেই সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আশা, ব্র্যাক, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি কম সুদে ঋণ নিতে পারেন।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানবো, সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, জনপ্রিয় কিছু ব্যাংক ও সংস্থার লোন পদ্ধতি এবং ক্ষুদ্র ঋণের নীতিমালা নিয়ে।

আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ইচ্ছুক!

ভিজিট করুন 👉

সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম কি ২০২৫?

বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহজ কিস্তিতে লোন দেয়। এসব লোন সাধারণত ব্যবসা, শিক্ষা, বাসস্থান নির্মাণ, চিকিৎসা বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নেওয়া যায়।

লোন নিতে হলে প্রথমে আপনাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা এনজিও অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে আবেদন ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কাগজপত্র যাচাই শেষে, ব্যাংক আপনার যোগ্যতা যাচাই করে নির্দিষ্ট পরিমাণ লোন অনুমোদন করে।

সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম 2025

আশা ব্যাংক থেকে সহজ কিস্তিতে লোন

আশা ব্যাংক বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় এনজিও প্রতিষ্ঠান, যা দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের সহায়তায় কাজ করে।

মূলত আশা তিন ধরনের লোন প্রদান করে:

  1. আশা প্রাথমিক লোন: যারা ছোট অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন মনে করেন, তারা এই লোন নিতে পারেন। ৫,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে লোন দেওয়া হয়। সুদের হার প্রায় ১৪% এর নিচে, কখনো বিশেষ ক্ষেত্রে ০% পর্যন্ত হতে পারে।
  2. আশা বিশেষ লোন: এক লক্ষ টাকার বেশি প্রয়োজন হলে এই লোন দেওয়া হয়। আবেদনকারীকে নিকটস্থ আশা অফিসে সরাসরি যেতে হয়।
  3. আশা MSME লোন: যারা ব্যবসা পরিচালনার জন্য বড় অঙ্কের অর্থ চান, তারা এই লোন নিতে পারেন। এই লোনের মেয়াদ ও সুবিধা অন্যান্য লোনের তুলনায় বেশি।

আশা লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • আবেদন ফরম
  • জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্ম নিবন্ধন / পাসপোর্ট
  • আয়ের প্রমাণপত্র
  • ঠিকানার প্রমাণ
  • ২ কপি ছবি

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সুদবিহীন লোন বা ক্বারজে হাসানা সেবা প্রদান করে থাকে। এখানে লোনকে “হিসাব অংশীদারি ভিত্তিক অর্থায়ন” বলা হয়। অর্থাৎ, ব্যাংক ও গ্রাহক উভয়ে লাভ-ক্ষতির অংশীদার হন।

লোন নিতে হলে আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট মুদারাবা বা মুশারাকা প্রকল্পে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের আয়, ব্যবসার প্রকৃতি ও নৈতিক অবস্থান যাচাইয়ের পর ব্যাংক অনুমোদন দেয়।

প্রয়োজনে জামানত বা গ্যারান্টর লাগতে পারে।

সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

সরকারি মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক সাধারণ জনগণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে। এখানে শিক্ষা ঋণ, কৃষি ঋণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা লোন, বাসা নির্মাণ ঋণসহ নানা ক্যাটাগরিতে আবেদন করা যায়।

সোনালী ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন:

  • নাগরিকত্ব সনদ
  • জাতীয় পরিচয়পত্র
  • আয় ও চাকরির প্রমাণপত্র
  • জামানত (প্রয়োজনে)
  • ব্যাংকের লোন আবেদন ফর্ম

লোনের পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে প্রয়োজন ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কয়েক লক্ষ টাকাও হতে পারে।

ক্ষুদ্র ঋণ কিস্তি লোন

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ কিস্তি সাধারণত গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, ব্র্যাক, বুরো বাংলাদেশ, প্রগতি ও গণমুখী ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

এই লোনগুলো মূলত নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য, যাতে তারা ছোট ব্যবসা বা জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অর্থ সহায়তা পায়।

সাধারণত এই লোনের কিস্তি সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হয়। সুদের হার ১০% থেকে ১৪% এর মধ্যে থাকে। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে অনেক মানুষ ছোট উদ্যোগ শুরু করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

ক্ষুদ্র ঋণ নীতিমালা ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোর জন্য কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করেছে।

যেমন:

  • গ্রাহকের আয় ও লোন পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করা
  • সর্বনিম্ন ডকুমেন্টে লোন প্রদানের সুবিধা
  • নারীদের অগ্রাধিকার
  • গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ প্রদান
  • ১০,০০০ থেকে শুরু করে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ লোন

এই নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তোলা।

প্রবাস থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

অনেক প্রবাসী বা প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরাও এখন বাংলাদেশে সহজ কিস্তিতে লোন নিতে পারেন। বেশ কিছু ব্যাংক যেমন, এক্সিম ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসী গ্রাহকদের জন্য বিশেষ লোন সুবিধা দেয়।

লোন নিতে হলে:

  • প্রবাসে কর্মরত থাকার প্রমাণ
  • রেমিট্যান্স রেকর্ড
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
  • এনআইডি ও পাসপোর্ট কপি লাগবে

এই লোনের মাধ্যমে প্রবাসী পরিবারগুলো ছোট ব্যবসা শুরু করা, বাড়ি নির্মাণ বা শিক্ষা খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে।

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের লোন

যারা সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম খুঁজছেন তাদের অবগতির জন্য বলছি, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ঋণ আপনার জন্য সেরা একটি নির্বাচন হতে পারে।

বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প একটি বাড়ি একটি খামার, যা এখন “আমার বাড়ি আমার খামার” নামে পরিচিত, সাধারণ মানুষের স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তৈরি করছে।

এই প্রকল্প থেকে লোন নিতে হলে:

  • স্থানীয় “গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে” সদস্য হতে হয়
  • প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় করতে হয়
  • টানা ৬ মাস সঞ্চয় করার পর লোনের আবেদন করা যায়

প্রথমবার সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়, সুদের হার ৮%। নির্দিষ্ট সময়ের কিস্তি পরিশোধের পর পুনরায় বড় অঙ্কের লোনের আবেদন করা যায়।

আপনি যেই ধরনের লোন নেন না কেন সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম জানার থেকে সবচেয়ে বেশি জানা জরুরি হচ্ছে আপনার থেকে কিভাবে টাকা নেয়া হবে এবং প্রতি মাসে আপনার কীর্তি কত এবং আপনি কিভাবে সহজে পরিশোধ করতে পারেন তাদের কিস্তি টাকা।

সহজ কিস্তিতে লোন নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর

সহজ কিস্তিতে লোন পেতে কত সময় লাগে?

সাধারণত ৩ থেকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লোন অনুমোদন হয়ে যায়, তবে কাগজপত্র যাচাইয়ে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।

কোন কোন ব্যাংক সবচেয়ে সহজে লোন দেয়?

আশা, ব্র্যাক, ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক সহজ শর্তে কিস্তিতে লোন দেয়।

জামানত ছাড়া কি লোন পাওয়া যায়?

হ্যাঁ, ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প ও এনজিও লোন সাধারণত জামানত ছাড়া দেওয়া হয়। তবে বড় অঙ্কের লোনে জামানত প্রযোজ্য।

প্রবাসীরা কি বাংলাদেশে সহজ কিস্তিতে লোন নিতে পারেন?

অবশ্যই পারেন। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক প্রবাসী গ্রাহকদের জন্য বিশেষ লোন সুবিধা দেয়।

লোন পরিশোধে দেরি হলে কী হয়?

দেরি হলে সুদ বা জরিমানা যোগ হয় এবং পরবর্তী লোনের আবেদন গ্রহণে সমস্যা হতে পারে। তাই সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করাই উত্তম।

উপসংহার

সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার নিয়ম জানা থাকলে এখন আর আর্থিক সমস্যায় পড়ে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।

আপনি চাইলে সরকারি ব্যাংক, এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প থেকে খুব সহজেই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী লোন নিতে পারেন।

তবে লোন নেওয়ার আগে সবসময় শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ুন এবং নিজের পরিশোধ সক্ষমতা যাচাই করুন।

বুদ্ধিমানের কাজ হলো, ঋণকে বোঝা নয়, বরং নিজের উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
আপনি কি কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার খুঁজছেন!

ভিজিট করুন 👉

━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━

ডিজিটাল টাচ
ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
Sharing Is Caring:

আমি শেখ মোঃ আমিনুল ইসলাম (সুজন)। ডিজিটাল টাচ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক। এইচএসসি (বিজ্ঞান); চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment