বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবি দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এই বিশাল কার্যক্রম বাস্তবায়নের মূল ভরসা হচ্ছে টিসিবির অনুমোদিত ডিলাররা, যারা মাঠপর্যায়ে সরাসরি পণ্য বিক্রি করেন।
অনেক ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা এবং এই কমিশন আদৌ লাভজনক কি না। কারণ টিসিবি ডিলার হওয়া মানেই শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়, এর সঙ্গে যুক্ত থাকে সময়, শ্রম ও কিছু আর্থিক হিসাব।
এই লেখায় আমরা সহজ ভাষায় আলোচনা করব টিসিবি ডিলার কী, টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা, কমিশন কীভাবে দেওয়া হয় এবং বাস্তবে একজন ডিলার কতটা আয় করতে পারেন।
Content Summary
টিসিবি ডিলার কী?
টিসিবি ডিলার হলো সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, যাদের সরকারিভাবে অনুমোদন দিয়ে টিসিবির পণ্য বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই ডিলাররা সরাসরি ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছে দেন এবং সরকারি দামের বাইরে কিছু নেয়ার সুযোগ নেই।
সাধারণত টিসিবি ডিলাররা তিনভাবে পণ্য বিক্রি করেন।
- এর মধ্যে রয়েছে ট্রাক সেলের মাধ্যমে বিক্রি,
- ওয়ার্ডভিত্তিক খোলা বিক্রয়
- এবং ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে নির্ধারিত পরিমাণে পণ্য বিতরণ।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিলারদের নির্দিষ্ট নিয়ম ও নির্দেশনা মানতে হয়।
ডিলাররা টিসিবির মাঠপর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন, ফলে তাদের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা দুটোই তুলনামূলক বেশি।
টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা

অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা পাওয়া যায়। বাস্তবে এই কমিশন পণ্যের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে।
সাধারণ হিসাব অনুযায়ী, সয়াবিন তেলে প্রতি লিটারে প্রায় ২ থেকে ৩ টাকা, চিনিতে প্রতি কেজিতে ১.৫০ থেকে ২ টাকা, মসুর ডালে প্রতি কেজিতে প্রায় ২ টাকা এবং ছোলায় ১.৫০ থেকে ২ টাকা কমিশন দেওয়া হয়।
বিশেষ সময় পেঁয়াজ বা চাল বিক্রি হলে সেখানেও কেজিপ্রতি নির্দিষ্ট কমিশন থাকে।
এই হিসেবে একজন ডিলার প্রতিদিন গড়ে ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন আয় করতে পারেন, যা পুরোপুরি নির্ভর করে বিক্রির পরিমাণ ও পণ্যের ওপর।
আরও পড়ুনঃ টিসিবি’র ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি – ৩৬ জেলায় ডিলার নেওয়া শুরু
কিভাবে টিসিবি ডিলার কমিশন দেয়া হয়
টিসিবি ডিলার কমিশন দেওয়ার পদ্ধতিটা একটু ভিন্ন। এখানে আলাদা করে হাতে কমিশনের টাকা দেওয়া হয় না। বরং পণ্যের মোট মূল্যের সঙ্গে কমিশন আগেই সমন্বয় করা থাকে।
ডিলার যখন টিসিবি থেকে পণ্য উত্তোলন করেন, তখন নির্ধারিত কমিশন বাদ দিয়েই তাকে টাকা পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ, পণ্য বিক্রির পর সেই কমিশনই ডিলারের লাভ হিসেবে থেকে যায়।
এই পদ্ধতির ফলে কমিশন নিয়ে কোনো জটিলতা বা বকেয়া থাকার সুযোগ কমে যায় এবং হিসাব স্বচ্ছ থাকে, যা সরকার ও ডিলার উভয়ের জন্য সুবিধাজনক।
একজন টিসিবি ডিলার মাসে কত টাকা আয় করতে পারেন
গড় হিসাবে একজন টিসিবি ডিলার দিনে প্রায় ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা কমিশন আয় করতে পারেন।
যদি মাসে ২০ থেকে ২৫ দিন বিক্রি কার্যক্রম চলে, তাহলে মাসিক আয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ৬০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
তবে এখানে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। টিসিবির কার্যক্রম সারা বছর নিয়মিত চলে না। রমজান মাস, দুর্যোগকাল বা বিশেষ পরিস্থিতিতে বিক্রি বেশি হয়।
অন্য সময় আয় তুলনামূলক কম বা শূন্যও হতে পারে।
এছাড়া পরিবহন, শ্রমিক, লোড আনলোড ও সময় ব্যয়ের মতো কিছু খরচ বাদ দিলে প্রকৃত লাভ কিছুটা কমে আসে।
আরও পড়ুনঃ আবারও বাড়লো আয়কর রিটার্ন জমার সময়সীমা । শেষ তারিখ জেনে নিন
FAQs
না, টিসিবি ডিলার কমিশন আলাদা করে নগদে দেওয়া হয় না। এটি পণ্যের মূল দামের সঙ্গে সমন্বয় করা থাকে।
সাধারণত সারাদেশে কমিশনের হার একই থাকে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সাময়িক পরিবর্তন হতে পারে।
না, কমিশন সরকার নির্ধারণ করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সময় সময় সমন্বয় করা হয়।
না, নির্ধারিত মূল্যের বেশি নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এটি খুব বেশি লাভের ব্যবসা না হলেও নিরাপদ ও স্বল্পঝুঁকির একটি আয়ের উৎস।
উপসংহার
সব মিলিয়ে বলা যায়, টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে পণ্যের ধরন ও বিক্রির পরিমাণের ওপর।
কমিশন খুব বেশি না হলেও এটি নিয়মিত, স্বচ্ছ এবং সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত একটি আয়ের ব্যবস্থা।
যারা সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমিত কিন্তু নিরাপদ আয়ের সুযোগ খুঁজছেন, তাদের জন্য টিসিবি ডিলার হওয়া একটি বাস্তবসম্মত ও সম্মানজনক পথ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ নগদ পেল বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন: এমএফএস আন্তঃলেনদেনে বড় পরিবর্তন
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


