বাংলাদেশে আনঅফিসিয়াল বা অবৈধ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম নয়। অনেকেই বিদেশ থেকে ফোন এনেছেন, আবার কেউ কম দামে কিনে ফেলেছেন আনঅফিসিয়াল সেট। কিন্তু এসব ফোন হঠাৎ করে নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেলে বিপদে পড়তে হয়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) চালু করেছে NEIR (National Equipment Identity Register) সিস্টেম।
এই পোস্টে আপনি সহজ ভাষায় জানবেন আনঅফিসিয়াল ফোন বৈধ করার নিয়ম, কোথায় আবেদন করবেন, কত খরচ পড়ে এবং কোন ফোন কখনোই বৈধ হবে না।
Content Summary
আনঅফিসিয়াল কি?
আনঅফিসিয়াল ফোন বলতে সেই সব মোবাইল ফোনকে বোঝায় যেগুলো
- সরকারি অনুমোদিত আমদানিকারকের মাধ্যমে আনা হয়নি
- ট্যাক্স বা শুল্ক পরিশোধ করা হয়নি
- BTRC ডাটাবেজে IMEI রেজিস্টার করা নেই
এই ধরনের ফোন প্রথমে কাজ করলেও পরবর্তীতে NEIR সিস্টেমের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক থেকে ব্লক হয়ে যেতে পারে।
অফিসিয়াল ফোন চেক করার নিয়ম
আপনার ফোনটি অফিসিয়াল না আনঅফিসিয়াল তা খুব সহজেই যাচাই করা যায়।
SMS পদ্ধতিতে চেক করুন
- ফোনে একটি সচল সিম রাখুন
- মেসেজ অপশনে যান
- লিখুন: KYD(space)IMEI নম্বর
- উদাহরণ: KYD 123456789012345
- পাঠান 16002 নম্বরে
ফিরতি মেসেজে যা আসবে
- ফোন বৈধ হলে: Registered / Valid
- ফোন অবৈধ হলে: Not Registered / Invalid
আরও পড়ুনঃ উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টন নতুন নিয়ম
আনঅফিসিয়াল ফোনটি বৈধ করার নিয়ম
যদি আপনার ফোনটি অবৈধ দেখায়, তাহলে নিচের পদ্ধতিতে বৈধ করা যাবে।
ধাপ ১: NEIR পোর্টালে যান neir.btrc.gov.bd
ধাপ ২: অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
নিজের মোবাইল নম্বর ও NID/পাসপোর্ট ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করুন।
ধাপ ৩: “Special Registration” অপশনে ক্লিক করুন
এই অপশনটি মূলত বিদেশ থেকে আনা বা আনঅফিসিয়াল ফোনের জন্য।
ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় তথ্য দিন
- ফোনের IMEI নম্বর
- পাসপোর্ট তথ্য
- দেশে প্রবেশের তারিখ (যদি প্রযোজ্য হয়)
=> ধাপ ৫: ডকুমেন্ট আপলোড করুন
- পাসপোর্টের স্ক্যান কপি (ভিসা ও ইমিগ্রেশন সিলসহ)
- ফোন কেনার রসিদ (যদি থাকে)
ধাপ ৬: আবেদন সাবমিট করুন
সব তথ্য ঠিক থাকলে সাবমিট করার পর যাচাই শেষে ফোনটি বৈধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ একটি এনআইডিতে কতটি সিম কার্ড থাকবে | ১ জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম
আনঅফিসিয়াল মোবাইল ফোন করতে কি কি লাগবে
- ফোনের ১৫ ডিজিট IMEI নম্বর
- পাসপোর্ট (বিদেশ থেকে আনা হলে)
- ভিসা ও ইমিগ্রেশন সিল
- ফোনের ক্রয় রসিদ (থাকলে ভালো)
- সচল মোবাইল নম্বর
আনঅফিসিয়াল ফোন বৈধ করার সাইট
সরকারিভাবে একমাত্র বৈধ সাইট হলো 👉 https://neir.btrc.gov.bd
এছাড়া অন্য কোনো ওয়েবসাইট বা দালালের মাধ্যমে আবেদন করা ঝুঁকিপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ স্মার্ট এনআইডি বিতরণ শুরু – স্ট্যাটাস চেক ও সংগ্রহের সম্পূর্ণ গাইড
আনঅফিসিয়াল ফোন বৈধ করার খরচ
- ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগে কেনা ফোন:
👉 স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈধ, কোনো খরচ নেই - এর পরের ফোন:
👉 শুল্ক ও ট্যাক্স প্রযোজ্য হতে পারে
👉 খরচ ফোনের মডেল ও দামের উপর নির্ভর করে
কোন ধরনের ফোন বৈধ হবে না
নিচের ফোনগুলো কখনোই বৈধ করা যাবে না:
- ক্লোন বা ডুপ্লিকেট IMEI ফোন
- চুরি হওয়া বা ব্ল্যাকলিস্টেড ফোন
- ফেক IMEI ব্যবহার করা ডিভাইস
- সফটওয়্যার দিয়ে IMEI পরিবর্তন করা ফোন
আরও পড়ুনঃ টেলিটক ইন্টারনেট অফার আনলিমিটেড মেয়াদ
FAQs (প্রশ্নোত্তর)
হ্যাঁ, NEIR সিস্টেম চালুর পর অবৈধ ফোন ধীরে ধীরে ব্লক করা হয়।
সম্ভব হলে দেশে আসার পর দ্রুত Special Registration করা উচিত।
সাধারণত ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য সীমিত সংখ্যক ফোন অনুমোদিত।
IMEI ভুল বা ক্লোন হলে ফোন স্থায়ীভাবে ব্লক হতে পারে।
কেনার আগেই *16002# ডায়াল করে IMEI যাচাই করুন।
উপসংহার
বর্তমানে আনঅফিসিয়াল ফোন ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সরকার নির্ধারিত নিয়ম মেনে চললে সেটি বৈধ করা সম্ভব।
বিশেষ করে NEIR পোর্টাল চালুর ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি এখন অনলাইনে, স্বচ্ছ ও সহজ।
নতুন ফোন কেনার আগে একটু সতর্ক হলেই ভবিষ্যতে নেটওয়ার্ক ব্লক হওয়ার ঝামেলা থেকে বাঁচা যায়।
আরও পড়ুনঃ Postal Vote BD App কি? ইতিহাসে প্রথম! প্রবাসীদের ভোটাধিকার
এছাড়াও টেক নিউজ আপডেট নিয়মিত আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


