বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনা যায় এই বিষয়ে জানতে চান অনেকেই। কারণ বাংলাদেশে সোনার দাম এখন রেকর্ড ছুঁয়েছে। এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকারও বেশি, তাই দেশে গয়না কেনা অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য অনেকে বিদেশ থেকে সোনা আনার চিন্তা করছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো বিদেশ থেকে কতটুকু সোনার গয়না আনলে শুল্ক দিতে হবে না? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা ২০২৫ সম্পর্কে জানা জরুরি। এতে বলা হয়েছে, বিদেশফেরত যাত্রীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনার গয়না আনতে পারবেন সম্পূর্ণ শুল্কমুক্তভাবে।
বিদেশ থেকে সোনা আনার ক্ষেত্রে এখন নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। আপনি যদি সেই সীমার মধ্যে থাকেন, তাহলে কোনো কর বা শুল্ক দিতে হবে না। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনা যায় বর্তমানে।
Content Summary
বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনা যায় ২০২৫ সালে?
বর্তমানে বিদেশ থেকে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ আনা যায় শুল্কমুক্তভাবে, এর চেয়ে বেশি স্বর্ণ আনলে শুল্ক বা কর দিতে হবে সরকারকে। এছাড়াও বর্তমানে সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম রুপা আনতে পারবেন। রুপার অলংকারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ পিস নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
১০০ গ্রাম স্বর্ণ সমান ৮ ভরি ১০ আনা সোনা। অর্থাৎ বর্তমানে একজন প্রবাসী বিদেশ থেকে আসার সময় শুল্কমুক্তভাবে ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণের অলংকার নিয়ে আসতে পারবেন।

এর থেকে বেশি স্বর্ণ অলংকার নিয়ে আসলে আপনাকে কর দিতে হবে। চলুন জেনে নেই বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনা হলে আপনাকে কতটুকু কর দিতে হবে।
বিদেশ থেকে কতটুকু সোনার গয়না আনলে শুল্ক দিতে হবে না
নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা অনুযায়ী, একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম সোনার গয়না আনতে পারবেন শুল্কমুক্তভাবে। অর্থাৎ প্রায় ৮ ভরি ১০ আনা সোনা আনলেও কোনো কর দিতে হবে না।
একই সঙ্গে রুপার গয়নার ক্ষেত্রেও সুবিধা রয়েছে। আপনি সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম রুপার অলংকার আনতে পারবেন শুল্ক ছাড়াই। তবে একটি শর্ত আছে, একই ধরনের গয়না ১২ পিসের বেশি আনা যাবে না।
যদি আপনি গয়নার পরিবর্তে সোনার বার আনতে চান, তাহলে প্রতি তোলায় ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে বছরে একবার ১০ তোলা ওজনের একটি সোনার বার আনার অনুমতি পাবেন।
বিদেশ থেকে সোনার গয়না শুল্কমুক্ত সীমা
বিদেশ থেকে ফেরার সময় বিমানবন্দরে কাস্টমসের নিয়ম অনুযায়ী ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার অলংকার আনলে আপনাকে কোনো ফরম পূরণ করতে হয় না।
তবে এই সীমা অতিক্রম করলে শুল্ক দিতে হবে। তখন যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ফ্লাইটের তথ্য এবং সোনা বা রুপার বিবরণসহ একটি ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম পূরণ করতে হয়।
এই প্রক্রিয়াটি সহজ এবং অনলাইনে করা সম্ভব, যা এখন বিমানবন্দরগুলিতে আরও স্বচ্ছভাবে কার্যকর হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ সিটিসেল সিম কবে চালু হবে?
বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনার নিয়ম ২০২৪ ও ২০২৫
যদি আপনি সোনার বার আনতে চান, তাহলে নিয়ম কিছুটা আলাদা। নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা অনুসারে, বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ তোলা সোনার বার আনা যায়।
প্রতি তোলার জন্য ৫,০০০ টাকা শুল্ক দিতে হবে, যা বিমানবন্দরে নামার পর সরাসরি কাস্টমস কাউন্টারে পরিশোধ করা যায়।
এই প্রক্রিয়ায় সোনার বার আনলে তা বৈধ বলে গণ্য হবে, এবং কাস্টমস বিভাগ কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না।
আরো পড়ুনঃ প্রবাসী আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম
সোনা আনার ফরম পূরণের নিয়ম
যাত্রীরা বিমানবন্দরে নামার পর ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম নামে একটি ফরম পূরণ করেন। সেখানে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ফ্লাইট নম্বর, কোন দেশ থেকে এসেছেন ইত্যাদি তথ্য দিতে হয়।
যদি আপনার সোনার পরিমাণ ১০০ গ্রামের কম হয়, তাহলে এই ফরম পূরণের প্রয়োজন নেই। তবে তার বেশি হলে অবশ্যই ফরমে সোনার বিবরণ দিতে হবে।
যেসব যাত্রীর শুল্কমুক্ত সীমার মধ্যে সোনা রয়েছে, তারা গ্রিন চ্যানেল দিয়ে সহজেই বের হয়ে যেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ সব সিমের নাম্বার দেখার কোড
বাংলাদেশে সোনার বর্তমান দাম কত টাকা?
বাংলাদেশে বর্তমানে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিপ্রতি ২,১৬,৩৩২ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিশ্ববাজারে দাম বাড়া এবং ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমে যাওয়ায় সোনার দাম এতোটা বেড়েছে।
দেশে সরাসরি সোনা আমদানি না হওয়ায় বিদেশ থেকে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় আসা সোনাই এখন অন্যতম প্রধান উৎস। তাই বাজারে দাম কিছুটা বেশি।
আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪,৯০০ ডলার ছুঁতে পারে।
ব্যাংক অব আমেরিকা গ্লোবাল রিসার্চ আবার বলেছে, আগামী বছরই সোনার দাম ৫,০০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
বিদেশ থেকে সোনা আনার আগে যা জানা দরকার
- শুল্কমুক্ত সীমা বছরে একবারই প্রযোজ্য।
- ১০০ গ্রামের বেশি হলে অবশ্যই ফরম পূরণ করতে হবে।
- একই ধরনের গয়না ১২টির বেশি আনা যাবে না।
- সোনার বার আনলে প্রতি তোলায় ৫,০০০ টাকা শুল্ক দিতে হবে।
- গ্রিন চ্যানেল ব্যবহার করলে ঝামেলামুক্তভাবে বের হওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ জিপি কাস্টমার কেয়ার নম্বর
FAQs – বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনার নিয়ম ২০২৫
সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম বা প্রায় ৮ ভরি ১০ আনার সোনার গয়না শুল্ক ছাড়াই আনা যায়।
হ্যাঁ, প্রতি তোলায় ৫,০০০ টাকা শুল্ক দিতে হয় এবং বছরে একবার ১০ তোলা পর্যন্ত আনা যায়।
২০০ গ্রাম পর্যন্ত রুপার অলংকার শুল্কমুক্তভাবে আনা যায়।
১০০ গ্রামের বেশি সোনা থাকলে ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম পূরণ করতে হয়।
হ্যাঁ, ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনা বৈধভাবে আনা যায়।
উপসংহার,
আশা করি আপনারা এই বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। যে বিদেশ থেকে কতটুকু স্বর্ণ আনা যায়।
আমি চেষ্টা করেছি বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনার নিয়ম এবং সেই সাথে কি পরিমান স্বর্ণ আনলে আপনাকে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য।
এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে হলে আপনার প্রবাস ফেরত বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করুন।
অবশ্য সচেতনতার জন্য আপনি কখনোই আপনার নিকটের কাউকে স্বর্ণ আনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করবেন না।
বর্তমানে স্বর্ণের বাজার থেকে স্বর্ণ আনার নিয়ম জানার পাশাপাশি কোনরকম হয়রানি এয়ারপোর্টে হচ্ছে কিনা তা জানাও জরুরী।
আশা করি আপনি সবকিছু জেনে বুঝে বিদেশ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে আসবেন।
টেক নিউজ আপডেট প্রতিদিন আপনার মোবাইলে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।