সিটিসেল ২৫ পয়সা কলরেটে অফার সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। বাংলাদেশের প্রথম সিডিএমএ প্রযুক্তির মোবাইল অপারেটর সিটিসেল আবারও ফিরছে বাজারে আর সঙ্গে আনছে পুরনো দিনের চমক, ২৫ পয়সা মিনিটে কথা বলার সুযোগ! দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকার পর সিটিসেল নতুন প্রযুক্তি ও আধুনিক সেবা নিয়ে আবারও ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে সাশ্রয়ী কলরেট সুবিধা দিতে কাজ করছে। এই অফারটি চালু হলে দেশের মোবাইল অপারেটর বাজারে আবারও প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
সিটিসেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার তারা ফিরছে আগের চেয়ে আরও শক্ত অবস্থানে। উন্নত নেটওয়ার্ক কাভারেজ, আধুনিক ফাইভজি সাপোর্ট এবং গ্রাহকবান্ধব কলরেটের মাধ্যমে নতুনভাবে শুরু করতে চায় কোম্পানিটি।
Content Summary
২৫ পয়সা কলরেটে আবারও আসছে সিটিসেল!

হ্যাঁ, সিটিসেল আবারও ফিরছে ২৫ পয়সা প্রতি মিনিট কলরেটের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সম্প্রতি তারা বিটিআরসিকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছে, তারা নতুনভাবে লাইসেন্স নবায়ন করতে চায়, যাতে ৫জি প্রযুক্তিও যুক্ত করা যায়।
সিটিসেলের চিফ স্ট্রেটেজিক অ্যাডভাইজার মেহবুব চৌধুরী বলেন,
“আমরা দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পরও আইন মেনে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত। গ্রাহকদের জন্য উন্নত সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
নতুন পরিকল্পনায় শুধু কম কলরেট নয়, আরও উন্নত ইন্টারনেট ও ভয়েস কোয়ালিটি যুক্ত করার দিকেও নজর দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
সিটিসেল ২৫ পয়সা কল রেট অফার কি?
সিটিসেলের নতুন ২৫ পয়সা কলরেট অফার মূলত গ্রাহকদের জন্য সীমিত সময়ের প্রমোশনাল অফার হিসেবে চালু হতে পারে। এতে গ্রাহকেরা সিটিসেল নম্বরে কল করলে মিনিটপ্রতি মাত্র ২৫ পয়সা খরচ হবে।
এই অফারটি চালু হলে এটি দেশের সবচেয়ে কম কলরেট সুবিধাগুলোর একটি হয়ে উঠবে। বর্তমানে অন্য অপারেটরদের ক্ষেত্রে কলরেট ৫৪ পয়সা থেকে ৬০ পয়সা পর্যন্ত। ফলে সিটিসেলের এই ঘোষণা বাজারে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
আরও পড়ুনঃ জেবিসি আবার চালু করল পেনশন বিমা পলিসি | জানুন নতুন নিয়ম ও সুবিধা
আসলে কি সিটিসেল ২৫ পয়সা কলরেট ঘোষণা করেছে?
এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। তবে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ বিটিআরসির কাছে আবেদন করেছে লাইসেন্স নবায়নের জন্য এবং সেই প্রস্তাবের অংশ হিসেবেই ২৫ পয়সা কলরেটের পরিকল্পনা উল্লেখ করেছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী জানিয়েছেন,
“সিটিসেলের আবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সবকিছু আইন অনুযায়ী হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর মানে, সিটিসেল ইতিমধ্যে ফিরে আসার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই তারা আবারও কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ বিকাশে সর্বোচ্চ কত টাকা ক্যাশ আউট করা যায় দিনে ও মাসে জেনে নিন
পূর্বে সিটিসেল কলরেট অফার কত পয়সা ছিল?
সিটিসেল যখন বাজারে সক্রিয় ছিল, তখন তারা দেশের সবচেয়ে কম কলরেট সুবিধা দিত। ২০১৫–১৬ সালের দিকে তাদের কলরেট ছিল ৪৫ পয়সা থেকে ৫০ পয়সা প্রতি মিনিট।
তখন গ্রামীণফোন, রবি বা বাংলালিংকের তুলনায় এটি অনেক কম ছিল। এজন্যই বাজেট-সচেতন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটিসেল বেশ জনপ্রিয় ছিল।
নিচের টেবিলে তুলনামূলকভাবে পুরনো কলরেটগুলো দেখানো হলোঃ
অপারেটর | কলরেট (২০১৬ সালের আনুমানিক) | বর্তমান কলরেট |
---|---|---|
সিটিসেল | ৪৫–৫০ পয়সা | পুনরায় চালুর প্রস্তুতিতে |
গ্রামীণফোন | ৬০ পয়সা | ৬০–৭০ পয়সা |
রবি | ৫৮ পয়সা | ৬৫ পয়সা |
বাংলালিংক | ৫৫ পয়সা | ৬২ পয়সা |
আরও পড়ুনঃ নগদ একাউন্ট হালনাগাদ করার নিয়ম
সিটিসেলের ইতিহাস ও লাইসেন্স বাতিলের পেছনের ঘটনা
সিটিসেলের যাত্রা শুরু ১৯৮৯ সালে, যখন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিসিএল) মোবাইল সেবার জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ পায়।
পরবর্তীতে হংকংয়ের হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন এতে বিনিয়োগ করলে নাম পরিবর্তন হয়ে হয় হাচিসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।
১৯৯৩ সালে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মোরশেদ খান এর মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস ও ফারইস্ট টেলিকম এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নেয়।
এরপর কোম্পানির নতুন নাম হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, এবং ব্র্যান্ড নাম হিসেবে আসে “সিটিসেল।”
২০০৪ সালে সিঙ্গাপুরের সিংটেল বিনিয়োগ করে এবং ২০০৭ সালে নতুন লোগো উন্মোচন করে কোম্পানিটি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে সিটিসেল। ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর, বিটিআরসি তাদের লাইসেন্স বাতিল করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তখন গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ লাখ।
পরে কোর্টের নির্দেশে স্বল্প সময়ের জন্য সেবা চালু হলেও ২০২৩ সালে চূড়ান্তভাবে লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
সরকারের কাছে সিটিসেলের বকেয়া
সিটিসেল বন্ধ হওয়ার সময় সরকারের কাছে তাদের ৪৭৭ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। পরবর্তীতে তারা ২৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করে, ফলে অবশিষ্ট থাকে প্রায় ২৩৩ কোটি টাকা।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, সিটিসেলের বরাদ্দকৃত তরঙ্গ ছিল ৮.৮২ মেগাহার্জ, যেখানে চুক্তি অনুযায়ী থাকা উচিত ছিল ১০ মেগাহার্জ। ফলে সরকারের পাওনা কিছুটা সমন্বয় হয় এবং সর্বশেষ বকেয়া দাঁড়ায় ১২৮ কোটি টাকা।
সিটিসেল কি সত্যিই ফিরে আসছে?
হ্যাঁ, সিটিসেল ফিরে আসার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা প্রযুক্তি নিরপেক্ষ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে, যা ফাইভজি সেবা অন্তর্ভুক্ত করবে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে, গ্রাহকেরা আবারও সিটিসেলের সাশ্রয়ী কলরেট এবং উন্নত ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ প্রবাসী আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম
FAQs – সিটিসেল ২৫ পয়সা কলরেটে অফার ২০২৫ সম্পর্কে
২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর বিটিআরসি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
বিটিআরসির অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের মধ্যে পুনরায় চালু হতে পারে।
এটি এখনো প্রস্তাব পর্যায়ে রয়েছে, তবে অনুমোদন পেলে চালু করা হবে।
প্রায় ১২৮ কোটি টাকা।
হ্যাঁ, তারা প্রযুক্তি নিরপেক্ষ (৫জি সহ) লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।
উপসংহার
সিটিসেলের ২৫ পয়সা কলরেটের খবর গ্রাহকদের মধ্যে নতুন আগ্রহ তৈরি করেছে। দীর্ঘ আট বছর পর এই ব্র্যান্ডের ফিরে আসা বাজারে প্রতিযোগিতা আবারও বাড়াতে পারে।
যদি তারা সত্যিই প্রতিশ্রুত ২৫ পয়সা কলরেট চালু করতে পারে, তবে সিটিসেল আবারও হতে পারে বাংলাদেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী মোবাইল অপারেটর।
আশা করি আপনারা সিটি সেল পঁচিশ পয়সা কলরেট অফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এই ধরনের নিত্যনতুন টেক নিউজ আপডেট পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।