ই সিম কি? কিভাবে ই সিম ব্যবহার করতে হয় এবং eSIM এর সুবিধা অসুবিধা বিস্তারিত জানতে পারবেন আজকের এই নিবন্ধের মাধ্যমে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে যাচ্ছে দ্রুত। আগের সেই ফিজিক্যাল সিম কার্ডের যুগ শেষের পথে।
এখন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ই-সিম (eSIM) প্রযুক্তি। সম্প্রতি গুগল ও অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছে যে ভবিষ্যতের স্মার্টফোনগুলোতে আর আলাদা সিম স্লট থাকবে না।
এতে অনেকেই ভাবছেন? তাহলে যোগাযোগ হবে কীভাবে? উত্তর হলো, ই-সিম বা এমবেডেড সিমের মাধ্যমে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই, ই সিম কি, এর সুবিধা-অসুবিধা, দাম, সাপোর্টেড মোবাইল এবং নিবন্ধন পদ্ধতি।
Content Summary
ই সিম কি? ( What is eSIM? )

ই-সিম (Embedded Subscriber Identity Module) হলো এক ধরনের ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল সিম, যা আপনার ফোনের ভেতরেই ইনস্টল করা থাকে। এর জন্য আলাদা কোনো সিম কার্ড লাগানো লাগে না।
টেলিকম কোম্পানির সার্ভারের মাধ্যমে এটি সক্রিয় (Activate) করা হয়। আপনি চাইলে ই-সিম ব্যবহার করে কল, মেসেজ, ইন্টারনেট সহ সব কিছুই করতে পারবেন, ঠিক যেমন ফিজিক্যাল সিমে করতেন।
আরও পড়ুনঃ বন্ধ হল রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশ আসছে নতুন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা
ই সিমের সুবিধা সমূহ কি কি?
- সিম কার্ড হারানোর ভয় নেই, কারণ এটি ফোনের ভেতরেই থাকে।
- ফোনে বারবার সিম পরিবর্তনের ঝামেলা নেই।
- এক ফোনে একাধিক নম্বর ব্যবহার করা যায়।
- ভ্রমণের সময় সহজে লোকাল অপারেটরের নম্বর যোগ করা যায়।
- ফোন ভিজে গেলে বা পড়ে গেলেও ই সিমে কোনো সমস্যা হয় না।
ই–সিমের অসুবিধা সমূহ কি কি?
- এক ফোন থেকে অন্য ফোনে সহজে স্থানান্তর করা যায় না।
- একই সময়ে সব নম্বরে কল পাওয়া সম্ভব নয়।
- বাংলাদেশে এখনো সীমিত অপারেটর এ সেবা দিচ্ছে।
- ফোন নষ্ট হলে ই সিম রি-অ্যাকটিভ করতে সময় লাগে।
ই সিমের দাম কত টাকা?
বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রামীণফোন, রবির মতো অপারেটর ই-সিম সেবা চালু করেছে। ই সিমের দাম সাধারণত ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে পুরনো গ্রাহকরা ফ্রি আপগ্রেড সুবিধাও পেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
ই সিম সাপোর্ট মোবাইল
ই-সিম শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু স্মার্টফোনে কাজ করে। নিচে জনপ্রিয় কয়েকটি মডেল দেওয়া হলো—
| ব্র্যান্ড | সাপোর্টেড মডেল |
|---|---|
| Apple | iPhone XS, 11, 12, 13, 14, 15 সিরিজ |
| Samsung | Galaxy S20, S21, S22, S23, Z Flip, Fold সিরিজ |
| Pixel 3 থেকে সর্বশেষ পর্যন্ত | |
| Motorola | Razr 2019 ও পরবর্তী মডেল |
আরও পড়ুনঃ
ই সিম কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করব?
বর্তমানে ই সিম নিবন্ধনের প্রক্রিয়া খুব সহজ। ই সিম রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনার নিকটস্থ টেলিকম কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
- প্রথমে আপনার অপারেটরের নিকটবর্তী কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যান।
- সঙ্গে নিয়ে যান জাতীয় পরিচয়পত্র ও পুরনো সিম।
- কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আপনাকে ই সিম QR কোড দেবে।
- QR কোড স্ক্যান করে আপনার ফোনে ই সিম সক্রিয় করুন।
- সক্রিয় হওয়ার পরেই আপনি ইন্টারনেট ও কল ব্যবহার করতে পারবেন।
কোন কোন কোম্পানি ই সিম দিচ্ছে?
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে কয়েকটি মোবাইল অপারেটর ই-সিম প্রদান করছে। অনেক কোম্পানি ই-সিম সেবা চালু করেছে বা চালুর পথে রয়েছে।
নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য নাম দেওয়া হলো:
- Grameenphone (GP) ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রথম বাংলাদেশে ই-সিম চালু করেছে।
- Robi Axiata PLC ই-সিম সাপোর্টের কথা বিবেচনায় আছে।
- Teletalk Bangladesh Ltd. ই-সিম সেবা চালুর ঘোষণা করেছে।
টেলিটক ই সিম কেনার উপায়?
টেলিটক এখনো পরীক্ষামূলকভাবে ই সিম সেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে টেলিটক ই সিম গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তখন ব্যবহারকারীরা টেলিটকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা সেন্টার থেকে আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ বাংলালিংক রাইজ অ্যাপ ২০২৫ | AI চালিত ডিজিটাল লাইফস্টাইল প্ল্যাটফর্ম
উপসংহার
ই সিম প্রযুক্তি ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ, দ্রুত ও স্মার্ট করে তুলছে। এটি শুধু ফোনের জায়গা বাঁচায় না, বরং একাধিক নম্বর ব্যবহারের সুযোগও দেয়।
তবে যেহেতু এটি নতুন প্রযুক্তি, তাই এখনই সব ফোনে বা সব অপারেটরে এটি পাওয়া যাচ্ছে না।
তবুও বলা যায়, খুব শিগগিরই ই সিম প্রযুক্তি বাংলাদেশের মোবাইল ব্যবহারের ধরণ সম্পূর্ণ বদলে দেবে।
আরও পড়ুনঃ সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম ২০২৫ | জিপি, রবি, বাংলালিংক সিম বাতিল প্রক্রিয়া
FAQs – All about eSIM in Bangladesh
হ্যাঁ, এটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল সিম যা ফোনের ভেতরে ইন্সটল থাকে এবং একইভাবে কাজ করে।
একটি ই সিম সাপোর্টেড ফোন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র।
এক ফোনে সর্বোচ্চ পাঁচটি ই সিম নম্বর সংরক্ষণ করা যায়।
নতুন ফোনে আবার QR কোড স্ক্যান করে অপারেটরের সাহায্যে স্থানান্তর করতে হয়।
বর্তমানে গ্রামীণফোন ও রবি ই সিম সেবা দিচ্ছে। টেলিটক শিগগিরই যোগ দেবে।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


