নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে তা অনেকেই ঠিকমত জানেন না, তাই আবেদন করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। একটি শিশুর জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব জন্ম নিবন্ধন করা প্রয়োজন। এটি শুধু পরিচয়ের নথি নয়, ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবন, পাসপোর্ট, ভিসা, সরকারি সুবিধা ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন অপরিহার্য। তাই জন্মের পর থেকেই প্রয়োজনীয় কাগজ প্রস্তুত রাখা ভালো।
এই লেখায় জন্ম নিবন্ধন করতে কি প্রয়োজন, কেন করতে হয়, নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে, কত টাকা ফি লাগে, কত দিনে পাওয়া যায়, সব কিছু সহজভাবে জানিয়ে দেওয়া হলো।
যারা প্রথমবার জন্ম নিবন্ধন করতে চান, তারা পুরো গাইডটি অনুসরণ করলেই আবেদন করতে পারবেন।
Content Summary
জন্ম নিবন্ধন কি?
জন্ম নিবন্ধন হলো একজন মানুষের জন্ম সঠিকভাবে সরকারি নথিতে লিপিবদ্ধ করার প্রক্রিয়া। এতে শিশুর নাম, জন্মতারিখ, জন্মস্থান, পিতামাতার পরিচয়সহ প্রয়োজনীয় তথ্য সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়।
মূলত জন্ম নিবন্ধন হলো একজন ব্যক্তির নাগরিক পরিচয় পাওয়ার প্রথম ধাপ।
ভবিষ্যতে স্কুলে ভর্তি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরি, সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা, সম্পত্তি ও আইনি প্রয়োজনে এই সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই জন্মের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক ও প্রয়োজনীয়।
কেন জন্ম নিবন্ধন করতে হয়?

জন্ম নিবন্ধন শুধু একটি কাগজ নয়, একটি শিশুর আইনগত পরিচয়ের প্রাথমিক প্রমাণ।
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে তার পাশাপাশি কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ তা জানা প্রয়োজন। জন্ম নিবন্ধন থাকার ফলে:
- স্কুলে ভর্তি, পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন এবং শিক্ষাজীবনের নানা ক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক
- জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও ব্যাংক হিসাব খোলার সময় জন্ম সনদ লাগে
- সরকার প্রদত্ত ভাতা, ভিজিডি–ভিজিএফ, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা নিতে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন
- বিবাহ, সম্পত্তি প্রাপ্তি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে জন্ম সনদ অপরিহার্য
- নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেতে জন্ম নিবন্ধনই প্রথম নথি
এ কারণে জন্মের পর দ্রুত নিবন্ধন করা সবচেয়ে ভালো।
আরও পড়ুনঃ ওয়ালটনের নামে প্রতারণা: ভুয়া উপহারের স্ক্যাম লিংক থেকে সাবধান
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র লাগে। এগুলো সঠিকভাবে জমা দিলে আবেদন দ্রুত অনুমোদন হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলো:
পিতামাতার কাগজপত্র
- পিতামাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি (বাংলা ও ইংরেজি)
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
শিশুর কাগজপত্র
- শিশুর টিকার EPI কার্ড
অথবা - হাসপাতালের ছাড়পত্র (Birth Certificate / Discharge Paper) (অপশনাল)
ঠিকানার প্রমাণ
- বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ অথবা হোল্ডিং নম্বর
- স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ইউনিয়ন চেয়ারম্যান) এর সনদ
অন্যান্য
- আবেদনকারী বা অভিভাবকের মোবাইল নম্বর
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজ ছবি (আবশ্যক নয়)
- প্রয়োজনে পিতামাতার বিয়ের সনদ বা নিকাহনামা
আমি মনে করি নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে আপনি এই প্রশ্নের মূল উত্তর খুঁজে পেয়েছেন। সব কাগজ প্রস্তুত থাকলে অনলাইন আবেদনে বেশি সময় লাগে না।
আরও পড়ুনঃ প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করার নিয়ম
নতুন জন্ম নিবন্ধন ফি কত টাকা
জন্ম তারিখের ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করলে জন্ম নিবন্ধন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। অনেকেই জানেন না, তাই দেরি করে আবেদন করে ফি দিতে হয়।
জন্ম নিবন্ধনের সরকারি ফি:
- ০–৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন: ফ্রি
- ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন: ২৫ টাকা
- ৫ বছরের বেশি হলে: সংশ্লিষ্ট অফিসের নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত যাচাই ও ফি
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ফরম পূরণ করাও ফ্রি।
আরও পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
জন্ম নিবন্ধন কত দিনে পাওয়া যায়
জন্ম নিবন্ধন কত দিনে পাওয়া যায় তা নির্ভর করে এলাকার অফিস, যাচাই প্রক্রিয়া এবং জমা দেওয়া কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তার ওপর।
সাধারণত:
- অনলাইনে আবেদন ও কাগজ জমা দিলে ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন পাওয়া যায়
- কোনো তথ্য ভুল থাকলে প্রক্রিয়া আরও সময় নিতে পারে
- জন্ম নিবন্ধন সংশোধন হলে ৭–১৫ দিন সময় লাগতে পারে
সঠিক কাগজ দিলে আবেদন খুব দ্রুতই সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন চেক করার সহজ উপায়
সাধারণ প্রশ্ন (FAQ)
প্রয়োজন হয় পিতামাতার জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র, শিশুর EPI কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ, ছবি এবং মোবাইল নম্বর।
হ্যাঁ, ফরম অনলাইনে পূরণ করতে হয়। কিন্তু কাগজপত্র জমা দিতে হয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন অফিসে।
সাধারণত ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়।
জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করলে ফি লাগে না। ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ২৫ টাকা ফি দিতে হয়।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইটে আবেদন করে স্থানীয় নিবন্ধন অফিসে কাগজ জমা দিতে হয়।
উপসংহার
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে তা জানা থাকলে আবেদন করতে খুব বেশি সময় লাগে না। পিতামাতার পরিচয়পত্র, শিশুর জন্ম নথি এবং ঠিকানার কাগজ ঠিক থাকলে অনলাইন আবেদন দ্রুত সম্পন্ন হয়।
জন্মের পর ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করাই সবচেয়ে ভালো, কারণ এতে ফি লাগে না এবং যাচাই প্রক্রিয়াও সহজ হয়।
জন্ম নিবন্ধন এখন একটি শিশুর ভবিষ্যতের প্রথম সরকারি পরিচয়, তাই সময়মত এটি করা জরুরি।
আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বরের পর যে তিন ধরনের মোবাইল ফোন বন্ধ করবে সরকার
টেক নিউজ আপডেট সবার আগে পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


