অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম জানেন কি? বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র এখন জীবনের প্রায় সব কাজে লাগে। ভোট দেওয়া, সিম রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, পাসপোর্ট তৈরি, চাকরির আবেদন, অনলাইনে সরকারি সেবা—সব জায়গায় NID অপরিহার্য।
যারা প্রথমবার ভোটার হতে চান, তাদের জন্য অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম এখন অনেক সহজ। শুধু সঠিক কাগজপত্র প্রস্তুত করে ধাপে ধাপে আবেদন করলেই হয়ে যায়।
এখানে সহজ ভাষায় পুরো প্রক্রিয়াটি সাজিয়ে দেওয়া হলো, যাতে আপনি বাড়িতে বসেই প্রস্তুতি নিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
Content Summary
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
নতুন ভোটার নিবন্ধন এখন মূলত অনলাইনভিত্তিক। নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এ গিয়ে আবেদন শুরু করতে হয়।
আবেদন সম্পন্ন হলে ফরম প্রিন্ট করে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিক দিতে হয়।
অনলাইনে আবেদন করার ধাপগুলো:
১) ব্রাউজার থেকে যান: services.nidw.gov.bd
২) “New Voter Registration” নির্বাচন করুন
৩) Form-2 অনলাইনে পূরণ করুন
৪) তথ্য যাচাই করে সাবমিট দিন
৫) সম্পন্ন হলে ফরম ডাউনলোড ও প্রিন্ট করুন
৬) কাগজপত্রসহ উপজেলা/সিটি নির্বাচন অফিসে জমা দিন
৭) ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিশ স্ক্যান দিন
৮) যাচাই শেষে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে NID প্রস্তুত হয়
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
নতুন ভোটার আইডি করতে কি কি লাগে
নতুন NID কার্ড করতে যে কাগজগুলো লাগবে, সেগুলো আগে থেকে প্রস্তুত রাখলে ঝামেলা কম হবে।
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRIS)
- পিতা ও মাতার ভোটার আইডি
- যদি বিবাহিত হন: স্বামী/স্ত্রীর NID + বিবাহ সনদ
- ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ বিল/পানি বিল/ভাড়া রশিদ)
- নাগরিকত্ব সনদ (প্রয়োজনে)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি থাকে)
- আবেদন ফরম (Form-2)
- শনাক্তকারী ব্যক্তির NID নম্বর
- যাচাইকারীর (ইউপি সদস্য/কাউন্সিলর) স্বাক্ষর
এই কাগজগুলো পুরো আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুনঃ ফ্যামিলি কার্ড ছাড়াও টিসিবির পণ্য কোথায় মিলবে জানুন
নতুন ভোটার আইডি আবেদন ফরম কোথায় পাওয়া যায়
নতুন ভোটার নিবন্ধনের আবেদন ফরম Form-2 নামে পরিচিত। এটি পাওয়ার দুটি উপায় আছে:
১) অনলাইনে:
services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে নতুন ভোটার নিবন্ধন করলে ফরম স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়। আপনি সেটি PDF আকারে ডাউনলোড করতে পারবেন।
২) অফলাইনে:
উপজেলা নির্বাচন অফিস বা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অফিস থেকে হাতে নেওয়ার মতো ফরম পাওয়া যায়।
ফরম পূরণ করার সময় পিতা-মাতা, ঠিকানা ও জন্ম তারিখ অবশ্যই সঠিকভাবে লিখতে হবে।
নতুন ভোটার আইডি করতে কত টাকা লাগে
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কোনো ফি লাগে না। প্রথমবার NID বানানো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
শুধুমাত্র যদি আপনি—
- কার্ড হারিয়ে ফেলেন
- ভুল সংশোধন করতে চান
- পুনঃপ্রিন্ট নিতে চান
তাহলে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হতে পারে।
কিন্তু নতুন ভোটার হিসেবে প্রথমবার আবেদন করলে কোনো খরচ নেই।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কত সময় লাগে
সাধারণত অনলাইন আবেদন ও বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করার পর ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত হয়। তবে এলাকার ভেরিফিকেশন বা ডাটা যাচাইয়ের কারণে কখনো কখনো সময় বাড়তে পারে।
ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া (সহজ ভাষায়)

আপনি একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী করবেন, তা সংক্ষেপে দেখে নিন:
ধাপ ১: অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন
লিংক: https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/register-account
এখানে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে Form-2 পূরণ করুন।
ধাপ ২: ফরম প্রিন্ট ও স্বাক্ষর
ফরমের ৩৪ নম্বরে নিকটাত্মীয়ের NID নম্বর ও স্বাক্ষর দিতে হবে। ৪০–৪২ নম্বরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর ও সিল লাগবে।
আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম ও ফি, অনলাইনে আবেদন
ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত
- অনলাইন জন্ম সনদ
- নাগরিকত্ব সনদ (যদি লাগে)
- পিতা-মাতার NID
- বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর NID
- বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস বিল
- ভাড়া রশিদ বা পৌরকর/চৌকিদারি কর রশিদ
ধাপ ৪: উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা
সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত জমা নেওয়া হয়। সেখানে আবেদন যাচাইয়ের পর আপনাকে বায়োমেট্রিকের তারিখ দেওয়া হবে।
ধাপ ৫: বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়া
নির্দিষ্ট দিনে ছবি, আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান দেওয়া হবে।
ধাপ ৬: NID কার্ড সংগ্রহ
যাচাই সম্পন্ন হলে নতুন ভোটার আইডি কার্ড প্রস্তুত হয়। SMS এ জানানো হলে নির্ধারিত তারিখে সংগ্রহ করুন।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা
- জন্ম নিবন্ধন ও ফরমের জন্ম তারিখ অবশ্যই মিলতে হবে
- ভুল তথ্য দিলে পরে NID সংশোধন করতে হয়
- একই ব্যক্তির নামে একাধিক NID তৈরি করা আইনত দণ্ডনীয়
- ছবি তোলার সময় মাথা ও চোখে কিছু থাকা যাবে না
- আবেদন স্ট্যাটাস Check করতে পারবেন nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে
আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
১৮ বছর পূর্ণ হলেই আবেদন করতে পারবেন।
না। আগে জন্ম সনদ ঠিক করতে হবে।
হ্যাঁ, বায়োমেট্রিক দিতে অবশ্যই যেতে হয়।
২–৩ সপ্তাহ। প্রয়োজন হলে আরো সময় লাগতে পারে।
না, সম্পূর্ণ ফ্রি।
উপসংহার
নতুন ভোটার আইডি কার্ড বানানো এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। অনলাইনে Form-2 পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিলেই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র আপনার নাগরিক পরিচয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, তাই যাদের এখনো NID নেই তারা দ্রুত অনলাইনে আবেদন করে নিজের পরিচয়পত্র তৈরি করে নিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করা হয় কেন – জানুন সম্পূর্ণ কারণ ও সমাধান
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম আরও সহজ করা হয়েছে।
ফ্যামিলি কার্ড প্রয়োজন না থাকলেও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ভোক্তারা ট্রাক থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সুযোগ পাচ্ছেন।
ভিজিট করুন 👉
━ ━ ━ ━ ━ ━ ━ ━
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।


