বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে পালিত হয় এই সম্পর্কে জানতে অনেকেই গুগল সার্চ করে থাকেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন হিসেবে পালিত হয়।
১৯৭১ সালেের ১৬ ই ডিসেম্বর দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রামের পর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
তবে ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই বাঙালি জাতিকে মেরুদন্ডহীন করার লক্ষ্য ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের স্বৈরাচারী সরকারের।
সেই লক্ষ্যে তারা বাংলাদেশের বিশিষ্ট জনদের এবং সাধারন মানুষদের হত্যা করতে থাকে।
একটি জাতিকে মেরুদণ্ডহীন করতে পশ্চিম পাকিস্তানী স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করে।
জাতির বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে পাকিস্তানি সরকারকে সাহায্য করে বাংলাদেশীদের মধ্যে থাকা তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে।
Content Summary
বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয়?
আপনি নিশ্চয়ই জানেন হাজার ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটের রাজত্ব করতে থাকে।
তবে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে তারা ডিসেম্বরে বুঝতে পারে এই যুদ্ধে তাদের পরাজয় নিশ্চিত।
তাই ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আলশামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের নির্বিচারে হত্যা শুরু করে।
এসময় তারা বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে প্রথম শ্রেণীর জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করে।
আবার অনেককে নিজ বাড়িতে নিজ পরিবারের সামনে নিশংস ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
মূলত বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত করে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।
যুদ্ধ পরবর্তী ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরে বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহ পাওয়া যায়।
দীর্ঘ সংগ্রাম তিতিক্ষা অতিক্রম করে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বুদ্ধিজীবীদের নিকট আত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের মৃতদেহ সনাক্ত করেন।
অনেক বুদ্ধিজীবীর দেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারো কারো শরীরে একাধিক গুলি, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে।
যা থেকে হত্যার পূর্বে তাদের উপর যে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছিল সে তথ্যও বের হয়ে আসে।
তবে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা যায়, বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
জাতির মহান ব্যক্তিদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করতেই ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ সরকার।
তারপর থেকেই প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর যথাযথ মর্যাদায় জাতি বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসাবে পালন করছে।
আরও পড়ুনঃ
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক কে?
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি?
স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অনেক বেশি রক্ত দিতে হয়েছে’ বাঙ্গালী জাতিকে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও লক্ষ শহীদের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের প্রতিটি দিন এই বাঙ্গালী জাতির জন্য স্মরণীয় দিন।
এই স্মরণীয় দিন গুলোর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য দিন, এই দিনগুলোতে জাতী তার কৃতি সন্তানদের হারিয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস তেমনই একটি দিন।
নিশ্চিত পরাজয় জেনেই বাংলাদেশ যুদ্ধ বিজয়ের প্রাক্কালে ডিসেম্বর মাসে বেশীরভাগ বাংলাদেশী জ্ঞানী গুণী ব্যক্তি কে হত্যা করে দেশকে মেধাশূণ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে।
জাতীর বীর সন্তানদের স্মরণে ১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা করা হয়েছে এবং প্রতি বছর বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের সময়ে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া মহান ব্যাক্তিদের স্বরণে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালন করে থাকে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে? কবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা করা হয়?
১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময় প্রায় সারা বছরই পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
তবে নিশ্চিত পরাজয় সম্মুখে জেনে ডিসেম্বর মাসে তাদের হত্যার প্রসারতা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পায়।
পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুনঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ কোনগুলো?
শেষের কবিতার কিছু বিখ্যাত লাইন
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে? প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব
পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক জাতীর প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। তাই ১৪ ডিসেম্বরে কে বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
জাতীর কৃতি সন্তানদের স্মরণের উদ্দেশ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।
স্বাধীনতা অর্জনের প্রাক্কালে জাতির কৃতি সন্তানদের দেশের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেন। দেশ সেই কৃতি সন্তানদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের স্মরণ করা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম শহীদ দিবস ও জাতীয় শোক দিবসে বা সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্যান্য দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান করা হয়েছে। তবে পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হলে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম হলো, অর্ধনমিত অবস্থায় উত্তোলনের আগে পতাকাটি পুরোপুরি উত্তোলন করে অর্ধনমিত অবস্থানে আনতে হবে এবং পতাকা নামানোর আগে পতাকাটি শীর্ষে উত্তোলন করে নামাতে হবে।
উপসংহার,
আশাকরি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে এই সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
বিশ্বের বুকে নিজেকে বাঙালি হিসাবে পরিচয় দেয়ার জন্য অনেক প্রাণ দিতে হয়েছে নিরীহ বাংলাদেশীদের।
বিশ্বের কোন দেশে স্বাধীনতার জন্য এত প্রাণহানি হয়নি, যেটা হয়েছে বাংলাদেশকে।
তাই বাংলাদেশের যুবসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে এবং দেশ ও দেশের সম্মানের জন্য সর্বদাই কাজ করে যেতে হবে।
ইন্টারনেট থেকে টাকা ইনকাম ও অনলাইনে প্রকাশিত সঠিক তথ্যগুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
আরও পড়ুনঃ
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক কে?
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।