প্রিয় পাঠক বৃন্দ বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক কে? আপনারা কি জানেন। আমরা প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো সমাজে বসবাস করি এবং সমাজের আওতায় নিজেদের পরিচালনা করি।
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি এবং বিকাশ কিভাবে হয়েছিল এবং বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক কে সেই সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত জানবো। সমাজ শব্দটির সাথে আমরা ছোট থেকে বড় সকলেই খুব ভালোভাবে পরিচিত।
প্রতিটি মানুষের জন্মের পর থেকে একটি নির্দিষ্ট সমাজ কিংবা একটি সমাজ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে থাকে। সমাজের নিয়ম নীতি অনুসরণ এবং সমাজের বেঁধে নিষেধ গুলো মেনে চলা সমাজবিজ্ঞানের একটি অংশ।
তবে এই ধারণাটি সর্বপ্রথম কে বাংলাদেশ এনেছিলেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্য আজকের এই আর্টিকেল গঠন করা হয়েছে।
Content Summary
বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কাকে
সমাজ বিজ্ঞান বর্তমানে খুবই পরিচিত একটি বিষয় আমাদের সকলের কাছে।
অনেকেই আপনারা সমাজ বিজ্ঞান বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করছেন এবং সমাজ বিজ্ঞান সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন।
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল এবং কে এর বিকাশ ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিচিত সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আবুল খায়ের নাজমুল করিম বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের জনক হিসেবে বেশ পরিচিত।
এই বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৮২ সালে পরলোক গমন করেন।
ডক্টর নাজমুল করিম ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ১৯৪৬ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেছিলেন।
এছাড়াও তিনি ১৯৫৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান রাজ্যের ভিত্তি লাভ করেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পড়াশোনা করার বিশেষ সুযোগ অর্জন করেন।
পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে যুগপৎ ‘সরকার’ ‘সমাজবিজ্ঞান’ এই দুটি বিষয়ে এম. এ. ডিগ্রি এবং ১৯৬৪ সালে রকফেলার বৃত্তি পেয়ে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এর পরবর্তীতে ডঃ নাজমুল করিম ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনেস্কোর যৌথ প্রচেষ্টায় ১৯৫৭ সালে ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ কে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
এরপর পরে ১৯৫৮ সালে অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল করিম এই নতুন বিভাগটি পরিচালনা করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের বিকাশধারা | বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক কে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সর্বপ্রথম সমাজ গবেষণা কিংবা সমাজ বিজ্ঞানের আদি সূচনা হয়েছিল ডক্টর নাজমুল করিমের হাত ধরে।
অধ্যাপক নাজমুল করিম সমাজ বিজ্ঞানকে সকল পাঠযোগ্য করার উদ্দেশ্যকে সকল করার জন্য বাংলা ভাষায় বিভিন্ন বই লিখেছেন।
তার লিখিত বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত বা উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে “সমাজবিজ্ঞান সমীক্ষণ” বইটি।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় নাজমুল করিম দুটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
সে দুটি প্রবন্ধ হচ্ছে “ধর্মের বিবর্তন ও মার্কসবাদ” এবং “ভূগোল ও ভগবান”২।
এবং তিনি এই প্রবন্ধ গুলো প্রকাশ করার পর বিদ্বৎকুলের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তাঁর এম. এ. অভিসন্দর্ভ ‘চেঞ্জিং সোসাইটি ইন ইন্ডিয়া এন্ড পাকিস্তান’ গ্রন্থাকারে ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হয়।
তাছাড়া তাঁর পিএইচডি অভিসন্দর্ভ ‘মর্ডান মুসলিম পলিটিকাল এলিট ইন বেঙ্গল’ ১৯৮০ সালে ‘ডাইনামিক্স
অব বাংলাদেশ সোসাইটি’ নামে প্রকাশিত হয়।
১৯৬০ এবং ১৯৬২ সালে সমাজবিজ্ঞানের দুজন শিক্ষক অধ্যাপক পেরি বেসাইনি ও অধ্যাপক ড. জন ই ওয়েন কর্তৃক যে দুটি গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশিত হয় তাতেও নাজমুল করিম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
প্রথম গ্রন্থের সমাজবিজ্ঞানের পদ্ধতি সংক্রান্ত প্রথম প্রবন্ধ এবং দ্বিতীয় গ্রন্থের সমাজতত্ত।
অংশের প্রথম প্রবন্ধ ও ক্ষেত্র-গবেষণা অংশের দ্বিতীয় প্রবন্ধের লেখক ছিলেন নাজমুল করিম।
তিনি এই সকল প্রবন্ধে সমাজতাত্তিক পদ্ধতি, উন্নয়নের লক্ষ্য ও সামাজিক স্তরবিন্যাস সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করেন, যা বাংলাদেশের সমাজের জন্য উপযোগী বলে বিবেচিত।
তাছাড়া তিনি দেশ-বিদেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সেমিনারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছিলেন যা বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
শিক্ষায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার অধ্যাপক নাজমুল করিমকে ২০১২ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করেন।
পূর্বে বাংলাদেশের সমাজ গবেষণায় এবং সমাজবিজ্ঞান শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে অধ্যাপক ড. নাজমুল করিম পথিকৃৎ হিসেবে অগ্রগণ্য।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক কে FAQS
সমাজবিজ্ঞানের সর্বপ্রথম ধারনা বাংলাদেশে আনেন ড. নাজমুল করিম।
ড. নাজমুল করিম ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন
উপসংহার
সুপ্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক কে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করছি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল থেকে সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এছাড়া বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের উদ্ভব বা বিকাশ কিভাবে হয়েছে সে সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেছি।
তবুও যদি আজকের এই আর্টিকেল সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন বা মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আপনারা যারা ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে ইচ্ছুক এবং জ্ঞানমূলক ও খেলাধুলা বিষয়ক আর্টিকেলগুলো পড়তে চান তারা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত সকল আর্টিকেলগুলো পেয়ে যাবেন এর পাশাপাশি ফেসবুক পেইজে সকল আপডেটগুলো সবার আগে পাবেন।
আরও পড়ুনঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নাম কি?
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়?
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।