সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ শবে বরাতের রোজা কয়টি? আপনারা কি এ বিষয়ে জানেন। আপনার যদি এই বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য।
২০২২ সাল শেষে আবারো নতুন একটি সাল ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দেখতে দেখতে আবারো চলে আসছে পবিত্র শবে বরাত এবং মাহে রমজান। শবেবরাত মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য খুবই পবিত্র একটি রাত।
এই রাতে সমগ্র মুসলিম জাতি সারারাত আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে ইবাদাতে নিমজ্জিত থাকেন। এছাড়াও পবিত্র এই দিনে রোজা রাখা উত্তম বলে অনেক হাদিসেই পাওয়া গিয়েছে।
তবে শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখতে হবে সেই সম্পর্কে অনেকেই নির্দিষ্টভাবে জানেন না। তাই শবে বরাতের রোজা কয়টি সেই সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব।
এছাড়াও পবিত্র মাহে রমজান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে এই আর্টিকেলে।
Content Summary
শবে বরাতের রোজা কয়টি ২০২৩
পবিত্র শবে বরাতের রোজা কয়টি সেই সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত কর ও দিনে রোজা পালন কর। (সুনানে ইবনে মাজাহ)।
এছাড়াও আমরা প্রতি মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজের নফল রোজা তো রয়েছেই, যা আদি পিতা হজরত আদম (আ.) পালন করেছিলেন।
এবং আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদও (সা.) পালন করতেন, যা মূলত সুন্নত।
সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারছেন যে এই তিনটি রোজা রাখলেও শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসের পর রজব মাস এবং শাবান মাসে বেশি বেশি নকল এবাদত করতেন।
তিনি কখনো কখনো শাবান মাসে দশটি নকল রোজা আবার কখনো কখনো ২০ টি নফল রোজা কিংবা এর বেশিও রোজা রাখতেন।
রজব ও সাবান মাসের নফল রোজা হচ্ছে পবিত্র রমজান মাসের রোজার প্রস্তুতি।
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ। (ইবনে মাজা, হাদিস- ১৩৮৪)
যেহেতু আমরা বিভিন্ন সহিহ হাদিসের শাবান মাসের রোজার সাধারণ ফজিলত এবং আইয়ামে বীজের রোজার ফজিলত উল্লেখ্য হয়েছে পাশাপাশি দুর্বল সনদে উপরোক্ত হাদিসটিও বিদ্যমান রয়েছে।
তাই আপনারা কেউ যদি এসব বিষয়ে বিবেচনায় রেখে ১৫ শ্রাবণের রোজা রাখেন তাহলে তিনি সোয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আর পড়ুনঃ
২০২৩ সালের প্রথম রোজা কত তারিখে?
শবে মেরাজের কয়টি রোজা রাখতে হয়?
২০২৩ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে?
শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখতে হয়
ইতিমধ্যেই শবেবরাতের রোজা কয়টি সেই সম্পর্কে আপনাদেরকে সকল বিষয়ে আলোচনা করেছি।
এছাড়াও আমরা আরব বিস্তারিত আলোচনা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
শবে বরাতের রোজা কবে এবং শবে বরাতের রোজা রাখার নিয়ত ও আপনাদেরকে এই আর্টিকেলে দেয়া হবে।
হাদিসে রয়েছে যে, এই রাতে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মহান আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন।
মাগরিব থেকে আল্লাহ তায়ালা রাব্বুল আলামিন রহমত নিয়ে তার বান্দাদের রহমত দান করার জন্য প্রথম আসমানে আসেন।
এবং যারা পবিত্র মনে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।
এবং তাওবা করতে পারেন মহান আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করেন।
হাদিসের ভাষ্যমতে এটা স্পষ্ট যে, এই রাত হচ্ছে আল্লাহর কাছে পাওয়ার রাত, চাওয়ার রাত।
এই রাত হচ্ছে আল্লাহর দরবারে কাঁদার রাত।
এ রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গোনাহ মাফ করার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
তাই যত বেশি সম্ভব ইবাদত-বন্দেগি করার রাত এটি।
এছাড়াও বড় বড় আলেমরা বলেন, শবে বরাতের মূল কাজ হচ্ছে দিনে রোজা রাখা এবং রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল ব্যক্তি দ্বারা পুনরায় এবাদত করা শক্তি রাখে না, তাই তারা শবেবরাতের তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোর রাতে উঠে যাবেন।
এতে করে তাও যদি নামাজ আদায় করা যাবে এবং মহান আল্লাহতালা সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সঠিকভাবে ইবাদত করা সম্ভব।
কেননা তাহাজ্জুদের সময় হচ্ছে দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়।
শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখবেন?
হাদীস শরীফের মাধ্যমে শবে বরাতের রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাতে ইবাদত কর এবং দুনিয়া রোজা রাখো।
তাহলে শবে বরাতের রোজা একটিও রাখা যাবে। তবে বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে এসেছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন।
তাই আপনারা চাইলেও শবে বরাতের রোজা হিসেবে এই তিনটি রোজা রাখতে পারেন।
এ বিষয়ে অন্য একটি হাদিসে উল্লেখ্য রয়েছে যে, হযরত উম্মে সালমা ও আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- শাবান মাসে প্রায় পুরোটা সময়ই রাসূলুল্লাহ (সা.) রোজা রাখতেন। ( তিরমিজি- ১৫৫,১৫৬,১৫৯)
সে হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা অধিক সওয়াবের কাজ।
শবে বরাতের রোজার নিয়ত বাংলায়
আরবি নিয়তঃ
“নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা‘আ-লা- রাক‘আতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার”।
বাংলায় নিয়তঃ
“ আমি ক্বেবলামূখী হয়ে আল্লাহ্ এর উদ্দেশ্যে শবে বরাতের দু‘রাক‘আত নফল নামায আদায়ের নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবার”।
শবে বরাতের নামায দু‘রাকাত করে যত বেশী পড়া যায় তত বেশী ছওয়াব।
নামাযের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ।
আর পড়ুনঃ
শবে বরাতের রোজা কয়টি FAQS
মূলত শবে বরাতের রোজা কয়টি সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই. আপনারা চাইলে শবে বরাতের পবিত্র দিনে রোজা রাখতে পারেন অথবা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর আদর্শ মেনে তার মত রোজা রাখতে পারেন।
“নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা‘আ-লা- রাক‘আতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার”।
রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন।
উপসংহার
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ শবে বরাতের রোজা কয়টি এবং আমাদের প্রিয় নবী কিভাবে রোজা রাখার পরিকল্পনা করতেন এবং রোজা রাখতেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
এছাড়াও যদি আপনারা শবেবরাত সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন করতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে।
এ ধরনের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলগুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং আমাদের ওয়েবসাইটের সকল আপডেটগুলো পেতে ফেসবুক পেইজে জয়েন করুন।
আর পড়ুনঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ কোনগুলো?
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।