প্রিয় পাঠকবৃন্দ আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া কোনগুলো আপনারা জানেন কি? আপনারা যদি এ বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। মহান আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি জীবকে তার ইবাদাতের উসিলায় তৈরি করেছেন। মানুষ আল্লাহ তায়ালার প্রতিনিধি। আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। সকল প্রশংসা তাই মহান আল্লাহ তাআলার।
মানুষ নানান সময় নানান ধরনের বিপদে পড়ে থাকে। সেসময় আল্লাহ তায়ালার হুকুম গুলো সঠিকভাবে পালন করলে তারা বিপদ থেকে উদ্ধার হতে পারে। আল্লাহ তাআলা তার এবাদত করার জন্য মানুষকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। হযরত মুসা (আ.) যেভাবে আল্লাহতালার কাছে দোয়া করেছিলেন। এবং আল্লাহ তা’আলা সেই দোয়া কবুল করেছিলেন। সে দোয়াটি কোনটি আপনারা কি জানেন?
হযরত মুসা আলাই সালাম নবুয়তের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর তার সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার উদ্দেশ্যে হযরত মুসা(আ.) আল্লাহতালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন। যে দোয়াগুলো উম্মতে মুহাম্মাদির শিক্ষা ও অনুসরণ-অনুকরণের জন্য মহান আল্লাহ তাআলা কোরআনে তুলে ধরেছেন।
Content Summary
আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া – janbahone uthar dua bangla
رَبِّ اشۡرَحۡ لِیۡ صَدۡرِیۡ – وَ یَسِّرۡ لِیۡۤ اَمۡرِیۡ – وَ احۡلُلۡ عُقۡدَۃً مِّنۡ لِّسَانِیۡ یَفۡقَهُوۡا قَوۡلِیۡ – وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَهۡلِیۡ هٰرُوۡنَ اَخِی اشۡدُدۡ بِهٖۤ اَزۡرِیۡ – وَ اَشۡرِکۡهُ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ کَیۡ نُسَبِّحَکَ کَثِیۡرًا وَّ نَذۡکُرَکَ کَثِیۡرًا اِنَّکَ کُنۡتَ بِنَا بَصِیۡرًا
উচ্চারণ : রাব্বিশরাহলি সাদরি, ওয়া ইয়াসসিরলি আমরি, ওয়াহ্লুল উক্বদাতাম মিল্লিসানি ইয়াফকাহু কাওলি, ওয়াঝআললি ওয়াযিরাম মিন আহলি হারুনা আখিশদুদ বিহি আযরি, ওয়াশরিকহু ফি আমরি কায় নুসাব্বিহাকা কাছিরা ওয়া নাজকুরাকা কাছিরা ইন্নকা কুংতা বিনা বাসিরা।’
অর্থ : ‘হে আমার রব, আমার বুক প্রশস্ত করে দিন আর আমার জন্য আমার কাজকে (দায়িত্ব) সহজ করে দিন।
আর আমার জিহ্বার (কথা বলার) জড়তা দূর করে দিন যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।
আর আমার পরিবার থেকে আমার জন্য একজন সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দিন, আমার ভাই হারূনকে, তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন।
এবং তাকে আমার কাজে শরিক করুন ‘যাতে আমরা বেশী করে আপনার তাসবীহ পাঠ করতে পারি এবং অধিক পরিমাণে আপনাকে স্মরণ করতে পারি।
নিশ্চয়ই আপনিই তো আমাদের সব কিছু দেখেন।’ (সুরা ত্বহা : আয়াত ২৫-৩৫)।
আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.) এর এই দোয়াটি কবুল করেছিলেন।
এবং ফেরাউনের বিপক্ষে তার বিজয় দান করেছিলেন।
এই দোয়াটি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কোরআন মজীদের বর্ণনায় এভাবে তুলে ধরা হয়েছে-
قَدْ أُوْتِيْتَ سُؤْلَكَ يَا مُوْسَى
‘হে মুসা! তুমি যা যা চেয়েছ, সবই তোমাকে দেওয়া হলো।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ৩৬)।
আরও পড়ুনঃ
বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ কে?
আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার ৫টি উপায়
আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার ৫টি উপায় হচ্ছে আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলা, নিয়মিত নামাজ পড়া এবং দোয়া করা।
প্রথম দোয়া- رَبِّ اشْرَحْ لِىْ صَدْرِى : হে আমার পালনকর্তা! আমার বুক উন্মোচন করে দিন।
অর্থাৎ নবুয়তের বিশাল দায়িত্ব বহনের উপযুক্ত জ্ঞান ও দূরদর্শিতার উপযোগী করে দিন এবং আমার হৃদয়কে এমন প্রশস্ত করে দিন।
যাতে তা উম্মতের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে প্রাপ্ত অপবাদ ও দুঃখ-কষ্ট বহনে তা সক্ষম হয়।
দ্বিতীয় দোয়া- وَيَسِّرْلِىْ اَمْرِىْ : আমার কাজ (দায়িত্ব পালন) সহজ করে দিন।
অর্থাৎ নবুয়তের কঠিন দায়িত্ব বহনের কাজ আমার জন্য সহজ করে দিন।
কেননা আপনার অনুগ্রহ ছাড়া কারো পক্ষেই কোনো কাজ বা দায়িত্ব সহজ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
স্বীয় অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে মূসা (আঃ) বুঝতে পেরেছিলেন যে, ফেরাঊনের মত একজন দুর্ধর্ষ, যালেম ও রক্ত পিপাসু সম্রাটের নিকটে গিয়ে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা মোটেই সহজসাধ্য ব্যাপার নয়, আল্লাহর একান্ত সাহায্য ব্যতীত।
তৃতীয় দোয়া- وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّنْ لِّسَانِىْ يَفْقَهُوْا قَوْلِىْ : আমার জিহ্বার (কথা বলার) জড়তা দূর করে দিন, যাতে লোকেরা (সহজে) আমার কথা বুঝতে পারে’।
কেননা রেসালাত তথা দ্বীনের দাওয়াতের জন্য রাসুল ও দাঈদের স্পষ্টভাষী ও বিশুদ্ধভাষী হওয়া একান্ত আবশ্যক।
চতুর্থ দোয়া- وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَهۡلِیۡ هٰرُوۡنَ اَخِی اشۡدُدۡ بِهٖۤ اَزۡرِیۡ : আর আমার পরিবার থেকে আমার জন্য একজন সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দিন, (যেমন) আমার ভাই হারূনকে, তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন।
দ্বীন ও ইসলামের দায়িত্ব পালনে উত্তম সাহায্যকারীর প্রার্থনা করাও জরুরি।
যেমনটি রেসালাতের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর ভাই হজরত হারুন আলাইহিস সালামকে সাহায্যকারী হিসেবে চেয়েছিলেন।
পঞ্চম দোয়া- وَ اَشۡرِکۡهُ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ کَیۡ نُسَبِّحَکَ کَثِیۡرًا وَّ نَذۡکُرَکَ کَثِیۡرًا اِنَّکَ کُنۡتَ بِنَا بَصِیۡرًا : এবং তাকে আমার কাজে শরিক করুন ‘যাতে আমরা বেশি করে আপনার তাসবিহ পাঠ করতে পারি এবং অধিক পরিমাণে আপনাকে স্মরণ করতে পারি, নিশ্চয়ই আপনিই তো আমাদের সব কিছু দেখেন।’
একজন মুসলিম হয়ে আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করা প্রতিটি মুসলিমের উচিত।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন
আল্লাহ তা’আলা কখনোই কাউকে ফিরিয়ে দিবেন না। একদিন না একদিন তার কাছে তার মুনাজাতের সাহায্যের হাত পৌঁছে যাবে।
আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা (আ.) এর একনিষ্ঠতা ও আবেদনগুলো সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করেছিলেন।
আর এভাবে তাঁকে সুসংবাদ দিয়েছিলেন-
قَدْ أُوْتِيْتَ سُؤْلَكَ يَا مُوْسَى
‘হে মুসা! তুমি যা যা চেয়েছ, সবই তোমাকে দেওয়া হলো।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ৩৬)
আল্লাহ তাআলা আমাদের উদ্দেশ্যে অর্থাৎ আমাদেরকে বোঝানোর জন্য মুসা (আ.) এর প্রার্থনা দোয়াটি কোরআনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুনঃ
পৃথিবীতে কয়টি মুসলিম দেশ আছে?
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে?
আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া FAQS
হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দোয়া করেছিলেন। সেটি হচ্ছে-
رَبِّ اشۡرَحۡ لِیۡ صَدۡرِیۡ – وَ یَسِّرۡ لِیۡۤ اَمۡرِیۡ – وَ احۡلُلۡ عُقۡدَۃً مِّنۡ لِّسَانِیۡ یَفۡقَهُوۡا قَوۡلِیۡ – وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَهۡلِیۡ هٰرُوۡنَ اَخِی اشۡدُدۡ بِهٖۤ اَزۡرِیۡ – وَ اَشۡرِکۡهُ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ کَیۡ نُسَبِّحَکَ کَثِیۡرًا وَّ نَذۡکُرَکَ کَثِیۡرًا اِنَّکَ کُنۡتَ بِنَا بَصِیۡرًا
উচ্চারণ : রাব্বিশরাহলি সাদরি, ওয়া ইয়াসসিরলি আমরি, ওয়াহ্লুল উক্বদাতাম মিল্লিসানি ইয়াফকাহু কাওলি, ওয়াঝআললি ওয়াযিরাম মিন আহলি হারুনা আখিশদুদ বিহি আযরি, ওয়াশরিকহু ফি আমরি কায় নুসাব্বিহাকা কাছিরা ওয়া নাজকুরাকা কাছিরা ইন্নকা কুংতা বিনা বাসিরা।’
আপনি একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। নামজের পর আপনি আল্লহর কাছে সাহায্যে চাইতে পারেন।
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলটি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া কোনটি সে বিষয়ে জানানোর জন্য আপনাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা কোন দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য পাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আপনারা অবশ্যই কোনো ধরনের বিপদ কিংবা অন্য কোন কারণে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে এই সকল দোয়া গুলো পড়বেন।
আল্লাহ আমাদের সকলকে বেশি বেশি এই দোয়াটি পড়ার তৌফিক দান করুক। আমিন।
আপনাদের যদি এই আর্টিকেলের বিষয়সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
অনলাইন থেকে ঘরে বসে টাকা আয়, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফেসবুক মার্কেটিং, ফ্রিল্যান্সিং, ব্লগিং এর মত অনলাইন প্লাটফর্ম এ কাজ করতে হয় কিভাবে সে সম্পর্কিত আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
আপনারা চাইলে সে সকল আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন।
সেই সাথে আমাদের ওয়েবসাইট সংক্রান্ত সকল আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।