প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের বিপদের দোয়া কোনটি সে সম্পর্কে জানাবো। আপনারা বিপদে পড়লে কোন দোয়া পরবেন এবং এই দোয়ার প্রজিলত সম্পর্কে আপনাদেরকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে জানানো হবে।
পুরো পৃথিবীতে মানুষ প্রতিনিয়ত নানান ধরনের বিপদে পড়ছে। আর আপনি যে বিপদে পড়বেন এবং আল্লাহ তাআলা আপনার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন।এই বিপদের সময় অনেক মানুষই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
এটিকে অসুবিধা মনে করে নানান ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে লিপ্ত হয়ে যান এমনকি এমন অনেক মানুষ রয়েছে বিপদের সময় মাথা কাজ না করাতে আত্মহত্যা করে বসেন। কিন্তু মানুষের জীবনে বিপর্যয় মন আসবে তেমনি সেই বিপদের একটি সমাধান আসবে।
দোয়া কবুল হওয়ার সূরা কোনগুলো?
যেকোনো বিপদের সময় আল্লাহ তায়ালাকে অবশ্যই আপনার স্মরণ করতে হবে। এবং আল্লাহ ও আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদেরকে কিছু দোয়া পাঠ করতে বলেছেন। আপনারা আল্লাহতালা দেখানো পথে এবং সেই দোয়া গুলো পাঠ করলে অবশ্যই আপনাদের বিপদ খুব সহজেই চলে যাবে।
Content Summary
বিপদের দোয়া সমুহ
আপনারা জীবনের যেকোন বিপদে আল্লাহ তায়ালাকে অবশ্যই স্মরণ করবেন।
এবং আজকে আপনাদেরকে আমি কিছু উল্লেখিত দোয়া সম্পর্কে জানাবো।
যেগুলো আপনারা আপনাদের কঠিন এবং সহজ যে কোন বিপদের সময় পাঠ করবেন।
চলুন দেখে নেয়া যাক কয়েকটি দোয়া।
> সুরা আল-ফাতেহা
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ – الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ – مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ – إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ – اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ – صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
এ সুরাটির বিশেষ একাধিক নাম হলো- আল-কাফিয়া বা যথেষ্টকারী, আশ-শাফিয়া বা আরোগ্যকারী।
এটি আল্লাহর গুণ-প্রশংসার সুরা হওয়ায় এ সুরার আমলের দ্বারা ঝাঁড়-ফুক করাও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
> اَللهُ… اللهُ رَبِّىْ لَا اُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু… আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ!… আল্লাহ তুমিই আমার প্রভু। আমি তোমার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (আবু দাউদ)
> لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّى كَنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বলিমিন।’
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি)
> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদ কিংবা দুশ্চিন্তা ও পেরেশানিতে উত্তীর্ণ হতে তাঁর উম্মতকে এ দোয়া পড়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন-
حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْل – نِعْمَ الْمَوْلِى وَ نِعْمَ النَّصِيْر
উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নেমাল ওয়াকিল; নেমাল মাওলা ওয়া নেমান নাছির।’
অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি কতই না উত্তম কাজ সম্পাদনকারী। আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।’
> لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلَّا بِالله
উচ্চারণ : ‘লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।’
অর্থ : ‘আল্লাহর সাহায্য ব্যতিত কোনো উপায় নেই আর কোনো ক্ষমতাও নেই।’
এই দোয়াটি জান্নাতের গোপন ভান্ডার সমূহের একটি দোয়া।
নানান ধরনের বিপদ এবং সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য বহু মানুষ এটির মাধ্যমে উপকার পেয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ
নেক সন্তান লাভের দোয়া জানেন কি?
বিপদের দোয়া আরবি
প্রতিনিয়ত বিপদের সময় আরো কোন কোন দোয়া গুলো আপনারা পাঠ করতে পারেন সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
> أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ – أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ; আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’
অর্থ : ‘আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।’
> لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ، وَرَبُّ الْأَرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আ’রশিল কারিম।’
অর্থ : ‘আল্লাহ্ ব্যতিত সত্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি অতি মহান, অতি সহনশীল। আল্লাহ ব্যতিত কোনো সত্য ইলাহ বা উপাস্য নেই, তিনি বিশাল আরশের মালিক।
আল্লাহ ব্যতিত সত্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি আসমান-জমিনের এবং মহান আরশের মালিক।’ (বুখারি)
> اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِن ضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ দাইনি ওয়া ক্বাহরির রিজাল।’ (তিরমিজি)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।’ ((বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও মিশকাত)
বিপদের সময় পড়ার দোয়া
> হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো দুঃখ-কষ্ট বা চিন্তা, অস্থিরতা তথা হতাশাগ্রস্ত হতেন তখন বলতেন-
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ
উচ্চারণ : ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ।
অর্থ : ‘হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য চাই।’ (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)
> হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বিপদগ্রস্তের দোয়া হচ্ছে-
اَللّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُوْ فَلَاتَكِلْنِىْ اِلَي نَفْسِيْ طَرْفَةَ عَيْنٍ وَ أَصْلِحْ لِيْ شَانِي كُلُّهُ لا اِلَهَ اِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরঝু ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি; ত্বারফাতা আইন; ওয়া আসলিহলি শানি কুল্লুহু; লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা। (আবু দাউদ, মিশকাত)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার দয়া কামনা করি। তুমি আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও আমার নিজের হাত ছেড়ে দিও না।
বরং তুমি স্বয়ং আমার সমস্ত ব্যাপার ঠিক করে দাও। তুমি ব্যতীত কোনো মা’বুদ নাই।
আরও পড়ুনঃ
বিপদের দোয়া FAQS
আল্লাহ তায়ালা বিপদে পরলে অনেক গুলো দোয়া পড়তে পারবে সে সুযোগ মানুষকে করে দিয়েছেন। তার মধ্যে একটি দোয়া নিচে সেয়া হল-
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ
উচ্চারণ : ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ।
অর্থ : ‘হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য চাই।’ (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে বিপদের দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে যে সকল দোয়া গুলো আপনাদেরকে প্রদান করেছি সেগুলো আপনারা বিপদে পড়লে অবশ্যই পাঠ করবেন।
আমাদের সকলেরই উচিত আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য তার দেখানো পথে চলা।
অবশ্য পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক এবং সকল ধরনের বিপদ থেকে উদ্ধার করুক।আমিন।
আপনাদের যদি এই আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন অথবা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আপনাদের ঘরে বসে কিভাবে অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারেন সে সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়েছে।
আপনারা যে সকল আর্টিকেল পড়তে পারেন এবং শেয়ার করব ধারা আপনারা নিজেদের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন।
সেইসাথে আমাদের ওয়েবসাইট গুলো খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে ফলো করুন।
ধন্যবাদ।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।