সুপ্রিয় পাঠকগণ টেনশন দূর করার দোয়া কোনটি সে বিষয়ে জানার জন্য আপনারা অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজকের এয়ারটেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে টেনশন দূর করার জন্য আপনারা কোন দোয়া এবং কি কি করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের চিন্তা কিংবা টেনশন থাকে। একটি হচ্ছে ভালো চিন্তা ভাবনা বা ভাল কিছু নিয়ে টেনশন করা আবার আরেকটি হচ্ছে খারাপ টেনশনের মধ্যে ডুবে থাকা। এখন আমরা মূলত যে সকল খারাপ টেনশন গুলো রয়েছে সেগুলো থেকে বাচার দোয়া খুঁজে থাকি।
মূলত এ ধরনের উল্টাপাল্টা টেনশনের কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয় শরীরে। তাই আপনাদের কে আজকে এই সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি গঠন করা হয়েছে।
Content Summary
মানসিক টেনশন দূর করার দোয়া – হতাশা দূর করার দোয়া
মানুষের ছোট এই জীবনে পাওয়া না পাওয়ার বেদনায় হতাশ হয়ে যাওয়া কিংবা মানসিক চাপ অনুভব করা নতুন কিছু নয়।
মানুষ জীবনে অনেক ধরনের বিপদ আপদ এবং নানান ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে কিন্তু একজন ঈমানদারের হতাশ হওয়া কখনোই মানায় না।
বরং সকল অবস্থায় আল্লাহ তাআলার উপর আস্থা রাখা আছে একজন প্রকৃত ঈমানদার এর কাজ।
আমাদের সকলকে একটি বিষয় মনে রাখা হয়েছে যে, আমরা যে কোন সময় যেকোনো খারাপ-ভালো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারি।
পবিত্র কুরআন মজিদে এমন নির্দেশনা এসেছে অনেকবার।
আমাদেরকে যত বিপদ আপদ দিয়েছেন মহান আল্লাহ তালায় দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য।
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবো সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে; আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’- নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৫-১৫৬)
তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে কোন পরিস্থিতিতে হতাশ অথবা মানসিক চাপে ভেঙে না পড়ে মহান আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় এবং কোরআন সুন্নাহর আমল করা অত্যন্ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ
কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত করা – টেনশন দূর করার উপায় – duschinta dur korar dua
একজন মুমিন হিসেবে কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে মোটামুটি আমাদের সকলের জানা আছে।
মহান আল্লাহ প্রদত্ত এই গ্রন্থটি আমাদের কত উপকারে আসে সেটি আমরা সকলেই খুব ভালোভাবে জানি।
টেনশন এবং হতাশা অথবা মানসিক চাপ কমানোর জন্য পবিত্র কুরআন মজীদের তিলাওয়াতের বিকল্প অন্য কিছুই নেই।
কুরআনে প্রদত্ত আল্লাহ তাআলার মধুর বাণী গুলো প্রতিটি মানুষের মন ছুয়ে যাবে।
এছাড়াও কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে মানুষের অন্তরের প্রফুল্লতার অন্যতম উৎস।
মহান আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত এই কোরআন মাজিদ তিলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের মনের প্রফুল্লতা ও মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়।
দুশ্চিন্তা এবং হতাশা থেকে মানুষকে মুক্ত করে।
দোয়া ও জিকির করা
হতাশা কাটাতে এবং মনে প্রশান্তি পেতে বেশি বেশি আল্লাহর জিকির ও দোয়া করা।
কেননা দোয়া এবং জিকিরের মাধ্যমে মনে প্রশান্তি আসে বলে ঘোষণা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা-
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; ‘জেনে রাখ! আল্লাহর জিকির দ্বারা অন্তরে স্থিরতা ও শান্তি আসে।’ (সুরা রাদ : আয়াত ২৮)
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো দুঃখ-কষ্ট বা চিন্তা, অস্থিরতা তথা হতাশাগ্রস্ত হতেন তখন বলতেন-
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ
উচ্চারণ : ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ।
অর্থ : ‘হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য চাই।’ (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)
لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّى كَنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বলিমিন।’
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চিন্তা ও পেরেশানির সময় এ বিশেষ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন। তাহলো-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ ضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউযু বিকা মিন দ্বালা’য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে আপনার আশ্রয় চাই, অপারগতা ও অলসতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই, কৃপনতা ও ভীরুতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই আর ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকেও আপনার আশ্রয় চাই।
আরও পড়ুনঃ
টুইটার অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান কোনগুলো?
মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া কোনগুলো?
নামাজে মনোযোগী হওয়া
মানুষের জীবনের নানান ধরনের সমস্যা আসবে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আল্লাহতালার আপনাকে অবশ্যই সঠিক ভাবে পালন করতে হবে।
আপনি যদি বিপদের সময় আল্লাহ তায়ালাকে বলে যান তাহলে কখনো আপনি বিপদ থেকে উদ্ধার হতে পারবেন না।
বিপদ থেকে উদ্ধার একদিন হয়ে যাবে কিন্তু আল্লাহতালার প্রতি আপনার যে ভালোবাসা টি নেই সে বিষয়ে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
সকল এমনিতে বেশি বেশি নামাজ পড়ার চেষ্টা করবেন আর যখন আপনারা বিপদে পড়বেন তখন আরো বেশি করে নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন।
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন-
’তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে আমার সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৫)
হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতেন তখন নামাজ আদায় করতেন।’ (আবু দাউদ)
হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করা
আপনার জীবনে যত অস্থিরতা ও হতাশা থাকুক না কেন আপনি হাসিখুশি থাকার কোনো বিকল্প নেই।
যদি কোন হালাল কাজ করতে আপনার মন শান্তি পায় তাহলে আপনি সে কাজটি অভ্যাসে পরিণত করুন।
তবে একটি কথা মনে রাখবেন কোন ধরনের হারামির সঙ্গে নিজেকে জড়িত করবেন না সেটা যতটাই শান্তি আপনাকে দেয় না কেন।
হতাশা মুক্ত থাকার জন্য হাসিখুশি থাকবেন, সঠিকভাবে পরিচালনা করবেন এবং হালাল বিনোদন গুলো অবশ্যই গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুনঃ
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত?
টেনশন দূর করার দোয়া FAQS
يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ
উচ্চারণ : ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ।
অর্থ : ‘হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য চাই।’ (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)
ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ সূরা পড়লে টেনশন দূর হয়।
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকেরে আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে টেনশন দূর করার দোয়া এবং উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে এবং আপনারা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নিজেদের টেনশন কিভাবে দূর করবেন তা শিখিয়ে গিয়েছেন।
তবে আপনাদের এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন অথবা মতামত থাকে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
কিভাবে অনলাইন থেকে আপনারা ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে পারেন সে বিষয়ে আপনাদের কে আমাদের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
আপনারা চাইলে সে সকল আর্টিকেলগুলো পড়ে নিজেদের অনলাইন ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
সেই হিসেবে আমাদের ওয়েবসাইটে সকল তথ্য পেতে চোখ রাখতে হবে আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।