প্রিয় পাঠকগণ সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আপনার কোনো ঘনিষ্ঠ সহযোগী মুনাফিকী আচরণের মধ্যে থাকে তাহলে তাকে কিভাবে আপনি ধীরে ধীরে ফিরে আনবেন সে সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব।
আপনার যদি ঘনিষ্ঠ মানুষ কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধু মুনাফিকী আচরণ করতে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটি আপনার কাছে ভালো লাগবে না। তাই আপনারা কিভাবে আপনাদের ঘনিষ্ঠ মানুষটিকে ইসলামের পথ দেখাবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করব আজকের এই আর্টিকেলের।
আপনারা সকলেই জানেন একটি বিষয় আল্লাহ তাআলা সকলকেই খুবই ভালোবাসেন। আমরা আল্লাহ তাআলার খুবই প্রিয় তাই আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাই অবশ্যই আমরা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।
Content Summary
সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায় কি? – What is the way to eliminate hypocritical behavior of classmates?
এখন তোমার সহপাঠী কিংবা তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুটির এই আচরণকে কিভাবে তুমি ঠিক করতে পারো তার জন্য তোমাকে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
১। সহপাঠীর কোন কোন আচরণে মুনাফিকের লক্ষণ তার উল্লেখ।
২। উক্ত আচরণগুলো কেন ক্ষতিকর তার ব্যাখ্যা।
৩। উক্ত বিষয়ের কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি।
৪। সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায়।
৫। সহপাঠীকে মুমিন হওয়ার জন্য তোমার পদক্ষেপ।
আমরা সকলেই জানি নিফাক শব্দের অর্থ হচ্ছে ভন্ডামি, কপটতা, প্রতারণা, দ্বিমুখী নীতি ইত্যাদি।
আমরা যদি ইসলামী পরিভাষায় বলে তাহলে মুখে ঈমান আনার সত্বেও অন্তরে অবিশ্বাস করাকে বলা হয় নিফাক।
মূলত সমাজের মধ্যে নিজেদের খুবই ভালো দেখানোর জন্য মুনাফিকরা এ ধরনের কাজ করে থাকে।
এ সকল ব্যক্তিরা মুনাফিক এবং মুসলিম সকল মানুষের সাথেই মিশে থাকে।
সকলের সামনে তারা নিজেদেরকে একজন মুসলিম হিসেবে দাবী করে।
অথচ গোপনে তারা তাদের দলের কাছে ইসলামকে অস্বীকার করে।
নাবিক এর বৈশিষ্ট্য কোনগুলো
মুনাফিকের সর্বমোট তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
- মিথ্যা কথা বলা
- কথা দিয়ে কথা না রাখা
- আমানতের খেয়ানত করা
মুনাফিকদের এসকল আচরণগুলো যেমন সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট করে তেমনি ইসলামকে সমাজের চোখে খুবই নিম্ন আকারে ধারণ করে।
নিফাক হচ্ছে জঘন্যতম একটি পাপ।
এর কারণে মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কাজটি করার ফলে মানুষ অন্যায় এবং অশ্লীল কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।
যার কারণে একজন মানুষের মধ্যে নৈতিক এবং মানসিক মূল্যবোধ থাকে না। এরা সমাজের মানুষের সাথে নানান বিবাদে জড়িয়ে যায়।
যার কারণে সমাজের শান্তি নষ্ট হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ
মুনাফিক সম্পর্কে হাদিস
মুনাফিকরা হচ্ছে ইসলামের চরম শত্রু। ইসলাম এবং মুসলমানদের গোপন কথা এবং দুর্বলতাকে অন্যদের সামনে প্রকাশ করে দেয়।
সমাজের মধ্যে নানান ধরনের অশান্তির সৃষ্টি করাই এদের কাজ।
উক্ত বিষয়ের কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতিসমূহ-
- মুনাফিকদের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
وَاِذَا لَقُوا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا قَالُٓوْا اٰمَنَّا وَاِذَا خَلَوْا اِلٰى شَيٰطِيْنِهِمْ قَالُٓوْا اِنَّا مَعَكُمْ اِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُوْنَ
অর্থ: “যখন তারা (মুনাফিকরা) ঈমানদারদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন তারা গোপনে তাদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি। আমরা শুধু তাদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করে থাকি।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৪)
- মুনাফিকদের চরিত্র সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন-
وَاللّٰهُ يَشْهَدُ اِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَكٰذِبُوْنَ
অর্থ: “আর আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, মুনাফিকরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী। ” (সূরা আল-মুনাফিকুন, আয়াত ১)
- রাসুলুল্লাহ (স.) বহু হাদিসে মুনাফিকদের চরিত্র বর্ণনা করেছেন। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
اٰيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ: اِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَاِذَا وَعَدَ اَخْلَفَ، وَاِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ
অর্থ: “মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং যখন তার নিকট কোন কিছু গচ্ছিত রাখা হয়, তখন তার খিয়ানত করে।
- নিফাকের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
اِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ فِى الدَّرْكِ الْاَسْفَلِ مِنَ النَّارِ
অর্থ: ” নিশ্চয়ই মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।” (সূরা আন-নিসা, আয়াত ১৪৫)
সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায়
সব সময় তোমার সহপাঠী কিংবা বন্ধুকে তুমি ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবে। এছাড়াও তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে –
- সে যেন সদা সত্য কথা বলে, মিথ্যা বলার চেষ্টা করলেও তুমি তাকে বাধা দেবে।
- অন্ততপক্ষে তোমার সামনে যদি কাউকে কথা দেয় যেকোনোভাবে সে কথা রাখানোর চেষ্টা করবে।
- সে যদি আমানত গ্রহণ করে অবশ্যই সেই আমানতের খেয়ানত থেকে তাকে বিরত রাখবে।
মুনাফিকরা মূলত দুনিয়াতে ঘৃণিত এবং নিন্দিত থাকে।
আখেরাতেও তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।
সহপাঠীকে মুমিন হওয়ার জন্য ইসলামের সঠিক পথ অনুসরণ এবং কুফল এর পরিণতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাবে।
তাকে সঠিক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে মুনাফিককে কেউ বিশ্বাস করে না। মুনাফিকের স্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।
হাদীসগুলো মুনাফিকদের নির্দেশনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো তাকে বর্জন করতে বলবে।
অন্ততপক্ষে ঈমানকে ধারণ করে মৃত্যুবরণ করলে কি কি সুবিধা হবে তার জন্য সেগুলো বুঝিয়ে বলবে।
এভাবে তোমরা নিজেদের সহপাঠী কে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ
টুইটার অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান কোনগুলো?
মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া কোনগুলো?
সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায় FAQS
ইসলামের সঠিক দিক নির্দেশনা গুলো সহপাঠী কে সঠিক ভাবে বোঝাতে হবে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে সহপাঠির মুনাফিকী আচরণ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভাল লেগেছে এবং আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
তবুও যদি আপনাদের এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
অনেকে চাচ্ছেন অনলাইনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে কিন্তু কীভাবে করবেন সে বিষয়ে কোনো সঠিক ধারণা পাচ্ছেন না।
তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এ-সংক্রান্ত আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন।
আমাদের রয়েছে সংক্রান্ত সকল আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।