কবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেয়া হয়? এই সম্পর্কে জানতে গুগোল করে থাকেন অনেকে। তবে প্রশ্নটি অনেক পুরনো হলেও সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কুইজ প্রতিযোগীতার ৪৩ তম দিনের কুইজের একটি প্রশ্ন এটি।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা টি হচ্ছে পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানী সরকারের দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা।
তৎকালীন স্বৈরাচারী পাকিস্তানি সরকার আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বাধীনতাকামী ৩৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
তবে স্বৈরাচারী পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে জনসম্মুখে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠের বাঙালি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামী।
Content Summary
কবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়?
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পাকিস্তান শাসন আমলে পাকিস্তানী শাসকদের স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা।
তৎকালীন পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্য বাঙালি নেতাকর্মীরা ভারতের সাথে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
এই মামলাটির পূর্ণ নাম ছিল “রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা “।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আনুষ্ঠানিক নাম কি?
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে “রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা”।
কেন এই মামলাটির নাম কেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা?
“রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা” নামের মামলাটিকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বলার কারণ হচ্ছে পাকিস্তানী শাসকদের ভাবনা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল।
তাই মামলার তফসিলে বা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল যে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় কথিত ষড়যন্ত্রটি শুরু হয়েছিল।
তাই এই মামলাটি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হিসাবেই বেশি পরিচিতি পায়।
কবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেওয়া হয়?
১৯৬৯ সালের ৫ই জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের পর পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিবুর রহমানসহ বন্দিদের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে।
অতঃপর এই আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হয়। অবস্থা অবনতি বুঝতে পেরে স্বৈরাচারী পাকিস্তানি সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেন।
ফলে স্বাধীনতা প্রিয় শান্তিকামী মুক্তিপাগল বাঙালি কারফিউ ভঙ্গ করে, পুলিশ-ইপিআরের গুলিবর্ষণ ও বহু হতাহতের মধ্য দিয়ে তা গণঅভ্যূত্থানে রূপ নেয়।
ফলে এক সময় বাধ্য হয়েই পাকিস্তানি সরকারকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে হয়।
স্বৈরাচারী পাকিস্তানি সরকারের অন্য একটি মামলায় ১৯৬৬ সালের ৮ই মে থেকে কারাবন্দি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
তবে তিনি মুক্তি পেলেও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জেলগেট থেকে তাঁকে আবারও গ্রেফতার করা হয় এবং ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুনরায় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়।
পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন শুরু হয় মামলার বিচার কাজ।
স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশি সর্বসাধারণের গণআন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুসহ মামলার আসামিদের মুক্তি দেওয়া হয় বা দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।
কবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেয়া হয় FQAS
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেয়া হয় ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি।
বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে জাগ্রত করা নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেয়া হয় ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি ছিল মোট ৩৫ জন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার শুরু হয় ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ১৯৬৮ সালে এই মামলার বিচার কাজ হয়।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার হয়।
উপসংহার,
আশা করি আপনি কবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের মুক্তি দেয়া হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস অনেক বড়, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে হাজার ১৯৭১ সাল পর্যন্ত নানা সময়ে স্বাধীনতার লক্ষে বাঙালি জাতির ব্যাপক কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়।
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সব জায়গায় পাকিস্তানি স্বৈরাচারী সরকার বাঙ্গালীদের দিয়েছে অথচ বাংলাদেশকে শাসন করে বাংলাদেশের উপরে অত্যাচার করে আসছিল।
মাতৃভাষা বাংলাকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য অনেক সংগ্রামী নেতাকে জীবন দিতে হয়েছে এবং কারাবরণ করতে হয়েছে।
আসুন আরো একবার শ্রদ্ধাভরে আমরা সবাইকে স্মরণ করি।
এই সম্পর্কে আপনার আরও জানার থাকলে কমেন্ট করুন এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
আরও পড়ুনঃ
অসুস্থতার জন্য অফিসে ছুটির আবেদন
পরীক্ষার জন্য অফিসে ছুটির আবেদন
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।