ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত? আপনি জানেন কি। আজ আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানব ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত। এবং ফুরাত নদীর সকল তথ্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
ফোরাত নদী দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার একটি নদী।
এটি তুরস্কতে উৎপত্তি লাভ করে সিরিয়া ও ইরাক এর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দজলা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এবং শাত-আল-আরব নামে পারস্য উপসাগরের পতিত হয়েছে এই বিশাল নদীটি।
মূলত ফুরাত ও দজলা নদীর পানি ব্যবহার করে প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতা গুলো আস্তে আস্তে বিকাশ লাভ করেছিল।
Content Summary
ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত
গ্রিক নাম মেসোপটেমিয়া এই স্বাক্ষর বহন করেছে শব্দটির আক্ষরিক অর্থ “দুই নদীর মাঝে”।
তাছাড়াও এখানে প্রাচীন সুমেরীয়, ব্যাবিলনিয় এবং আসিরিয় সভ্যতাগুলি বিকাশ লাভ করেছিল।
ফুরাত নদী টি ২৭শ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এর অববাহিকার আয়তন প্রায় ৪ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
এর মোট অববাহিকার মাত্র ৩০ শতাংশ তুরস্কে অবস্থিত হলেও এর পানির ৯০% তুরস্কের উচ্চভূমি থেকে হয়ে থাকে।
তুরস্কের কোরাসুয়ু নদী, মুরাদ নদী এবং তুরস্কের আরো অনেকগুলো নদীর পূর্ব মধ্যে তুরস্ক এলাজিগ এর কাছে মিলিত হয়েছে ফুরাতের ঊর্ধ্ব অংশ গঠন করা হয়েছে।
এরপর নদীটি আলাব শহরে ১২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সিরিয়াতে প্রবেশ করেছে।
পূর্ব সিরিয়াতে এর সাথে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক থেকে আগত নদীর নাম একটি প্রধান উপনদী মিলিত হয়েছে।
আবার ফুরাত নদীর গতিপথ মূলত দজলা নদীর সমান্তরাল হয়ে থাকে।
নদী দুইটি ইরাকের প্রবেশের পর একে অপরের থেকে সর্বোচ্চ ১০০ মাইল দূরত্ব বজায় রেখে পাশাপাশি অগ্রসর হয়েছে।
উত্তর এর আগে ফুরাত নদী আলজাজিরা নামে অঞ্চলের পশ্চিম সীমান্ত গঠন করেছে। অপরদিকে তাইগ্রিস নদী এর পূর্বে সীমান্ত গঠন করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব ইরাকে এ দুটি নদীর মধ্যবর্তী অববাহিকা এলাকাটিতে প্রাচীন ব্যাবিলনীয় সভ্যতার অবস্থিত ছিল।
এবং টাইগ্রিস নদী থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এসে ফুরাত নদীতে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে গেছে।
নদীর শাখা ২ টি ১৮০ কিলোমিটার পরে আবার একত্রিত হয়েছে।
এরপর ফুরাত ও দজলা কুরনাহ শহরে কাছে মিলিত হয়ে শাত আল আরব নদী গঠিত করেছে এবং পারস্য উপসাগরে পতিত হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ
জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয় কি
ত্রিভুজ কাকে বলে? ত্রিভুজ কত প্রকার এবং কি কি
রকেটের জ্বালানি হিসেবে কি ব্যবহার করা হয়?
ফুরাত নদী সম্পর্কে তথ্য
ফোরাত নদী প্রতি বছর ২৮০০ কোটি ঘনমিটার পানি গ্রহণ করে। এপ্রিল ও মে মাসে পানি ধারণ পরিমাণ সর্বোচ্চ হয়ে থাকে।
ফোরাত নদীর উপর অবস্থিত প্রধান শহর গুলি হল সিরিয়ার রাকাহ ও দাইর আজ জর, এবং ইরাকের কারবালা, হিল্লাহ এবং নাজাফ।
পুরানো দুইটি অগভীর বলে ছোট নৌকা ছাড়া অন্য কিছু এখানে চলাচল করা সম্ভব হয় না। এটি পানি সরবরাহের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী।
নদীটি তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাক এর মধ্যে তাই রাজনৈতিক উত্তেজনা আরেকটি বড় উৎস ও বটে।
এই নদীটি তিনটি দেশরই সেচকাজ ও পানিবিদ্যুতের জন্য নদীটির পানির উপর নির্ভরশীল।
এবং তুরস্ক গ্রামীণ আনাতোলিয়ার উন্নয়নের জন্য নদীটির পানির একটি বড় অংশ সেখানে রেখে দেবার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এই দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়া প্রকল্পে মোট ২২টি বাঁধ এবং আনাতোলীয় পর্বতমালা হতে ফুরাতের খাড়া পতনকে কাজে লাগাবার জন্য মোট ১৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়।
আতাতুর্ক বাঁধ এই প্রকল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু এবং এটি বিশ্বের সর্ব বৃহত্তম বাঁধগুলির মধ্যে একটি।
১৯৯০ সালে এটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল।
বাঁধটির পেছনের দিকের জলাধারের পৃষ্ঠদেশের ক্ষেত্রফল হয় ৮১৬ বর্গকিলোমিটার।
ফুরাত নদীকে এক মাস ধরে বাধা দিয়ে এই জলাধারটি বারে বারে ভরে তোলা হয়েছিল।
কিন্তু নিম্ন অববাহিকাতে ফুরাতের জলধারার এই হ্রাস সিরিয়ার জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাড়ায়।
সিরিয়া নিজে সেচ ও পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশে ফুরাত নদীর উপর আল সাওরা বাঁধ নির্মাণ করেছিল।
ফুরাত নদী সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য
১৯৭৩ সালে উত্তর মধ্য সিরিয়াতে বাঁধটি নির্মাণ শেষ হয়েছিল এবং এর পেছনের আসাদ জলাধার নামের জলাধারের ক্ষেত্রফল ছিল প্রায় ৬৪০ বর্গকিলোমিটার।
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়া প্রকল্পটির কারণে বর্তমান সময়ে এটি যথেষ্ট পরিমাণে সেচের পানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না।
একইভাবে আরও নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত ইরাক সিরিয়ার বাঁধের নিন্দা করা হয়েছিল।
১৯৭৫ সালে দুই দেশের মধ্যে অল্পের জন্য যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছিল।
অত্যন্ত শুষ্ক ইরাকের কৃষিকাজ ফোরাতও দজলা নদীব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল রয়েছে।
পানির প্রবাহের তারতম্য ইরাকে খরার সৃষ্টি করে।
১৯৮৬ সালে পশ্চিম মধ্য ইরাকের আদিসা-তে পানি ধরে রাখতে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়, কিন্তু এটি খুব একটা কার্যকর ছিল না।
১৯৫০-এর দশক তাইগ্রিস নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রকল্পের ফলে থারথার নিম্নভূমির মধ্য দিয়ে তাইগ্রিসের কিছু পানি ইউফ্রেতিস অববাহিকাতে আনা সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু এটিও সেখানে পানি সরবরাহ সমস্যার তেমন সমাধান করতে পারেনি।
সিরিয়া ও তুরস্ক থেকে বয়ে আনা রাসায়নিক বর্জ্যবিশিষ্ট পানিও ইরাকের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
ঈদের শুভেচ্ছা পোস্টার ডিজাইন সফটওয়্যার
ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত FAQS
এই ফুরাত নদীটি দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার একটি নদী। এটি তুরস্কতে উৎপত্তি লাভ করে সিরিয়া ও ইরাক এর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দজলা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এবং শাত-আল-আরব নামে পারস্য উপসাগরের পতিত হয়েছে এই বিশাল নদীটি।
ফুরাত নদী প্রতি বছর ২৮০০ কোটি ঘনমিটার পানি গ্রহণ করে।
উপসংহার
ফুরাত নদী (আরবি ভাষায়: نهر الفرات নাহ্র্ উল্-ফুরাত্; তুর্কি ভাষায়: Fırat; সিরীয় ভাষায়: ܦܪܬ; হিব্রু ভাষায়: פרת)।
আজকে পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে আমরা ফুরাত নদী কোথায় অবস্থিত এ সম্পর্কে সকল তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আপনাদের কাছে আমাদের এই পোস্টটি ভালো লেগেছে।
আপনারা যদি এ সম্পর্কে কোন তথ্য পেতে চান অথবা আপনি যদি কোন প্রশ্ন বা মতামত করতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
এবং এ ধরণের আরো নতুন নতুন বিষয় জানতে এবং নতুন কিছু শিখতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
সকল আপডেট পেতে অবশ্যই চোখ রাখতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।
good