সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কে? এ বিষয়ে কি আপনারা জানেন। আপনারা যদি এ বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। এবং বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জানতে আজকের এই আর্টিকেলে আমাদের সাথে থাকুন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সঙ্ঘবদ্ধ এবং সুশাসন তৈরীর ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভূমিকা অপরিসীম।
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি শুরু হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এসে এই দলটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।
যখন ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়েছিল তখন এই দলটির নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা।
১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এই দলটি নামকরণ করা হয় আওয়ামী লীগ।
Content Summary [বন্ধ করুণ]
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা
আবুল হাশেম এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৩ শে জুন ১৯৪৯ সালে ঢাকা আর টিকাটুলির কে এম দাস লেন রোডের রোজ গার্ডেন প্যালেস পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
এবং এর প্রতিষ্ঠাতা অথবা সভাপতি ছিলেন টাঙ্গাইলের মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং এর সাধারন সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক।
এর ঠিক পরবর্তী সময়ে, ১৯৫৫ সালে মাওলানা ভাসানীর উদ্যোগে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনের নাম এর মধ্যে থাকা মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয় এবং এর নাম রাখা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের জন্মসূত্রে সঙ্গে ঢাকা ১৫০ নম্বর মোগলটুলি পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবিরের উদ্যোগের সম্পর্ক অনস্বীকার্য।
শওকত আলী ২৩ শে জুন এ সম্মেলনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৫০ নং অবস্থা শওকত আলীর বাসভবন এবং কর্মী শিবির অফিস ঘিরে বেশ কয়েক মাসের মতো প্রস্তুতিমূলক তৎপরতার পর ২৩ শে জুন এর কর্মী সম্মেলনে দলের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল শওকত আলী নিজ উদ্যোগে।
শওকত আলীর অনুরোধে কলকাতা থেকে হোসেন শহীদ সরোয়ারদি একটি মামলা পরিচালনার জন্য ঢাকায় যখন এসেছিলেন তখন তিনি শওকত আলী উদ্দেশ্যে বলেন মুসলিম লীগ ছেড়ে ভিন্ন একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার জন্য।
শওকত আলীও এই পরামর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবিরের নেতৃবৃন্দকে নতুন সংগঠন গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করেন।
আরও পড়ুনঃ
মেট্রোরেল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
ভাষা শহীদদের সম্পর্কে ১০টি বাক্য
আওয়ামী লীগের ইতিহাস
শামসুল হক ছিলেন এক সময়কার কর্মী শিবিরের প্রধান নেতা।
কামরুদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, তাজউদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান খান, আব্দুল আউয়াল, মহাম্মদ আলমাস, শামসুজ্জোহা প্রমুখ প্রথম দিকে এবং পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মী শিবির কেন্দ্রিক রাজনৈতিক তৎপরতা বিশেষভাবে যুক্ত হয়েছিলেন।
মূলত আবুল হাসান সরওয়ার্দী গ্রুপের নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগের অন্যায় কাজগুলো বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার লক্ষ্যে এখানে একটি কর্মী শিবির গড়ে তুলেছিলেন।
১৯৪৯ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী আসামের ধুবড়ি জেলখানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ঢাকায় এলে তার সঙ্গে শওকত আলী আলোচনায় বসেন।
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে শওকত আলী পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির কেন্দ্রিক রাজনৈতিক তৎপরতার সকল বিষয়গুলো জানান।
এসময় মাওলানা ভাসানী আলী আমজাদ খানের বাসায় তারা অবস্থান করছিলেন।
শওকত আলীর সঙ্গে তার প্রাথমিক আলোচনা সেখানেই হয়েছিল।
এই আলোচনার সূত্র ধরে পরবর্তী সময়ে একটি নতুন দল গঠনের জন্য সাংগঠনিক কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন শওকত আলী।
যার কারণে ১৫০ নম্বর মোগলটুলীতে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
মাওলানা ভাসানী ও সে বৈঠকের মধ্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এসময় খন্দকার আবদুল হামিদের সঙ্গে পরামর্শ করে শওকত আলীর উদ্যোগে এবং নিজস্ব প্রচেষ্টায় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, ইয়ার মোহাম্মদ খান কে সম্পাদক।
এবং খন্দকার মোশতাক আহমেদকে দপ্তর সম্পাদক করে অন্যদের সহকারে একটি সাংগঠনিক কমিটির গঠন করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য
পদার্থ বিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ কিভাবে ঘটেছে?
স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র | আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কে
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে ১৯৫৪ সালে।
এর পরবর্তী সময়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সর্বমোট ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসনে জয় যুক্ত হয়।
কিন্তু পাকিস্তানিদের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব এবং শোষণের ফলস্বরূপ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পরেই আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর দীর্ঘ সংগ্রাম করে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করা হয়।
২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ২৩০ টি আসন লাভ করে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক
ক্রমিক | সভাপতি | মেয়াদকাল | সাধারণ সম্পাদক |
০১ | মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী | ২৩ জুন, ১৯৪৯ – ১৮ মার্চ, ১৯৫৭ | শামসুল হক,শেখ মুজিবুর রহমান |
০২ | মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ | ১৯৫৭ – ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ | শেখ মুজিবুর রহমান |
০৩ | শেখ মুজিবুর রহমান | ০১ মার্চ ১৯৬৬ – ১৯৭৪ | তাজউদ্দীন আহমেদ,জিল্লুর রহমান |
০৪ | আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান | ১৯৭৪ – ১৯৭৫ | জিল্লুর রহমান |
০৫ | মহিউদ্দীন আহমেদ (ভারপ্রাপ্ত) | – | সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন (আহ্বায়ক) |
০৬ | আবদুল মালেক উকিল | ১৯৭৮ – ১৯৮১ | আব্দুর রাজ্জাক |
০৭ | শেখ হাসিনা (বর্তমান) | ১৭ মে ১৯৮১ – বর্তমান | আব্দুর রাজ্জাকসৈয়দা সাজেদা চৌধুরীজিল্লুর রহমানআব্দুল জলিলসৈয়দ আশরাফুল ইসলামওবায়দুল কাদের (বর্তমান) |
আরও পড়ুনঃ
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কে FAQS
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কে সে সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে খুবই কার্যকরী কাজগুলো তারা পরিচালনা করছে।
প্রিয় পাঠকগণ আপনাদের যদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত আরো কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
আপনারা যদি ঘরে বসেই অনলাইন থেকে কাজ করতে চান।
তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আমাদের ইন্টারনেট থেকে টাকা আয়ের সংক্রান্ত আর্টিকেলগুলো পড়ুন।
আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন এবং সকল প্রয়োজনে ফলো করুন ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।