একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে ‘আকিদা’ ঠিক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। ইসলামে খুবই গুরুত্ব সহকারে আকিদা ও বিষয়বস্তুর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার উম্মতদের আকিদা কেমন থাকবে সে সম্পর্কেও আলোচনা করে গিয়েছেন। সেই সাথে যুগে যুগে ইসলামের মহান ব্যক্তিরা আকাইদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আকিদা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
চলুন জেনে নেয়া যাক কেন আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব অপরিসীম?
Content Summary
আকাইদ শব্দের অর্থ কি?
আকাইদ শব্দের অর্থ হলো বিশ্বাস মালা। আকাইদের মানে হলো ইসলামের মূল বিষয়গুলোর ওপর মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা।
ইসলামের মূল বিষয় বলতে তাওহীদ, রেসালাত, আখিরাত, আসমানী কিতাব এবং ফেরেশতা ইত্যাদির উপর বিশ্বাস স্থাপন করার নাম আকাইদ।
ইসলামের মূল বিষয় গুলোর উপরে বিশ্বাস স্থাপনকারীর নাম মুসলিম। একজন পরিপক্ক ঈমানদার মুসলমান হিসেবে আকাইদের গুরুত্ব অপরিসীম।
নিন্মে আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন আকারে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব কি?

‘আকিদা’ একটি আরবি শব্দ। ‘আকিদা’ আরবি শব্দের আভিধানিক অর্থ সুদৃঢ় বিশ্বাস, আস্থা। এই শব্দটিকে পরিভাষায় বিশ্লেষণ করে বিশিষ্ট দ্বন্দ্বের মতামত আকিদা হচ্ছে, এমন সব দ্বিনি বিষয়াদির সমষ্টি, যার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য। এমন সুদৃঢ় বিশ্বাস, যাতে সন্দেহের লেশমাত্র নেই।
ইসলামের আকিদা গুলির উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখাই হচ্ছে আকাইদ। আর এই আকাইদের উপর বিশ্বাস রাখার ব্যাপারে ইসলামে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে। যার আকাইদের উপর বিশ্বাস যত বেশি তার ঈমান তত বেশি মজবুত।
এখানে দ্বিনি বিষয়াদির সমষ্টি দ্বারা উদ্দেশ্য কোরআন-সুন্নাহ তথা ওহি দ্বারা সাব্যস্ত প্রতিটি বিষয় তথা আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাব, রাসুল, আখিরাত তথা মৃত্যু-পরবর্তী জীবন, তাকদির, পুনরুত্থান ইত্যাদি।
বিশুদ্ধ আকিদা ঈমানের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। ইসলামের সুবিশাল অট্টালিকা আকিদা নামক সুদৃঢ় স্তম্ভের ওপর স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। ইসলামে আকিদার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই।
নেই কোনো অস্পষ্টতা ও দোদুল্যমানতার সুযোগ। আমৃত্যু বিশুদ্ধ আকিদা সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করে ইসলামী শরিয়াহর পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনের চেষ্টা করে যাওয়ার মধ্যেই মানবজীবনের চূড়ান্ত সফলতা নিহিত।
আকিদা বিশুদ্ধ করা বান্দার প্রতি আল্লাহর সর্ব প্রথম নির্দেশনা। বিশুদ্ধ আকিদা সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ।জীবনজুড়ে যা থেকে এক মুহূর্ত বিচ্যুত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আকাইদের পরিশুদ্ধি বলতে কি বোঝায়?
আকাইদের ও বিশ্বাসের পরিশুদ্ধির মানে হচ্ছে, কোরআন-সুন্নাহে স্পষ্টভাবে উল্লিখিত ইসলামী আকিদা, যা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ও নির্দেশনা মোতাবেক ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। আর তা সংশয়হীনচিত্তে নিশ্চিত সত্য বলে বিশ্বাস করা এবং সব ধরনের কুফরি, শিরকি ও বিদআতি আকিদা থেকে মুক্ত হয়ে বিশুদ্ধ আকিদার ওপর আমৃত্যু অটল অবিচল থাকাই আকিদা বিশ্বাসের পরিশুদ্ধি।
আরও পড়ুনঃ
ডান চোখ লাফালে কি হয় ইসলাম কি বলে?
আকিদা বা আকাইদের পরিশুদ্ধির গুরুত্ব কতটুকু
মহান আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় জীব মানুষ বা বান্দার প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় হক ও সবচেয়ে বড় ফরজ হচ্ছে ঈমান।
পৃথিবীতে ঈমানের চেয়ে মূল্যবান সম্পদ আর কিছু নেই। একজন মুসলমানের কাছে তার জীবনের চেয়েও বেশি প্রিয় তার ঈমান। আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা অর্জন ও দুনিয়া-আখিরাতে চূড়ান্ত সফলতা অর্জনের প্রধান ও মৌলিক উপায় হচ্ছে ঈমানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করা।
সব নবীর ও রাসূলদের দ্বিনি দাওয়াতের দাওয়াতের মৌলিক বিষয়ও ছিল এটি। সব নবী-রাসুলের সর্বপ্রথম ও সর্বাধিক তাগিদ ছিল আকিদা বিশুদ্ধ করার ব্যাপারেই।
পবিত্র কোরআনে নবীদের দাওয়াতের যে চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা থেকে এ বিষয়টি সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। আকিদা পরিশুদ্ধির প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করার মধ্য দিয়েই নবীদের দাওয়াতের সূচনা হতো।
আকিদা পরিশুদ্ধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ আকিদা বিশুদ্ধ না হলে সব আমল বরবাদ হয়ে যায়।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে অর্থাৎ যার ঈমান-আকিদা শুদ্ধ নয়, তার সব কাজ অর্থহীন এবং সে আখিরাতে ব্যর্থ মনোরথ হবে।’
— (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৫)
অন্যত্র ইরশাদ করা হয়েছে, ‘নবী, আপনি বলুন, আমি কি তোমাদের সেসব লোকের সংবাদ দেব, যারা কর্মের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। তারাই সেসব লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিবজীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে তারা খুব ভালো কাজ করছে।’
— (সুরা : কাহফ, আয়াত : ১০৩-১০৪)
বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম ইবনে জারির আত তাবারি (রহ.) তাঁর তাফসির গ্রন্থ ‘জামেউল বায়ান’-এ উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এখানে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইহুদি-খ্রিস্টান এবং কাফির তথা আকিদা বিশুদ্ধ নয়— এমন সব ব্যক্তি।’
ইসলাম আকিদার বিষয়ে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন করেনি। আকিদার বিষয়ে ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে সালফে সালেহিন তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত আমাদের সামনে যেসব আকিদা উপস্থাপন করেছেন সেগুলো সর্বান্তকরণে মেনে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
এখানে অন্যান্য ধর্ম গোষ্ঠীগুলো যে ধরনের আলাপ-আলোচনা করে সেগুলোর প্রেক্ষাপটে বলতে হয় আকিদার বিষয়ে মতামতের স্বাধীনতার মূলনীতি অচল ইসলামে।
আরও পড়ুনঃ
আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব কি?
আকাইদ শব্দের হলো বিশ্বাস মালা। ইসলামি ভাষায় আকাইদ বলতে কি বুঝায় আচরণগত দিক, বিশ্বাসগত দিক।
আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা একজন মুসলিম হিসাবে পরিপক্ষ হতে হলে অবশ্যই ইসলামের আকিদার উপর আপনাকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করতে হবে।
উপসংহার,
আশা করি আপনি আকাইদের বিষয়াবলিতে বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব কতটুকু এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
তাই আসুন আমরা আকিদা পরিশুদ্ধির বিষয়ে যত্নবান হই। শুধু নিজস্ব অধ্যয়নে সীমাবদ্ধ না থেকে আকিদা বিশেষজ্ঞ নির্ভরযোগ্য আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে নিজের আকিদা যাচাই করে নিই।
কেননা দুনিয়া ও আখিরাতে চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করতে আকিদার উপর পূর্ণাঙ্গ বিশ্ব স্থাপন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
লিভারের সমস্যা হলে কি খেতে হয়?
আমাদের ওয়েবসাইটে অনলাইন ভিত্তিক সকল কাজ সংক্রান্ত আর্টিকেলগুলো গাইডলাইন আকারে প্রদান করা হয়েছে।
তাই অবশ্যই অনলাইনে কাজ করে টাকা আয় করতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের ওয়েবসাইটে সকল আপডেট গুলো সবার আগে পেতে ফেসবুক পেইজে ফলো করুন।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।