প্রিয় মুসলমান ভাই ও বোনেরা রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে সেই সম্পর্কে জানতে আপনারা অনেকেই গুগল সার্চ করে থাকেন। আমরা আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলের মাধ্যমে পবিত্র রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে সেই সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব।
একটি মুসলিম জাতি হিসেবে এবং একজন মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে আমাদের অবশ্যই রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে সেই সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পবিত্র কোরআন নাযিল হয় রমজান মাসে।
পবিত্র কুরআন মাজিদ নাযিল করা হয়েছে মানবজাতির হেদায়েত এবং পথ-নির্দেশক হিসেবে। প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির জন্য নির্দেশনা হচ্ছে যারা পবিত্র রমজান মাসে পাবে তারা অবশ্যই যেন রমজানের সকল রোজাগুলো সঠিক নিয়মে পালন করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামের প্রথম যুগ থেকে কি এই দীর্ঘ মাস ব্যাপী রোজা রাখা ফরজ ছিল?
রোজা পালনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জানা যায় যে হিজরতের পর মদিনায় দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান মুমিন মুসলমানদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ হয়েছিল।
তবে মুমিনদের ওপর রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বেই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রোজা ফরজ ছিল।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহে রমজানের রোজাগুলো ধাপে ধাপে পালন করেছেন।
এছাড়াও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবায়ে কেরামগণও রোজাগুলো পালন করতেন।
আজ আমরা রোজা পালনের ধাপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব এবং রমজান মাসের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে সে সম্পর্কে সকল বিষয়গুলো তুলে ধরবো।
Content Summary
রমজান মাসের রোজা পালনের প্রথম ধাপ
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে প্রতি মাসেই তিনটি করে রোজা পালন করতেন।
তার দেখায় সাহাবায়ে কেরামগণও রোজা পালন করতেন।
এতে করে পবিত্র রমজান মাসে রোজাগুলো পালন করার অভ্যাস তৈরি হয়।
অনেকেই বলেছেন, পবিত্র মাহে রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিমাসে যে তিনটি রোজা রাখতেন, তা ছিল আইয়্যামে বিজের রোজা তথা আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা।
আর এই রোজাগুলো আমাদের প্রিয় নবীর ওপর ফরজ রোজা ছিল।
আরও পড়ুনঃ
পবিত্র মাহে রমজানের রোজা পালনের দ্বিতীয় ধাপ
কুরাইশরা জাহেলী যুগে আশুরার রোজা পালন করতো।
এরপর থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় এসে হযরত মুসা (আ.) এর অনুকরণে তার স্মৃতি পালনে আশুরার দিন গুরুত্বের সঙ্গে নিজে যেমন সিয়াম বা রোজা রাখতেন এবং তার সঙ্গীদেরও এ রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। তখন এ রোজা ফরজ ছিল।
মাহে রমজানের তৃতীয় ধাপ
এরপর পবিত্র রমজান বা সিয়াম মাস নিয়ে বিধান নিয়ে কুরআনুল কারিমের আয়াত নাজিল হলো।
তবে শুরুর দিকে পবিত্র রমজান পূর্ণ আকারে ফরজ ছিল না।
যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী রোজা রাখছেন এবং যার ইচ্ছে ছিল না সে মিসকিনদেরকে খাবার দান করতেন।
কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির উপর সন্তুষ্ট হতেন যে পবিত্র রমজান মাসের রোজাগুলো সঠিকভাবে পালন করতেন।
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
‘যারা রোজা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রাখতে চায় না, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে।
যে ব্যক্তি খুশির সঙ্গে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর।
আর যদি তোমরা রোজা রাখো, তাহলে তা তোমাদের জন্য বিশেষ কল্যাণকর; যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৪)
রমজানে রোজা পালনের চতুর্থ ধাপ | রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে
মহান আল্লাহ তায়ালা দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে পবিত্র কুরআনে আয়াত নাযিলের মাধ্যমে পুরা রমজান মাসের রোজা পালনের নির্দেশনা দেন।
এতে করে প্রত্যেক সামর্থ্যবান এবং প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জন্য পুরো রমজান মাসের রোজা রাখা ফরজ হয়ে যায়।
মহান আল্লাহ তায়ালা এই ধাপেই পবিত্র মাহে রমজানকে প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ করেছেন।
যা ছিল আগের সব-নবি রাসুলদের ধারাবাহিক রোজা পালনেরই অংশ। আল্লাহ তাআলা বলেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
রমজান মাসই হল সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন।
যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।
কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)
সুতরাং সামর্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ক (জ্ঞানসম্পন্ন সাবালক) স্থায়ীদের জন্য মিসকিনকে খাদ্যদানের বিধান রহিত হয়ে যায় এবং বৃদ্ধ ও রোগীদের জন্য তা বহাল রাখা হয়।
কিছু কিছু আলেমগণের মতে এ বিধান গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদাত্রী নারীদের জন্যও বহাল করার কথা বলা হয়।
যারা গর্ভকালে বা দুগ্ধদান কারে রোজা রাখলে তাদের সন্তানের বিশেষ ক্ষতি হবে আশঙ্কা থাকে।
আরও পড়ুনঃ
রোজা রাখার নিয়ত, ইফতারের দোয়া
রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে FAQS
পবিত্র রমজানের রোজা ২য় হিজরির শাবান মাসে ফরজ করা হয়েছিল।
মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা রাখতেন।
উপসংহার
এ সকল ধাপগুলোর প্রেক্ষিতে বলা যায় যে মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র রমজান মাসকে প্রতিটি মুসলিম জাতির জন্য ফরজ করে দিয়েছেন।
আপনারা সকলেই পবিত্র মাহে রমজানের রোজাগুলো সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করবেন।
আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে এবং রমজানের রোজা কিভাবে ধাপে ধাপে ফরজ হয়েছে সেই সম্পর্কে।
আপনাদের যদি আজকের এই আর্টিকেল সংক্রান্ত আরো কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
পবিত্র মাহে রমজানের সকল রোজাগুলো মহান আল্লাহতালা আমাদের সঠিকভাবে পালনের তৌফিক দান করুন। আমিন।
আপনারা যদি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান মূলক পোস্ট এবং খেলাধুলা বিষয়ক অন্যান্য পোস্টগুলো পড়তে চান তাহলে অবশ্যই ভিজিট করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট।
এবং এর পাশাপাশি আমাদের ওয়েবসাইটের সকল তথ্যগুলো সবার আগে পেয়ে যেতে জয়েন করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।