শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি?

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি? ও এই সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কেননা বুদ্ধিজীবী একটি জাতির মেরুদন্ড হিসাবে কাজ করে। বাঙালি জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে পাক হানদার বাহিনী এই জঘন্যতম কর্মকাণ্ড চালায় 1971 সালের যুদ্ধের শেষ প্রান্তিকে, তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনেই। 

বাঙালি জাতির জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের একটি শোকহত দিন। প্রতি বছর ১৪ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর মধ্যে বাংলাদেশের সকল প্রথম শ্রেণীর মানুষ অর্থাৎ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে কাজে সাহায্য করে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের বিজয়ের প্রাক্কলে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিশ্চিত পরাজয় জেনে রাজাকার,আল-বদর,আল-শামস বাহীনীর সাহায্যে বাংলাদেশের অসংখ্য কবি,সাহিত্যিক,ডাক্তার,গবেষক,শিক্ষাবিদদের নিজ বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন করে তাদের হত্যা করেছিলো।

বাংলাদেশের বিজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করবার উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পনা করা হয়েছিলো।

হত্যার পর ঢাকা মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন গনকবরে ছিলো শুধু লাশ আর লাশ।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বজনরা তাদের লাশ সনাক্ত করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি? কিভাবে আমারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবো?

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি

কারো শরীরে পাওয়া যায় অনেক আঘাতের চিহ্ন, কারো বা একটা গুলি আবার কারো একের অধিক,কারো চোখ বাধা আবার অনেককে করা হয়েছে দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে জবাই।

এই কারনে পশ্চিম পাকিস্তানীদের বাঙ্গালী জাতি ঘৃণা করে থাকে।

তাই আমাদের উচিত আমাদের নতুন প্রজন্মকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি তা জানানো।

এই ধরনের জিনিসগুলো দেখে বোঝা যায় হত্যার আগে তাদের ওপর প্রচুর নির্যাতন করা হয়েছে।

পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে প্রকাশিত জাতীয়ভাবে বুদ্ধিজীবি দিবসের সংকলন,পএিকায় ছাপা সংবাদ ও আন্তর্জাতিক ভাবে প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’ -এর সাংবাদিক নিকোলাস টামালিনের লিখা থেকে জানতে পারা যা -মোট ১ হাজার ৭০ জন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিলো। 

শহীদ বুদ্ধজীবিদের সংজ্ঞা

১০ ফ্রেব্রুয়ারী ২০২১ শহীদ বুদ্ধজীবিদের সংজ্ঞা চুড়ান্ত করা হয়েছে।

সংজ্ঞা অনুযায়ী, “২৫ শে মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি সময়ে যেসকল বাঙালি বিজ্ঞানী,সাহিত্যিক, দার্শনিক, চিকিৎসক, গবেষক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, সংস্কৃতিসেবী, সাংবাদিক, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, শিক্ষক, স্থপতি, সমাজসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতের সঙ্গে জড়িত ব্যাক্তিরা বুদ্ধিবৃওিক কাজ কর্মের মাধ্যমে এদেশের অভ্যুদয়ে অবদান রেখেছেন।

এর ফলে যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অথবা তাদের সাহায্যকারীদের হাতে হত্যা বা আজীবনের জন্য নিখোঁজ হয়েছেন তারাই শহীদ বুদ্ধিজীবী।”

শহীদ বুদ্ধজীবিদের তদন্ত কমিটি

‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’ (১৯৯৪) নামে একটি গ্রন্থ বাংলা একাডেমি  কতৃক প্রকাশিত হয়েছিলো, সেখান থেকে জানা যায় ২৩২ জন বুদ্ধিজীবী হত্যা হয়েছে।

তালিকা যে অসম্পূর্ণ তা এই গ্রস্থের মধ্যেই বলে দেয়া হয়েছে।

১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১, মতান্তর ২৯ তারিখে বেসরকারি ভাবে একটি বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশন গঠন হয় যার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নি।

এর পরই গঠিত হয় বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি।

এই কমিটির প্রাথমিক তথ্য উঠে আসে, পাকিস্তানের রাও ফরমান আলী বাংলাদেশের প্রায় ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। 

কিন্তু তার পরিকল্পনা সফল হয়নি।

কারণ রাও ফরমান আলীর পরিকল্পনা ছিল সকল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে এনে হত্যা করা।

বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন জহির রায়হান, তিনি বলেন এরা বাংলাদেশের গনতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদের বাছাই করেই তারপর আঘাত হেনেছে।

তারপর ৩০ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান নিখোঁজ হয়েছেন। 

৩১ শে ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।

কিন্তু তার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকারিতা পায়নি।

২৭ শে ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ  করা হয়, বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পূর্ব পরিকল্পনা করা হয়েছিলো এবং এতে সহায়তা করে ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘ ও জামায়াতে ইসলামী।

এ হত্যার সাথে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ক্যাপ্টেন তারেক, ব্রি. জে. আসলাম, তাজ, কর্ণেল তাহের, ভিসি প্রফেসর ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন, ডঃ মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার, আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাইনুদ্দিন এদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

 ২৪ শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সালে  বুদ্ধিজীবীদের  হত্যা করার ঘটনাতে রমনা থানায় প্রথম একটি মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং- ১৫)। 

চৌধুরী মাইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করে সেই মামলাটি দায়ের করা  হয়।

তারা দুজনই ছিলেন আলবদর বাহিনীর সদস্য। মামলাটি দায়ের করেছিলেন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের ঘোষণা

১৯৭১ সালে পুরো বছর ধরেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিলো।

তারা  পরিকল্পিত ভাবে ১৪ই ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিলো।

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ১৪ই ডিসেম্বরকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ঘোষণা করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীগনদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়।

স্মৃতিসৌধটি স্থাপন করেন মোস্তফা হালি কুদ্দুস। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে অন্য আরেকটি  স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ শুরু হয় যেটি ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে উদ্বোধন করেছিলেন  তখনকার  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধটির নকশার কাজ করেন জামী-আল সাফী ও ফরিদউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ ডাকবিভাগ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকিটের সিরিজ প্রকাশিত করেছে।

আরও পড়ুনঃ

যৌথ মূলধনী কোম্পানির অর্থায়নের কার্যাবলী কি

ফিফা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন তালিকা | FIFA World cup winner list

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি FAQS

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি?

মূলত 1971 সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা 14 ই ফেব্রুয়ারি ও যুদ্ধের সময় যেসকল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে তাদের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে 14 ফেব্রুয়ারি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

বুদ্ধিজীবী দিবস কবে?

বুদ্ধিজীবী দিবস প্রতি বছর 14 ই ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করার উপায়?

পাক হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশকে মেধাশূন্য করা। বছরে এই দিনটি এলে বাংলি জাতি শোকে মুহ্যমান হয়ে যায়। সারা দেশে মানুষ মোমবাতি প্রজ্বালন করার মাধ্যমে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল?

বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীরা এবং তাদের সহযোগী রাজাকার ও আল-বদররা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম?

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম হচ্ছে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। তবে অর্ধনমিত রাখতে হলে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম হলো, অর্ধনমিত অবস্থায় উত্তোলনের আগে পতাকাটি পুরোপুরি উত্তোলন করে অর্ধনমিত অবস্থানে আনতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী কেন এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল?

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী বাঙ্গালী জাতিকে মেধাশূন্য করতে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।

বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড কবে সংঘটিত হয়?

বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ১৪ ই ডিসেম্বর সংঘটিত হয়।

উপসংহার

আশা করি আপনি ও আপনারা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি এই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

বাঙালি জাতিকে শ্রদ্ধার সাথে প্রতিবছর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা উচিত কেননা, এই বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত।

অনলাইনে তথ্যবহুল পোস্ট পড়তে রেগুলার ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।

আমরা আপনাদেরকে আপনাদের সুবিধার্থে অনলাইন থেকে ঘরে বসে টাকা আয়, টেলিকম অফার, ইন্টারনেট অফার এবং ব্লগিং টিপস সহ নানান ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলগুলো প্রদান করে থাকি।

জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। 

আরও পড়ুনঃ

ঘরে বসে মোবাইলে আয়

ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ভিজিট করুনঃ এখানে ক্লিক করুন
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।

আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাংলা ভাষায় অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম, টেলিকম অফার এবং মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে।