প্রিয় পাঠকবৃন্দ পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি? আপনাদের কি জানা আছে। আপনারা যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। পৃথিবীতে অনেক নদ নদী এবং সমুদ্র রয়েছে।
তবে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী কোনটি সেই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। প্রকৃতির মাঝে এই পৃথিবীর নানান জিনিস নানান ভাবে বিখ্যাত। বিশালতা বরাবরই বিস্ময়ের।
বিশালতার সঙ্গে প্রকৃতির ঐশ্বর্য যোগ হলে তৈরি হয় শ্রেষ্ঠতা। আজ নদ নদী আছে বলেই পৃথিবীর মানুষ সঠিক এবং সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার সুযোগ পাচ্ছে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি সেই সম্পর্কে আপনাদের কি বিস্তারিত তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করব।
Content Summary
পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীর নাম কি
বর্তমান পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীর নাম হচ্ছে নীল নদ। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী হিসেবে ‘নীলনদ’ আজ শ্রেষ্ঠতার আসনে।
নীলনদের অববাহিকায় গড়ে ওঠা মিসরীয় সভ্যতাও রীতিমতো স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে ইতিহাসের পাতায়। এ নদীর দুটি উপনদী।
একটি হল শ্বেত নীল নদ, উৎপত্তি হয়েছে আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল থেকে।
তবে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে পৃথিবী দীর্ঘতম পাঁচটি নদীর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করব।
পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ পাঁচটি নদীর নাম হচ্ছে-
- নীল নদ
- আমাজন
- ছাং চিয়াং
- মিসিসিপি ও মিসৌরি
- ইয়েনেসাই ও আংগারা
এই হচ্ছে পৃথিবীর দীর্ঘতম পাঁচটি নদীর নাম।
যদিও পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘায়িত নদী হিসেবে নীলনদ নিজের অবস্থানকে সর্বোচ্চ ধরে রেখেছে।
তবে এই বাকি চারটি নদী ও পৃথিবীর অন্যতম নদী গুলোর মধ্যেই রয়েছে।
চলুন আজকের এই আর্টিকেল থেকে এই পাঁচটি নদী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাক।
নীল নদ – পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী
এই নীলনদ নদীটির অবস্থান উত্তর আফ্রিকায়। দীর্ঘতম এই নদীটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬ হাজার ৬৯৩ কিলোমিটার।
পৃথিবীর এই দীর্ঘতম নদীটি প্রায় কয়েকটি দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর ইতিহাসে এই নদীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনস্বীকার্য।
এই নদীকে কেন্দ্র করে অনেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল এবং প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতাটি গড়ে ওঠে। এখনো পর্যন্ত মিশরের কৃষি টিকে আছে এই নীল নদী কে কেন্দ্র করে।
এছাড়াও মিশরের প্রায় ৯৯ ভাগ মানুষ বসবাস করেন নীলনদের অববাহিকায়।
কিন্তু এই নদের উৎপত্তি কিংবা শেষ মিশরে এমনটি কিন্তু নয়। আর অভাবনীয় বিষয় হচ্ছে আরেকটি, এই নদীর উৎপত্তি কিন্তু একটি নয় বরং দুটি দেশে।
একটি অংশ ইথিওপিয়ার তানা হ্রদ থেকে উত্তর দিকে ব্লু নীল নামে প্রবেশ করেছে সুদানে আর অপর অংশ বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা থেকে শুরু করে, তাঞ্জানিয়ার ভিক্টোরিয়া হ্রদ ও উগান্ডা হয়ে সুদানে প্রবেশ করেছে হোয়াইট নীল নামে।
এই দুটি অংশ সুদানের রাজধানী খার্তৃমে একসাথে মিলিত হয়ে প্রবেশ করেছে মিশরে।
তারপর মিশরের মরুভূমি চিরে প্রবাহিত হয়ে চলে গেছে ভূমধ্যসাগরে।
আর চলার পথে ইথিওপিয়া, মিসর, সুদান, দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া, উগান্ডা, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, কঙ্গো এবং তাঞ্জানিয়ার সাথে জড়িয়ে আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম এই নদী।
আমাজন – পৃথিবীর দীর্ঘতম ২য় নদী
যদি আয়তন কিংবা দৈর্ঘ্যের হিসাব করা হয় তাহলে আমাজন হচ্ছে পৃথিবীর দীর্ঘতম দ্বিতীয় নদী।
এই দীর্ঘতম নদীটির উৎস হচ্ছে পেরুর আন্দিজ পর্বতের নেভাদো মিসমি নামক চূড়া থেকে।
পৃথিবীর দীর্ঘতম দ্বিতীয় নদীটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬ হাজার ৪৩৬ কিলোমিটার।
চলার পথে এই নদীটি তিনটি দেশের বুক চিরে মিশে গেছে আটলান্টিকের বুকে।
অর্থাৎ তিনটি দেশের মধ্য দিয়ে দিয়েছে এই নদীটি এবং শেষ পর্যন্ত আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে মিশেছে।
দৈর্ঘ্যের দিক থেকে এই নদীটি দ্বিতীয় হলেও এই নদীর যে পরিমাণ পানি ধারণ করে তা পৃথিবীর অন্য কোন নদীর ধারণ করার সক্ষমতা নেই।
আমাজন নদী সেকেন্ডে প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার ঘনমিটার পানি বহন করে সাগরে নিয়ে যায়।
পৃথিবীর সব নদীগুলোর সমুদ্রে বহন করে নিয়ে যাওয়া পানির প্রায় বিশ ভাগই সাগরে পতিত হয় এই নদীর মাধ্যমে।
ব্রাজিল, কলম্বিয়া ও পেরুর বুক চিরে বয়ে চলা এই নদীটিকে কেন্দ্র করে প্রাণ-বৈচিত্রে ভরপুর দক্ষিন আমেরিকার সুবিশাল অঞ্চল।
আরও পড়ুনঃ
উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম কি?
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো দেশ কোনটি?
ছাং চিয়াং – পৃথিবীর দীর্ঘতম ৩য় নদী
ছাং চিয়াং হয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম তৃতীয় নদী।
তবে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী হচ্ছে ছাং চিয়াং। এই নদীর আরেকটি নাম হচ্ছে ইয়াংসি।
এই নদীটির উৎপত্তিস্থল হচ্ছে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি অঞ্চলের টাংগুলা পর্বতশ্রেণী থেকে।
এবং সর্বশেষে এই নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে পূর্ব চীন সাগরের মধ্যে। ছাং চিয়াংয়ের দৈর্ঘ ৬ হাজার ৩৭৮ কিলোমিটার।
চীনের অর্থনীতি, ইতিহাস কিংবা সংস্কৃতি সবকিছুতেই এই নদীর রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, চীনের প্রায় তিন ভাগের একভাগ মানুষ বসবাস করে এই নদীর অববাহিকার মধ্যে।
চীনের পাঁচ ভাগের একভাগ অঞ্চলের পানির প্রধান উৎস ছাং চিয়াং।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে এই নদীর উপর।
মিসিসিপি ও মিসৌরি – পৃথিবীর দীর্ঘতম চতুর্থ নদী
মিসিসিপি ও মিসৌরি অবস্থান হচ্ছে আমেরিকায়। যদিও মিসিসিপি হচ্ছে আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম একটি নদী।
আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী মিসৌরি মিসিসিপিতে এসে মিশে যৌথ আয়তনে মিসিসিপি ও মিসৌরি দখল করে নিয়েছে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম নদীর অবস্থান।
এই দুইটি নদীর মিলিতভাবে দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৫ হাজার ৯৭০ কিলোমিটার।
মিসিসিপি নদীর প্রাথমিক উৎপত্তিস্থল ইটাস্কা লেক মনে করা হলেও মূল উৎস নিয়ে বিতর্ক আছে।
মিসিসিপি নদী আমেরিকার সর্ববৃহৎ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও উৎপাদন ব্যবস্থা মিসিসিপি নদী একটি বড় ভূমিকা রেখে চলেছে।
ইয়েনেসাই ও আংগারা – পৃথিবীর দীর্ঘতম পঞ্চম নদী
পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম নদী ইয়েনেসাই ও আংগারা।
এদের দৈর্ঘ ৫ হাজার ৫৩৯ কিলোমিটার। ইয়েনেসাই নদীর উৎপত্তি মঙ্গোলিয়ায়।
মঙ্গোলিয়া থেকে উৎপত্তি লাভ করে এটি প্রবেশ করেছে রাশিয়ায়।
৯৯২ কিলোমিটার লম্বা সিলেনজ নদী বিলীন হয়েছে বৈকাল হ্রদে। সেখান থেকে উৎপত্তি ঘটেছে আংগারা নদীর।
এবং আংগারা নদী মিলিত হয়েছে ইয়েনেসাই নদীর সাথে। তারপর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে মিশে গেছে আর্কটিক মহাসাগরে।
উত্তর মহাসাগরে পতিত হওয়া নদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ইয়েনেসাই। তবে ভারী শিল্পের জন্য নদীটি ব্যাপকভাবে দূষণের শিকার।
আরও পড়ুনঃ
পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি FAQS
বর্তমানে পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী হচ্ছে নীল নদ।
পৃথিবীর দীর্ঘতম ৫ টি নদী হচ্ছে- নীল নদ, আমাজন, ছাং চিয়াং, মিসিসিপি ও মিসৌরি, ইয়েনেসাই ও আংগারা।
উপসংহার
সুপ্রিয় পাঠকগণ পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি সে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
আশা করছি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।
এছাড়াও আপনাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলে পৃথিবীতে বর্তমানে দীর্ঘতম পাঁচটি নদীর নাম জানিয়েছি এবং সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও জানিয়েছে।
আপনাদের যদি আজকের এই আইডি কার্ড সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আপনারা যারা অনলাইন থেকে ঘরে বসে আয় করতে ইচ্ছুক এবং নানান ধরনের আর্টিকেলগুলো পড়তে ইচ্ছুক তাদের আমাদের ওয়েবসাইটে ঘুরে আসার অনুরোধ করছি।
আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আপনারা খেলাধুলা বিষয়ক, জ্ঞানমূলক, অনলাইন থেকে আয় সংক্রান্ত বিভিন্ন আর্টিকেল গুলো পেয়ে যাবেন।
আমাদের ওয়েব সাইটের সাথেই থাকুন এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ
যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।