শবে বরাতের ফজিলত | শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে আপনারা অনেকেই গুগল সার্চ করে থাকেন। আজ আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে আলোচনা করব শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে।

মহান আল্লাহ তায়ালার একটি অন্যতম বিশেষ উপহারস্বরূপ মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাত হচ্ছে শবে বরাত। এ রাতে মহান আল্লাহ তা’আলা তার ইবাদত বন্দেগী করা ঈমানদার ব্যক্তিদের ক্ষমা করে থাকেন।

একজন মমিন জিন্দাবাদ ঈমানদার জীবনে যত পাপ করেছে সেই সকল গুনাহগুলো মাফ করার জন্য মহান আল্লাহতালা এ রাত থেকে বিশেষ রাত তৈরি করেছেন। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে আপনারা অনেকেই আগ্রহী।

তাই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এছাড়াও অন্যান্য জ্ঞানী ব্যক্তিগণ এ সম্পর্কে কি বলেছেন সেটি আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরব।

আশা করছি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন। 

শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জানুন 

শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে

আমরা সকলেই জানি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে বলা হয়ে থাকে শবে বরাত।

এই শবে বরাত কথাটি এসেছে ফরাসি থেকে।

“শব” মানে হচ্ছে রাত এবং “বরাত” মানে হচ্ছে মুক্ত।

এর মানে হচ্ছে শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত।  

শবে বরাতের আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’।

হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা ‘শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী’ বলা হয়েছে।

ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দিসহ নানা ভাষায় যা ‘শবে বরাত’ নামেই অধিক পরিচিত।

পবিত্র কুরআনুল কারিমে এসেছে ,

‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী।

যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-৫)।

মুফাসসিরিনগণ বলেন: এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)।

ডিসকাউন্টে সকল সিমের মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার
ক্রয় করতে DESH OFFER সাইটে ভিজিট করুন।

হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তাফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখান–এর দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত বলে শবে বরাতকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরিফুল কোরআন)।

এছাড়াও হাদিস শরীফে উল্লেখ্য রয়েছে যে,

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

মহান আল্লাহ তায়ালা অর্ধশাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’

(ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজিন: ২০৪৮; ইবনে খুজাইমা, কিতাবুত তাওহিদ, পৃষ্ঠা: ১৩৬, মুসনাদে আহমদ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭৬)।

এছাড়াও আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত।

এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন।

আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন’।

ডিসকাউন্টে সকল সিমের মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার
ক্রয় করতে DESH OFFER সাইটে ভিজিট করুন।

আরও পড়ুনঃ

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত

রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে?

১ম রোজার ফজিলত কি?

শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত,

এবার আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সিজদা করলেন যে আমরা ধারণা হতো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

তখন আমি উঠে তার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিয়েছিলাম, তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়লো, তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন,

“হে আয়শা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে?”

আমি উত্তরে বললাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না।’

নবীজি (সা.) বললেন, ‘তুমি কি জানো এটা কোন রাত?’

আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন।’

তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত।

এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন।

আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।’ (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।

হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে: নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন।

তিনি আরও বলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া–বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুনাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি: ৭৩৯)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)।

নবী করিম (সা.) বলেছেন,

১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাত ইবাদত–বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো।

কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, ‘কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? তিনি বলেন, আমি ক্ষমা করব;

কোনো রিজিক প্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব।’

এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ: ১৩৮৪)।

পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত

এছাড়াও আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিমাসের ৩,১৪ এবং ১৫ তারিখ আইয়ামেবিদের নফল রোজা পালন করেছিলেন।

এছাড়াও এই রোজা পালন করতেন হযরত আদম আলাইহি ওয়া সাল্লাম। 

বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব (রা.) বলেন, এদিনের রোজা আইয়ামেবিদের রোজার অন্তর্ভুক্ত। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা: ১৫১)।

এ সকল রোজাগুলো ছাড়াও মাসের প্রথম তারিখে, মধ্য তারিখে এবং শেষ তারিখের নফল রোজা গুরুত্বপূর্ণ।

পবিত্র শবে বরাতের রোজাও এই রোজার আওতায় পড়ে।

মূলত শাওমি দাউদি পদ্ধতিতে একদিন পর একদিন রোজা পালন করলেও প্রতিটি বিজোড় তারিখ রোজা হয় এবং শবে বরাতের রোজার শামিল হয়ে যাবে। 

সর্বোপরি রাসুল (সা.) রমজান মাসের পর রজব-শাবান মাসে বেশি নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন,

শাবান মাসে কখনো ১০টি, কখনো ১৫টি, কখনো ২০টি নফল রোজা, কখনো আরও বেশি রাখতেন।

এমনকি উম্মুহাতুল মুমিনিনগণ বর্ণনা করেছেন,

রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসে এভাবে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন, মনে হতো, তিনি আর কখনো রোজা ছাড়বেন না। (মুসলিম)।

আরও পড়ুনঃ

রোজা ভাঙার কারণ সমূহ

রোজা রাখার নিয়ত, ইফতারের দোয়া

শবে বরাতের ফজিলত FAQS

শবে বরাতের ফজিলত কী?

মূলত শবে বরাতের ফজিলত হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালা এই রাতে ইমানদারদের ক্ষমা করে থাকেন। এটিই হচ্ছে এই রাতের বিশেষ ফজিলত।

কিভাবে শবে বরাতের নামাজ পড়তে হয়?

মূলত আপনারা ২ রাকাত করে নফল নামাজ যত খুশি তত পড়তে পারবেন।

উপসংহার 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করছি শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে আপনারা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে পেরেছেন।

আপনাদের যদি আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে এবং আপনারা যদি এ ধরনের আরো আর্টিকেলগুলো পড়তে চান তাহলে অবশ্যই ভিজিট করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে।

কেননা আপনাদের সুবিধার্থে আমরা প্রতিটি সময় এ ধরনের আর্টিকেলগুলো আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকি।

তাই অবশ্যই ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট এবং এর পাশাপাশি জয়েন করতে পারেন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে। 

আরও পড়ুনঃ

শবে বরাতের রোজা কয়টি?

২০২৩ সালের প্রথম রোজা কত তারিখে?

শবে মেরাজের কয়টি রোজা রাখতে হয়?

কমদামে মিনিট, ইন্টারনেট ও বান্ডেল অফার কিনতে ভিজিট করুনঃ এখানে ক্লিক করুন
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।

Leave a Comment