হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এ সম্পর্কে জানার জন্য অনেকের মনে আগ্রহ জাগে। সুপ্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এবং হালদা ভ্যালি সম্পর্কিত সকল তথ্য।
আপনারা অনেকেই ঘোরাঘুরি এবং পরিবেশ প্রেমী হয়ে থাকেন। তারা সকলে পর্যটন স্থল সম্পর্কে জানার জন্য খুবই আগ্রহী হয়ে থাকেন।
কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে এ সকল বিষয়ে আপনারা জানতে পারেন না। এরকমই পর্যটন স্থল এর মধ্যে হালদা ভ্যালি সম্পর্কে সকল তথ্য আজকে আমরা জানবো।
Content Summary
হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ৬১ কিলোমিটার দূরে ফটিকছড়ি উপজেলার শেষ প্রান্তে হালদা ভ্যালি বাগানটি অবস্থিত।
এ পাহাড়টি অপরূপ সৌন্দর্য এবং মনোরম পরিবেশে ঘেরা পর্যটক স্থল হিসেবে বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
মূলত এটি একটি চা বাগান ও বলা যেতে পারে।
২০১৮ সালের সেরা চা বাগানের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
২০১৭ সালে এর উৎপাদনের দিক বিবেচনা করে এটিকে চা-বাগান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল।
হালদা ভ্যালির ইতিহাস | হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত
আজ থেকে কয়েক বছর আগে হালদা ভ্যালি এলাকাতে কেউ যাওয়ার সাহস পেত না।
কেননা এটি বর্ণ ঝোপঝাড় এবং গাছ দিয়ে পরিবেষ্টিত ছিল।
তারপর এ বাগানটিকে নিলামের মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা ক্রয় করেছিলেন।
পরে ৮ বছরে তিনি সে বাগানে কোন ধরনের ফসল ফলাতে পারেননি।
কিন্তু বর্তমান সময়ে এ পুরো বাগানটি প্রাণবন্ত এবং সবুজ চায়ের পাতায় মনোরম একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
একটা এ বাগান পুনরুজ্জীবিত করার কৃতিত্ব পেড্রোলো এনকে কোম্পানি হাতে নিয়েছিল।
এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক উদ্যোক্তা নাদের খান।
১৯০৫ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত এর পরিচালনাধীন মালিকানা ৬ টি সরকারি এবং বেসরকারি কোম্পানির হাতে ছিল।
হালদা ভ্যালি এর উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০০৩ সালে বাগানটি মাত্র একজন শ্রমিক নিয়ে চালু করা হয়েছিল।
এ বাগানের উদ্যোক্তা নাদের খান ২০০৩ সালে উপত্যকা লিজ নেন।
তিনি তার বাগানের করুন অবস্থা দেখলেও আশাহত হননি।
মাটি চাষ যোগ্য করবার জন্য তিনি একটি খননকারী পরিকল্পনা করেন এবং এর ব্যবহার করে তার মাটির শিকড় গুলো পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
পরিষ্কার করার পর তিনি প্রথম বছরেই ১২ একর জমিতে ৭২ হাজার চারা রোপণ করেন।
আরও পড়ুনঃ
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ কোথায় অবস্থিত?
বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কি?
হালদা ভ্যালির সফলতা
হালদা ভ্যালি তে সবকিছু ঠিকঠাক করার পর প্রথম বছরে পানিশূন্যতার কারণে প্রায় অর্ধেকটা গাছ মরে যায়।
গাছপালা বাঁচাতে লবণাক্ত পানির বোতল সংযুক্ত করা হয়েছিল তবে এটি একটি সাময়িক প্রক্রিয়া ছিল।
পরবর্তীতে ২০০৭ সালে হালদা বাগানে সেচ ব্যবস্থা পরিদর্শন করার পর বাগানে স্থায়ী সেচ বসানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হালদা ভ্যালির মূল সফলতার চাবিকাঠি হচ্ছে এর সেচ ব্যবস্থা।
একই বাগানে একই সিস্টেম এর অধীনে একটি পাম্প ব্যবহার করে পুরো বাগান একই সময়ে শেষ দেওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।
এ বাগানে সফলতার পেছনে আরেকটি কারণ রয়েছে।
সেটি হল এই বাগানে চা চাষের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না।
তার পরিবর্তে কেঁচো দ্বারা উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে কিছু থেকে বছরে ৪০০ টন সার তৈরি করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রতি মৌসুমে পানি সংকট প্রতিটি চা বাগানের একটি সাধারণ সমস্যা, কিন্তু হালদা ভ্যালির জন্য এটি কোনো সমস্যা নয়।
বাংলাদেশের তাদের দেখাদেখি অনেকগুলো চা বাগান এরকম সেচ ব্যবস্থা করার উদ্যোগ ইতিমধ্যে হাতে নিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
বাংলার দার্জিলিং বলা হয় কোন পাহাড়কে?
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম কি?
হালদা ভ্যালির উৎপাদন
২০১৭ সালে হালদা ভ্যালি এর প্রতি হেক্টর উৎপাদন ৩,৭১৭ কেজি চা উৎপাদন হয়।
যেখানে সারা দেশের পরিমাণ ছিল গড়ে ১,৪৭৭ কেজি প্রতি হেক্টরে।
অর্থাৎ বলতে পারি যে, অন্য সকল চা বাগান থেকে প্রায় তিন গুণ চা উৎপাদন করেছিল হালদা ভ্যালি।
চা বোর্ডের উপপরিচালক মুনির আহমেদ বলেন, বর্তমানে হালদা ভ্যালির মত পরিত্যক্ত বাগানগুলো দেশের উৎপাদন খাতের অবদান রাখতে শুরু করেছে।
এটি সরকারের নীতিমালার একটি ফল। অন্য সকল চা বাগানগুলো এ বাগান কে অনুসরণ করে লাভবান হতে পারে বলেও জানান তিনি।
হালদা ভ্যালির চা রপ্তানি
হালদা ভ্যালি চা বাগানটি বর্তমানে অনেক ধরনের চা উৎপাদন করছে।
যা সবচেয়ে বেশি বিদেশীরা পছন্দ করছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে হালদা ভ্যালি তে উৎপাদনকৃত অনেক ধরনের চা বিদেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে।
তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ গ্রিন টি, হালদা ব্ল্যাক টি ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের চা।
এসকল চা রপ্তানি করে বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক লাভবান হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রধানমন্ত্রী কে?
হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত FAQS
চট্টগ্রাম বন্দর নগরীর থেকে ৬১ কিলোমিটার দূরে ফটিকছড়ি উপজেলার প্রায় শেষ প্রান্তে হালদা ভ্যালি অবস্থিত।
হালদা ভ্যালি বাগানে উৎপাদিত চায়ের পরিমাণ প্রতি হেক্টরে ৩৭১৭ কেজি। যা বাংলাদেশের অন্য সকল চা বাগানের ঘরে প্রায় তিন গুণ।
চট্টগ্রামের চা বাগান হালদা ভ্যালির সফলতার কারণ হল কৃত্রিম সেচ ব্যবস্থা। আমাদের দেশে প্রায় প্রতিবছরই চা বাগানগুলোতে অনাবৃষ্টির কারণে অনেক চারা গাছ মারা যায়। এতে করে চা বাগান ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু হালদা ভ্যালি বাগানে কৃত্রিম উপায়ে সেচ ব্যবস্থা থাকায় সেখানে ক্ষয়ক্ষতি হয় না।
উপসংহার
সুপ্রিয় পাঠক হালদা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত এবং হালদা ভ্যালি সম্পর্কে সকল তথ্য আজে আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আপনাদের আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে।
এবং হালদা ভ্যালি সম্পর্কে সকল তথ্য আপনারা জানতে পেরেছেন।
আপনাদের যদি এই ধরনের আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে এবং আপনারা যদি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের অনেক আর্টিকেল রয়েছে।
যেগুলো পাঠ করার মাধ্যমে আপনারা কিভাবে ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করবেন সে সকল বিষয়গুলো জানতে পারবেন।
সেই সাথে আমাদের ওয়েবসাইট সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজটি।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা কোনটি
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।