প্রিয় পাঠকগণ আপনারা কি চীন তাইওয়ান যুদ্ধের কারণ কি তা জানেন। আপনি যদি এ বিষয়ে জেনে না থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনারা অনেকেই গুগল সার্চের মাধ্যমে চীন এবং তাইওয়ান সম্পর্কে জানতে চান।
বর্তমান সময়ে কোন বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গিয়েছে সে বিষয়টি আপনারা জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আশা করছি এই সকল প্রশ্নের উত্তরগুলো আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা পেয়ে যাবেন।
প্রতিটি দেশের আলাদা আলাদা চাওয়া-পাওয়া রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে যদি কোনো দেশ বিরোধীতা করে তাহলে সেখানে অবশ্যই একটি বিবৃতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
Content Summary
চীন তাইওয়ান যুদ্ধের কারণ কি?
চীন এবং তাইওয়ান এর মধ্যে বিরোধিতার ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
তবে গত কিছুদিন ধরে এর মাত্রা গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল কিনা এবং তাইওয়ানের দ্বন্দ্ব কোথায়?
তাইওয়ান হলো দক্ষিণ চীন সাগরের ছোট্ট একটি দেশ।
তাইওয়ান নিজেকে আলাদা সার্বভৌম রাষ্ট্র মনে করে। এবং তাদের আলাদা গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকার রয়েছে।
তবে চিন্তা বানকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি প্রদেশে হিসেবে বিবেচনা করে। এই বিষয়টি হলো তাদের মধ্যে ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের মূল কারণ।
আরও পড়ুনঃ
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন কারা?
মুঘল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কে?
তাইওয়ান চীন থেকে আলাদা হওয়ার কারণ কি?
ঐতিহাসিকভাবে তাইওয়ানের আদিবাসীরা মূলত চীন থেকে এসেছে।
১৮০০ বছর আগে থেকেই তাইওয়ান চীনেরই অংশ ছিল। জাপান ১৮৯৫ সালে তাইওয়ান দখল করেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত প্রায় ৫০ বছর জাপান এই দেশটি শাসন করেছিল।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হলে তাইওয়ান আবারো চীনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়।
কিন্তু তখন চিনে ক্ষমতা নিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল এবং এর একপর্যায়ে কমিউনিস্ট পার্টির কাছে সেসময়ের সরকার পরাজিত হয়ে যায়।
তখনকার সময়ে জাতীয়তাবাদী নেতা চিয়াং কাইশেক তার ক্ষমতা হারান এবং চীন থেকে তার সরকারের লোকজন নিয়ে তাইওয়ানে পালিয়ে যান।
সেখানে তিনি ১৯৪৯ সালে রিপাবলিক অফ চায়না নামে একটি সরকার গঠন করেন।
আরও পড়ুনঃ
Online A Taka Income Korar Upay
অপরদিকে চীনের মূল ভূখণ্ডে পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না নামে সরকার গঠন করেছিল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।
আসল চীনা সরকার কে?
প্রিয় পাঠক এখন হয়তো আপনাদের কাছে শুনতে খুবই অবাক লাগবে তবে বাস্তব হল তাইওয়ানে চিয়াং কাইশেক যে সরকার গঠন করেছিল সেটিকে তিনি সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার হিসেবে ঘোষণা দেন।
তারা মনে করতেন কোন একদিন কমিউনিস্ট পার্টির হাত থেকে তারা চীনের নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছে নিয়ে আসবে।
এবং জাতিসংঘ তাইওয়ানকে চীনা সরকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
তবে ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ কমিউনিস্ট পার্টির সরকার কে চীনের মূল সরকার হিসেবে মেনে নেয়। এবং তাইওয়ানের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে দেয়।
কিন্তু তাদের দ্বন্দ্ব ঠিক আগের মতোই থেকে যায়।
আরও পড়ুনঃ
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো ২০২৩
চীন এবং তাইওয়ানের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ
চীন তাইওয়ান এর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় গেল শতকের আশির দশকের এক দেশ দুই পদ্ধতি নামে একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে।
যেখানে তাইওয়ান মূল চীনের সংযুক্ত হবে কিন্তু তাদের নিজেদের শাসন ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু সে সময়ে তাইওয়ান এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে দেয়।
তারা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল দুই দেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক যোগাযোগব্যবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্য নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পায়।
১৯৯১ সালে তাইওয়ান চীনের সঙ্গে অঘোষিত যুদ্ধের সমাপ্তি টানেন। কিন্তু একযুগ পর এই পরিস্থিতি আবারো তিক্ত হয়ে ওঠে।
২০০৪ সালে যখন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট স্বাধীন তাইওয়ান প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন তখনই বিরোধিতা আবার শুরু হয়।
সে সময় চীনেও খুবই তাড়াতাড়ি ২০০৫ সালে একটি আইন পাস করে।
যেখানে উল্লেখ করা হয় তাইওয়ান আলাদা হওয়ার চেষ্টা করলে তা ঠেকাতে প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার কে?
জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
সাম্প্রতিক উত্তেজনা কি নিয়ে?
গেল এক বছরে চীন এবং তাইওয়ান এর মধ্যকার দ্বন্দ্বের উত্তেজনা নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন মনে করছে তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
এবং চীন সেটা থামাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সেই কারণেই তাইওয়ান কে সতর্ক করে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা অঞ্চলে জঙ্গিবিমান উড়িয়েছে।
এরইমধ্যে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে।
যদি এমন সফল হয় তাহলে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দেয় চীন।
অন্যদিকে আমেরিকা আগেই জানিয়ে দেয় তাইওয়ান আক্রান্ত হলে সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে তার জবাব দেবে।
শেষ পর্যন্ত এই সফরকে কেন্দ্র করে বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব হলো।
আরও পড়ুনঃ
এই সংঘাত কি যুদ্ধে রূপ নিতে পারে
প্রিয় পাঠক দেখুন তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা এবং চীন দুই পক্ষ থেকে নানান উত্তেজনাকর বক্তব্য এবং পদক্ষেপ দেখা গেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তাইওয়ান কে নিয়ে চীনের যে রেডলাইন অর্থাৎ হামলা করে দ্বীপটি দখল করার যে প্রক্রিয়া সেটি হবে তখনই যখন তাইওয়ান নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে।
দ্বিতীয়ত হামলা করে তাইওয়ান দখল করা চীনের জন্য খুব একটা সহজ হবে না।
কারণ সেখানে সৈন্য পাঠাতে হলে সমুদ্রপথে যেতে হবে এবং তাইওয়ানকে দেয়া মার্কিন শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং যুদ্ধ ব্যবস্থা এড়িয়ে চীনের জন্য যেটা হবে বেশ কঠিন।
এবং চীনকে এই কারণে বেশ ক্ষয়ক্ষতি পোহাতে হবে। তৃতীয়ত চীন যেভাবে অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সেরা পরিশক্তি হওয়ার দৌড়ে আছে সেখানে দেশটি তাইওয়ানে হামলা করে আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া এবং অর্থনীতি পঙ্গু করার ঝুঁকি নেবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
তবে এগুলো শুধুমাত্র এই ধারণা হয়তো বা পরিণতি অন্য কিছু হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের পতাকা প্রথম কোথায় উত্তোলন হয়?
চীন তাইওয়ান যুদ্ধের কারণ কি FAQS
তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে যুদ্ধের মূল কারন হচ্ছে দেশ ভাগ করা নিয়ে। মূলত চীন চাইছে তাইওয়ান তাদের দেশের অংশ। কিন্তু তাইওয়ান চায় আলাদাভাবে একটি সার্বভৌম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে।
চীন এবং তাইওয়ান এর মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণ হচ্ছে আমেরিকান কংগ্রেস প্রতিনিধির স্পিকার তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে।
জাপান তাইওয়ান শাসন করেছিল প্রায় ৫০ বছর।
সকল ধরনের সাহায্যের জন্য আমেরিকা তাইওয়ানের পাশে আছে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলটি চীন তাইওয়ান যুদ্ধের কারণ কি এবিষয়টি নিয়ে গঠন করা হয়েছে।
আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পাঠ করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
মূলত চীন চাইছে ব্যবস্থা এবং তাদের সাথেই যৌথ দেশ হিসেবে থাকুক।
আরও পড়ুনঃ
টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২ সময় সূচি
কিন্তু তাইওয়ান নিজেদেরকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করার নানান জল্পনা কল্পনা করছে।
যার কারনে দুই দেশের মধ্যে নানান দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে এবং যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আছে। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভাল লেগেছে।
এ বিষয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে জানাতে পারেন।
আমরা যেকোন সময় আপনাদের কমেন্টের উত্তর দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। নানান ধরনের শিক্ষামূলক আর্টিকেল এবং অনলাইন থেকে কিভাবে ঘরে বসে টাকা আয় করা যায় সে সকল বিষয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে আর্টিকেল সমূহ রয়েছে।
সে আর্টিকেলগুলো পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
এবং আমাদের ওয়েবসাইট সম্পর্কিত সকল আপডেট পাওয়ার জন্য চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
ধন্যবাদ।
ডিজিটাল টাচ ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন ।
ডিজিটাল টাচ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনঃ এই লিংকে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুনঃ www.digitaltuch.com সাইট ।