বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে? বিকাশ বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সমূহের একটি।
অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি বিকাশ ব্যবসা পরিচালনা করা যায় বলে অনেকেই বিকাশ এজেন্ট হতে আগ্রহী এবং জানতে চান বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে।
মূলত বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ তাদের ব্যবসায়িক ফরিদী বৃদ্ধির লক্ষ্যে এজেন্ট দিয়ে থাকে।
বিকাশ এজেন্ট মানে হচ্ছে বিকাশের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিকাশ ব্যবসা করা।
যেখানে বিকাশ এবং বিকাশ এজেন্ট লাভবান হবেন কর্তৃপক্ষ তাদের একটি নির্দিষ্ট হারে কমিশন দিয়ে থাকে।
এক লক্ষ টাকা বিকাশ এজেন্ট থেকে ক্যাশ ইন অথবা ক্যাশ আউট করলে একজন বিকাশ এজেন্ট 410 টাকা পাবেন।
এছাড়া বিকাশ তাদের এজেন্টের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।
বিকাশ ক্যাম্পেইনের অধীনে বিকাশ এজেন্ট কিছু বাড়তি কমিশন পেয়ে থাকেন।
আপনি কেন বিকাশ এজেন্ট হবেন? বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন

আমি নিজে একজন বিকাশ এজেন্ট।
বাংলাদেশে এমন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে যারা এখনো বিকাশ এজেন্ট ব্যবহার করবেন কি করবেন না এই বিষয়ে চিন্তিত।
আজকের এই পোস্ট টি পড়ার পর আপনার কখনোই বিকাশ এজেন্ট নেয়া নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হবে না।
কেননা এখানে আমরা আপনাকে বলতে যাচ্ছি বিকাশ এজেন্ট নিতে কত টাকা লাগে এবং কোন কোন ধরনের ব্যবসায়ীরা সহজেই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
বিকাশ এজেন্ট পরিচালনা করতে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
সেইসাথে আপনি যদি লক্ষ্য করেন তবে দেখতে পাবেন যে আপনার আশেপাশের বিকাশের চাহিদা কিরকম চাহিদার উপর ভিত্তি করে আপনাকে বিকাশ ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে হবে।
কেননা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনার জন্য আপনার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকা প্রয়োজন।
আপনার টাকাটা দুইভাগে ভাগ হবে একাংশ আপনার মোবাইলে এক অংশ আপনার কাছে থাকতে হবে।
এর কারণ হচ্ছে বিকাশে ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট উভয় ধরনের কাস্টমার পাওয়া যায়।
আপনার এলাকায় যদি বিকাশ থেকে টাকা ক্যাশ আউটের পরিমাণ বেশি হয় তবে আপনার কাছে নগদ টাকা বেশি থাকতে হবে।
আবার আপনার কাছে যদি ক্যাশ ইন করার মতো কাস্টমারের সংখ্যা বেশি হয় তবে আপনার মোবাইলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স নিয়ে রাখতে হবে।
বিষয়টি আপনি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করার পূর্বে জেনে নিতে পারেন বিকাশ সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাছ থেকে।
তবে আপনি ব্যবসা শুরুর পরপরই এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন। যা আমি আমার এজেন্ট চালু করার পর পেয়েছি।
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা লাগে?
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা চালু করার জন্য টাকার পরিমাণ নির্ভর করে আপনার এলাকায় বিকাশ সেলস এর উপর।
তবে অনেকদিন থেকে বিকাশ এজেন্ট পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি প্রাথমিকপর্যায়ে বিকাশ এজেন্ট পরিচালনার জন্য আপনার কাছে ন্যূনতম এক লক্ষ টাকা চালান থাকা প্রয়োজন।
আপনি যদি 70 হাজার টাকা আপনার বিকাশ এজেন্ট সিমে রাখেন এবং 30 হাজার টাকা আপনার কাছে রাখেন তবে আপনি মোটামুটি ভালোভাবেই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
তবে এলাকাভেদে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করেন এমন অনেক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা লক্ষ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করেও বিকাশ ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে
প্রিয় পাঠক বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে বিষয়টি অনেকেরই চিন্তার বিষয়।
তবে আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে বর্তমানে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার কাছে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আপনার ভোটার আইডি কার্ড থাকলে সহজেই আপনি বিকাশ এজেন্ট হতে পারেন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কোন প্রকার টাকা প্রদান করতে হয় না বিকাশকে।
শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে বিনামূল্যে বা ফ্রি আপনি একটি বিকাশ এজেন্ট সিম পেতে পারেন এবং হয়ে যেতে পারেন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত?
১০০০ টাকা ক্যাশ ইন কমিশন | ৪.১০ টাকা |
১০০০ টাকা ক্যাশ আউট কমিশন | ৪.১০ টাকা |
আরও পড়ুনঃ
Rocket Cash Out Charge 2022 | রকেট ক্যাশ আউট চার্জ
Airtel Minute Offer 2022 List & Pack Code | এয়ারটেল মিনিট অফার
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
- প্রথমত বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য আপনার একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান থাকা জরুরি।
- আপনি যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নামে বিকাশ এজেন্ট নিতে চাচ্ছেন আপনাকে অবশ্যই ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে।
- মনে রাখবেন আপনি যে ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ এজেন্ট সিম নিতে চাচ্ছেন আপনার প্রদত্ত ট্রেড লাইসেন্স এর পরিচালকের নাম ওই নামে থাকা জরুরী।
- তারপর আপনার কাছে টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- উল্লেখ পূর্বে টিন সার্টিফিকেট প্রধান জরুরি ছিল না, তবে বর্তমানে বিকাশ কর্তৃপক্ষ টিন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছে বিকাশ এজেন্ট দেয়ার পূর্বে।
- তারপর বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি নম্বর নির্বাচন করতে হবে যে নম্বরে পূর্ব থেকে কোন ধরনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা নেই।
- নগদ/রকেট মোবাইল ব্যাংকিং সেবার একাউন্ট খোলা থাকলে কোন সমস্যা হবে না।
- যে নামে বিকাশ এজেন্ট খুলতে যাচ্ছেন ঐ ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ডের এক কপি ফটোকপি।
উক্ত কাগজপত্র গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে যথাযথ বিকাশ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
এজন্য আপনি আপনার এলাকার বিকাশ এসার (Bkash SR) অথবা বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের জমা দিতে পারেন।
আপনার কাগজপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট টি চালু করে দিবে।
বিকাশ এজেন্ট চালু হতে ৩০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এভাবেই একটি বিকাশ এজেন্ট খোলার নিয়ম। আশা করি আপনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
এখন বলা যায় বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে বিষয়টি আপনার কাছে পরিস্কার হয়েছে।
বিকাশ এজেন্ট নম্বর বিষয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর?
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদানের মাধ্যমে ফ্রি আপনি বিকাশ এজেন্ট হতে পারবেন অর্থাৎ বিকাশ এজেন্ট হতে কোন ধরনের চার্জ প্রযোজ্য নয়।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট, বিকাশ এজেন্ট প্রার্থীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সহ বিকাশ অফিসে জমা প্রদানের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব।
মনে রাখবেন বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠানোর জন্য আপনাকে ক্যাশ ইন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। গ্রাহক থেকে যে পরিমাণ টাকা বিকাশ এজেন্ট কে প্রদান করবে, তাকে ঠিক ওই পরিমাণ টাকা ক্যাশ ইন করতে হবে। বিকাশ কর্তৃপক্ষক এজেন্টদের কমিশন দিয়ে থাকে টাকা ক্যাশ ইন করার জন্য।
আরও পড়ুনঃ
জিপি ৩০০ মিনিট কেনার নিয়ম কি | জিপি ৩০০ মিনিট অফার কোড
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট লিমিট কত? একটি একাউন্ট থেকে মাসে কত টাকা লেনদেন করা যায়
উপসংহার,
আশা করি আপনার বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে এই বিষয়ে আপনার আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানান।
এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে।